কোম্পানির সম্পদ বিক্রি করে হলেও বিমা দাবী পরিশোধ করতে হবে: চেয়ারম্যান
- Update Time : ০২:০২:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩
- / 144
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেছেন, সবাই বিমা করে সময় শেষে যেন টাকাগুলো বুঝে পায় কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সঠিক সময়ে গ্রাহক টাকা পাচ্ছে না। এই বিষয়ে একটা সেল গঠন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সেল কমিটির কাছে প্রচুর অভিযোগ আসে। সরাসরি কিংবা মেইল বা অন্যান্য মাধ্যমে। এই অভিযোগগুলো নিয়ে আমরা কাজ শুরু করছি। প্রয়োজনে কোম্পানির সম্পত্তি বিক্রি করে হলেও এসব বিমাদাবি পরিশোধের জন্য কাজ করছি।’
বুধবার ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) নিজস্ব কার্যালয়ে ‘সিএমজেএফ টক’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জয়নুল বারী বলেন, এতোদিন আমরা কমপ্লায়েন্স না মানলে শুধু কোম্পানিকে জরিমানা করেছি। এখন ব্যক্তিকেও অর্থাৎ অভিযুক্ত কর্মকর্তাকেও জরিমানা করা হবে। এইসব সমস্যা সমাধানে আমাদের বেশ কিছু আইন প্রনয়ণ করেছি, আরো কিছু আইন প্রণয়নে কাজ করছি।
তিনি বলেন, কিছু কোম্পানি অতিরিক্ত টাকা খরচ করেছে। কেউ ম্যানেজমেন্ট খরচ বেশি করেছে। কেউ জমি কিনেছে বেশি দামে, এসব জমি বিক্রি করতে গেলে দেখা যায় কেনা দামের কমে বিক্রি করতে হচ্ছে। এজন্য চাইলেও বিক্রি করা যাচ্ছে না। তবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যৌক্তিক দামে বিক্রি করতে, তাহলে গ্রাহকের টাকাগুলো পরিশোধ বড় ভুমিকা রাখবে।
আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ৭টা কোম্পানির বোর্ডকে ডেকেছি এবং তাদের অবস্থান তুলে ধরেছি। তাদের প্রিমিয়াম কেমন এবং কি ধরনের সম্পদ আছে তা দেখেছি। সব শেষ যাতে পলিসি যেগুলো মেচুয়েট হয় সেগুলো কিভাবে পরিশোধ করবে সেই পরিকল্পনা চেয়েছি। এসব তথ্যগুলো দিলে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নিবো।
তিনি বলেন, বীমা কোম্পানিগুলো যে পরিমান প্রিমিয়াম পায় সেটা কোথায় খরচ করে এবং কোথায় ইনভেস্ট করে এসব তথ্যগুলো আমরা দেখি। প্রতি মাসে আমরা এসব প্রতিবেদনগুলো আমরা পর্যবেক্ষণ করি। এর ধারাবাহিকতায় আমরা তাদের সঠিক গাইডলাইন দিয়ে থাকি। কোম্পানিগুলো সব চেয়ে বেশি অনিয়ম করে জমি ক্রয়ের সময় এজন্য আমরা এখন জমি ক্রয়ের অনুমতি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেই না।
বিমা খাতে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কোনটা বলে মনে করেন এমন প্রশ্নের জবাবে জয়নুল বারী বলেন, নন কমপ্লায়েন্স বড় চ্যালেঞ্জ। কোম্পানির অনিয়ম বন্ধ হলেই অনেক কিছু সমাধান হয়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন, ডেল্টা লাইফের অবস্থা পেয়েছি খুবই খারাপ। আইন অনুযায়ী দুইটা বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে হয়তো বোর্ড ভেঙে দেওয়া। অথবা কোম্পানি বন্ধ করে দেওয়া যায়। কিন্তু আমরা ভেবে দেখলাম কোম্পানিটি ভালো ছিলো তাই চেষ্টা করেছি কিভাবে পুনরায় দাঁড় করানো যায় সে কাজ শুরু করলাম। এর পর আদালত থেকে একটা রায় হয়। সব মিলে তাদের স্টোকহোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে আমরা কিছু শর্ত দিয়ে আদালতে পাঠালাম। আদালতের রায়ের পর তাদের কার্যক্রমের বিষয়ে অনুমোদন করেছি।
বিমা খাতের প্রচারণার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কিন্তু কত টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে পারবে সেটা বলা নেই। ব্যয়ের পরিমান কত হতে পারে এই বিষয়ে কোন পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে জয়নুল বারী বলেন, বিমা খাত ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য নতুন নতুন জায়গায় যেতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে নন লাইফ বিমা কোম্পানির সঙ্গে একটা বৈঠক করেছি এবং তাদের কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছি। প্রচারণায় গুরুত্ব রাখে বীমা খাতের ব্যাপ্তি বাড়াতে। এসব কাজে যেন অতিরিক্ত খরচ না হয় সেটা আমরা দেখবো।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে জয়নুল বারী বলেন, কোন কাজ যেমন হুটহাট করা সম্ভব নয় ঠিক তেমনি রাতারাতি বিমা খাতের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়। আপনারা দেখবেন আমরা দুর্নীতি করছি কিনা। আমরা সমস্যা সমাধানে কাজ করছি কিনা। সব কিছু দেখে আলোচনা সমালোচনা করবেন। তবে যৌক্তিক আলোচনা বা সমালোচনাকে আমি পছন্দ করি। আমরা যেমন বীমা খাতের উন্নয়নে কাজ করছি আপনারাও সে কাজে সহযোগিতা করবেন বলে আশা করছি।
সিএমজেএফ সাধারণ সম্পাদক আবু আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি জিয়াউর রহমান।