তিস্তার তীরে আলুর বাম্পার ফলন
- Update Time : ০৫:২৪:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল ২০২২
- / 224
রোকন সরকার, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পূর্ব ও পশ্চিম দিক দিয়ে নদী বয়ে যাওয়াতে পলিমাটির স্তর এখানকার মাটিকে বেশ উর্বর করেছে। অধিকাংশ মাটিতে তামা,লৌহ ও ম্যাংগানিজের আধিক্য আছে। সিংহভাগ মাটির বুনট দোঁআশ হওয়ায় প্রধান ফসল ধান ও গম,পাট ফললেও বর্তমানে আলুসহ অন্যান্য শাকসবজি আবাদের এলাকা বৃদ্ধি পাচ্ছে।উপজেলার তিস্তা নদীর চরে এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষীরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং ক্ষেতে রোগ বালাই কম হওয়ায় এবার আলুর ফলন ভালো হয়েছে।
উপজেলার তিস্তা নদীবেষ্টিত ইউনিয়ন দলদলিয়া, থেতরাই, গুনাইগাছ ও বজরা ইউনিয়নের চরাঞ্চলে আলুর ফলন ভালো হয়েছে। সরেজমিনে এ প্রতিবেদক গুনাইগাছ ইউনিয়নের নন্দুনেফড়া, কাজিরচক, টিটমা ও দামারহাটে গিয়ে দেখেছেন সেখানে আলু তোলায় ব্যস্ত সববয়সী মানুষ। বেশ কিছুদিন আগে থেকেই আলু তোলা শুরু হওয়ায় প্রায় সব ক্ষেতের আলু ইতোমধ্যে তুলেছেন চাষীরা। তারা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকা,সুষম মাত্রায় সার ও কীটনাশক প্রয়োগ, কৃষি কর্মকর্তা ও অভিজ্ঞদের পরামর্শ প্রদান এবং আলুর রোগবালাই কম হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে। সঠিক দাম পেলে আলু বিক্রয় করে লাভবান হওয়ার আশা করছেন তারা।
আলুচাষী আবুল কাশেম বলেন, সব আলু তুলে ফেলছি। ফলন খুব ভালো হয়েছে। সারশরি, ঔষধ ঠিকমত দিয়েছি।আবহাওয়া ভালোই ছিলো। রোগবালাই নাই এইবার।এইরকম হলে আমাদের অবস্থা দিনদিন ভালোই হইবে ইনশাআল্লাহ।
মিষ্টি আলুর ফলও ভালো হয়েছে:
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার চরাঞ্চলের বিভিন্ন ইউনিয়নের আদর্শ মিষ্টি আলু চাষিদের মাঝে জাপানি জাতের মিষ্টি আলুর বীজ ও সার প্ররোদনা হিসাবে দেয়া হয়। জাপানি জাতের মিষ্টি আলু- ওকিনাওয়া ও মুরাসাকি বাউ মিষ্টি আলু ১, ২ ও ৩ জাত বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভাবিত হয়ে কুড়িগ্রামের উলিপুরে চরাঞ্চল এলাকায় ব্যাপক প্রসারতা লাভ করেছে। গত বছর অধিক ফলন হওয়ায় এবারে উপজেলার চরাঞ্চলে হেক্টর ময় হেক্টর জমিতে এ মিষ্টি আলুর চাষ করেছেন মিষ্টি আলু চাষিরা।ব্যাপক ফলনের আশায় উপজেলার চরাঞ্চলে জাপানি উন্নতমানের মিষ্টি আলুর জাত গুলোর মধ্যে ওকিনাওয়া ও মুরাসাকি বাউ মিষ্টি আলু প্রায় ২ হেক্টর জমির মধ্যে ১৫ টি প্রদর্শণি রয়েছে। উক্ত ১৫ টি প্রদর্শণি ভুক্ত কৃষকদের মধ্যে প্ররোদনা হিসাবে বিনা পয়সায় বীজ ও সার দেয়া হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর এ উপজেলায় ৯৫২ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ণয় করা হলেও ৮৪৫ হেক্টর অর্জিত হয়।এবার তুলনামূলকভাবে শীত কম হওয়ায় আলুর রোগ কম হয়েছে। এ ছাড়াও কৃষকদের গ্রুপভিত্তিক পরামর্শ দিয়ে সুষম সার ও ছত্রাকনাশক ওষুধ প্রয়োগ করায় আলুর ফলন ভালো হয়েছে। আশা করি এতে করে কৃষকরা লাভবান হবেন।