পুঁজিবাজারে কারসাজি করলেই সম্পদ বাজেয়াপ্ত, ১০ বছর জেল

  • Update Time : ০৩:২২:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩
  • / 143

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

পুঁজিবাজারে কারসাজি করলে সম্পদ বাজেয়াপ্ত হবে। পাশাপাশি জড়িতদের ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রেখে আইন করছে সরকার। প্রস্তাবিত ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন-২০২২’ এর খসড়া অর্থমন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

শেয়ারবাজারে সব সময়ই সক্রিয় থাকে কারসাজি চক্র। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ঠকিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার নিত্যনতুন পদ্ধতি অবলম্বন করে তারা। এই কারসাজি চক্রের জন্য বড় দুঃসংবাদ আসছে।

পুঁজিবাজারে কারসাজি বা প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অর্জিত সম্পদ বাজেয়াপ্ত হবে। পাশাপাশি সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া যাবে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন-২০২২ নামে প্রস্তাবিত আইনে এসব বিধান রয়েছে। এছাড়া মালিকপক্ষ বা দায়িত্বশীল ঊর্ধ্বতনদের শেয়ার ব্যবসা বা ইনসাইডার ট্রেডিং বন্ধে গোয়েন্দা কার্যক্রম চালানোর সুযোগ রাখা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এসব বিধানকে সময়োপযোগী বলছেন।

কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম বলেন, “শেয়ার বাজার নিয়ে কারসাজি প্রায়ই শোনা যায়, তার বিপক্ষে যে এই ধরনের আইন তৈরি করা হচ্ছে সেটাকে সাধুবাদ দিতে হয়। তবে এটাকে কিভাবে কার্যকর করবে কি করবে না তার উপর নির্ভর করবে এটা কতটুকু যুগোপযোগী হলো।”

পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, “আগের যে আইনটা করা হয়েছিল সেটা অনেককিছু কাভার করেনি। এখন যেটা হচ্ছে সেটা গ্লোবাল অনুযায়ী ঠিকই আছে।”

খসড়ায় আরও রয়েছে, শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হলেও তার জিম্মায় থাকা কোনো বিনিয়োগকারীর সম্পদকে পরিসম্পদ হিসেবে গণ্য করা বা অন্যের দায় মেটাতে তা ব্যবহার করা যাবে না।

ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম বলেন, “মানুষ এই শেয়ারবাজারের উপর কখনও কখনও আস্থা আনলেও মাঝে মাঝে এর বিরুদ্ধে কারসাজির অভিযোগ আসে। তারা এতো উঁচু পদে থাকে যে তাদের বিরুদ্ধে কখনওই কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। যদি এটার মাধ্যমে তাকে আইনের আওতায় আনা যায় তাহলে অবশ্যই শেয়ার বাজারের জন্য এটা ভালো খবর।”

অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, “আসল কথা হচ্ছে গুড গভার্মেন্ট, মার্কেট শৃঙ্খলায় রাখার জন্য তো আইন। তবে মার্কেট বড় হলেই তো ওই আইন প্রযোজ্য হবে।”

এছাড়া নতুন আইনের খসড়ায় বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির দ্বিগুণ ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানির সঙ্গে অ-তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান একীভূতকরণ বা পুনর্গঠনের ক্ষমতা পাচ্ছে বিএসইসি।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


পুঁজিবাজারে কারসাজি করলেই সম্পদ বাজেয়াপ্ত, ১০ বছর জেল

Update Time : ০৩:২২:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

পুঁজিবাজারে কারসাজি করলে সম্পদ বাজেয়াপ্ত হবে। পাশাপাশি জড়িতদের ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রেখে আইন করছে সরকার। প্রস্তাবিত ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন-২০২২’ এর খসড়া অর্থমন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

শেয়ারবাজারে সব সময়ই সক্রিয় থাকে কারসাজি চক্র। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ঠকিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার নিত্যনতুন পদ্ধতি অবলম্বন করে তারা। এই কারসাজি চক্রের জন্য বড় দুঃসংবাদ আসছে।

পুঁজিবাজারে কারসাজি বা প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অর্জিত সম্পদ বাজেয়াপ্ত হবে। পাশাপাশি সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া যাবে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন-২০২২ নামে প্রস্তাবিত আইনে এসব বিধান রয়েছে। এছাড়া মালিকপক্ষ বা দায়িত্বশীল ঊর্ধ্বতনদের শেয়ার ব্যবসা বা ইনসাইডার ট্রেডিং বন্ধে গোয়েন্দা কার্যক্রম চালানোর সুযোগ রাখা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এসব বিধানকে সময়োপযোগী বলছেন।

কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম বলেন, “শেয়ার বাজার নিয়ে কারসাজি প্রায়ই শোনা যায়, তার বিপক্ষে যে এই ধরনের আইন তৈরি করা হচ্ছে সেটাকে সাধুবাদ দিতে হয়। তবে এটাকে কিভাবে কার্যকর করবে কি করবে না তার উপর নির্ভর করবে এটা কতটুকু যুগোপযোগী হলো।”

পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, “আগের যে আইনটা করা হয়েছিল সেটা অনেককিছু কাভার করেনি। এখন যেটা হচ্ছে সেটা গ্লোবাল অনুযায়ী ঠিকই আছে।”

খসড়ায় আরও রয়েছে, শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হলেও তার জিম্মায় থাকা কোনো বিনিয়োগকারীর সম্পদকে পরিসম্পদ হিসেবে গণ্য করা বা অন্যের দায় মেটাতে তা ব্যবহার করা যাবে না।

ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম বলেন, “মানুষ এই শেয়ারবাজারের উপর কখনও কখনও আস্থা আনলেও মাঝে মাঝে এর বিরুদ্ধে কারসাজির অভিযোগ আসে। তারা এতো উঁচু পদে থাকে যে তাদের বিরুদ্ধে কখনওই কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। যদি এটার মাধ্যমে তাকে আইনের আওতায় আনা যায় তাহলে অবশ্যই শেয়ার বাজারের জন্য এটা ভালো খবর।”

অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, “আসল কথা হচ্ছে গুড গভার্মেন্ট, মার্কেট শৃঙ্খলায় রাখার জন্য তো আইন। তবে মার্কেট বড় হলেই তো ওই আইন প্রযোজ্য হবে।”

এছাড়া নতুন আইনের খসড়ায় বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির দ্বিগুণ ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানির সঙ্গে অ-তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান একীভূতকরণ বা পুনর্গঠনের ক্ষমতা পাচ্ছে বিএসইসি।