এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন
- Update Time : ০৬:২৩:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২২
- / 224
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
উদ্বেগ কাটিয়ে টানা ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে দেশের শেয়ারবাজার। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচক বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে।
এর আগে বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ ঘিরে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরাও ছিলেন উদ্বিগ্ন। ফলে টানা দরপতনের সঙ্গে শেয়ারবাজারে দেখা দেয় লেনদেন খরা। গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবেসের মধ্যে দুই কার্যদিবস তিনশো কোটি টাকার কম লেনদেন হয়। বাকি তিন কার্যদিবস লেনদেন ছিলো তিনশো কোটি টাকার ঘরে। এতে লেনদেন কমতে কমতে ২০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থায় চলে যায়।
তবে বিএনপির গণসমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হওয়ার পর চলতি সপ্তাহের শুরুতেই শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিলে। সেই সঙ্গে বাড়ে লেনদেনের গতি। আগের দুই কার্যদিবসের মতো মঙ্গলবার সূচক ও লেনদেন বাড়ার মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজর ঊর্ধ্বমুখী থাকলো।
অবশ্য দাম বাড়া বা কমার তুলনায় ডিএসই ও সিএইতে দাম অপরিবর্তিত থাকা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এখনো বেশি রয়েছে। দাম অপরিবর্তিত থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনিম্ন দাম) আটকে রয়েছে। ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের ক্রেতার দেখা তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
তবে লেনদেনের শেষদিকে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকা থেকে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নেয়। এতে আটকে যায় সূচকের বড় উত্থান। একই সঙ্গে দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকা বড় হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৪৫ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৯টির। আর ২৫৯টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে। ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৭১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৮৬ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২১২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৬১৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৫৬৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৪৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা। লেনদেন শুধু আগের কার্যদিবসের তুলনায় বাড়েনি, চলতি বছরের ১৪ নভেম্বরের পর বাজারটিতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে।
লেনদেন বাড়ার দিনে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে স্যালভো কেমিক্যালের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪২ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের ২৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৩ কোটি ৪২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেনেক্স ইনফোসিস।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- মুন্নু সিরামিকস, বসুন্ধরা পেপার, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ওরিয়ন ফার্মা, আমরা নেটওয়ার্ক, অ্যাডভেন্ট ফার্মা এবং আইটিসি।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ১৯৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩০টির এবং ১২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।