ইউরোপীয় ইউনিয়নে পোশাক সরবরাহে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ
- Update Time : ০৩:৫৪:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
- / 163
নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০২২ সালের জানুয়ারি-নভেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি দেশে বাংলাদেশের পোশাক আমদানি বেড়েছে ৩৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ। ইউরোপীয় পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উঠে এসেছে।
একই সময়ের ইইউ অঞ্চলে পোশাক আমদানির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। তবে নভেম্বর পরবর্তী সময়ে সামগ্রিক বাজারে মন্দার প্রভাব পড়েছে।
ইইউর জন্য বাংলাদেশ পোশাক আমদানির দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস, আমদানি প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে রয়েছে প্রথম স্থানে।
পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২২ সালের প্রথম ১১ মাসে বাংলাদেশ থেকে দুই হাজার ১১৮ কোটি ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে এ অঞ্চলের দেশগুলো। এ হিসেবে ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৩৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
জানুয়ারি থেকে নভেম্বরের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিশ্ব থেকে ৯ হাজার ৫১৭ কোটি ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে। পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধির হার ২২ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
চীন ২৯ দশমিক ৪০ শতাংশ শেয়ার নিয়ে ইইউর সর্ববৃহৎ পোশাক সরবরাহকারীর অবস্থান ধরে রেখেছে। ২০২২ সালের ওই এগারো মাসে চীন থেকে আমদানি ২ হাজার ৭৯৮ কোটি ডলারে পৌঁছেছে, বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯ দশমিক ২৯ শতাংশ।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, এই পরিসংখ্যানের উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি। সামগ্রিক বাণিজ্যে বাংলাদেশ দ্বিতীয়, ইউরোপেও দ্বিতীয়। ভালো সংবাদ যে, ইউরোপে প্রবৃদ্ধিতে আমরা প্রথম। আমরা প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রেখেছি। বাংলাদেশ সাড়ে ৩৮ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, চীনের ২০ শতাংশের মতো।
তবে করোনা পরবর্তী মন্দা ও ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে প্রবৃদ্ধি কমার আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি। বিজিএমইএ পরিচালক বলেন, প্রবৃদ্ধি যে গতিতে বাড়া উচিত ছিল নভেম্বরের পর থেকে তা বজায় থাকেনি। করোনা পরবর্তী মন্দা নভেম্বরের পর আঘাত করেছে। তবে আমদানি কমলেও প্রবৃদ্ধির হিসেবে প্রতিযোগী হিসেবে বাংলাদেশ অন্যদের চেয়ে ভালো অবস্থানে থাকবে।
প্রবৃদ্ধি প্রসঙ্গে ‘অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে ক্রেতাদের বাংলাদেশের প্রতি আস্থা বেশি’ বলে জানান মহিউদ্দিন রুবেল। তিনি বলেন, চীন ও অন্যান্য দেশের সীমাবদ্ধতার মাঝে গ্রিন ফ্যাক্টরি ও নতুন নতুন পণ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভালো করছে। উপকরণের দাম বৃদ্ধির কারণে পণ্যের দামও বেড়েছে, যা প্রবৃদ্ধিতেও যোগ হয়েছে।
গত ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের মার্চে প্রবৃদ্ধির হার আগের মাসগুলোর মতো হবে না উল্লেখ করে আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ক্রেতাদের আস্থার কারণে তারা সামনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবেন।
তথ্যের ভিত্তিতে ইউরোস্ট্যাট জানায়, একই সময়ে তুরস্ক থেকে আমদানিও ১১ দশমিক ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, মোট আমদানি দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১০৯ ডলারে। ভারত থেকেও আমদানি ৪৫৩ কোটি ডলারে পৌঁছেছে, বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২১ দশমিক ৫২ শতাংশ।
ইইউ অঞ্চলে অন্য শীর্ষ সরবরাহকারী দেশগুলোর মধ্যে, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, মরক্কো, শ্রীলঙ্কা এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমদানি যথাক্রমে ৩৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ, ৩৪ দশমিক ১৬ শতাংশ, ২৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ, ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ, ১৭ দশমিক ৩২ শতাংশ এবং ২৭ দশমিক ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।