ইফতার পার্টির উপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের মিছিল-মানববন্ধন

  • Update Time : ১১:০৫:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ মার্চ ২০২৪
  • / 74

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

পবিত্র মাহে রমজানে মুসলমানদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ইফতার পার্টি আয়োজনে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা । এরূপ নিষেধাজ্ঞাকে হাজার বছরের বাঙ্গালি মুসলিম সংস্কৃতির উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ বলে মন্তব্য করেন তারা ।

সোমবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ইফতার পার্টির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইফতার পার্টি বন্ধের সিদ্ধান্ত একটি মুসলিম বিদ্বেষী সিদ্ধান্ত। এ দেশের ক্যাম্পাসগুলোতে কনসার্ট হতে পারলে, গানের আয়োজন হলে ইফতার পার্টিও হবে, শবেবরাতও পালন হবে। এদেশের ক্যাম্পাস-গুলোয় ৯০ ভাগ মুসলমানের সন্তান পড়াশোনা করে, কারো চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্তে, কারো নগ্ন হস্তক্ষেপে শিক্ষার্থীরা ইফতার পার্টি থেকে বিরত থাকবে না।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন ভুঁইয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে বেশিরভাগই মুসলমান শিক্ষার্থী থাকা সত্বেও এমন নিষেধাজ্ঞা ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের অংশ। এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই খেজুরের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে, রাবিতে গরুর মাংস নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। কুচক্রী মহল যত ষড়যন্ত্র করবে আমরা আরো বেশি বেশি ইফতার করব। যেখানেই মুসলিম কমিউনিটি আছে সেখানেই ইফতার হবে। ক্যাম্পাসে ইফতার হবে, রোজা হবে, শিক্ষার্থীরা কুরআন তিলাওয়াত করবে, কেউ আটকিয়ে রাখতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে যে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে আমরা এটা প্রত্যাহারের দাবি জানাই।

মানববন্ধনে সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, মুসলিমদের হাজার বছরের ঐতিহ্য রোজা রাখা, ইফতার করা। মুসলিমরা রোজা রাখবে এটাই স্বাভাবিক। আজকে কোন একটা গোষ্ঠী চাচ্ছে মুসলমানদের সংস্কৃতি থেকে এটা মুছে দিতে। তারই অংশ হিসেবে তারা বাংলাদেশের দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমরা এটা মানতে পারি না। আমাদের আস্থার জায়গা, দেশনেত্রী শেখ হাসিনার নাম করে একটা চক্র এই কাজ করছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান, তিনি এই ধরনের কথা বলতে পারেন না।তাকে ব্যবহার করে কেউ এটা করার চেষ্টা করছে।

রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিক কায়েম বলেন, ইফতার আমাদের হাজার বছরের বাঙ্গালি মুসলিম সংস্কৃতির অংশ। শাবিপ্রবি এবং নোবিপ্রবি তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইফতার মাহফিলের উপর নগ্ন হস্তক্ষেপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবেকবান শিক্ষার্থীরা নিজেদের টিউশন ও বৃত্তির টাকা দিয়ে ক্যাম্পাসের সর্বত্র গণ ইফতার কর্মসূচি আয়োজন করে এই সংস্কৃতিকে আরো বেশী উজ্জীবিত করবো।

উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচিতে ‘আহলান সাহলান-মাহে রমজান’, ‘সাওম সালাত ইফতার-মুসলমানদের অধিকার’, ‘ক্যাম্পাসগুলোতে কনসার্ট হলে-ইফতার পার্টিও হতে হবে’, ‘ক্যাম্পাসে কনসার্ট হলে-সমস্যা কি ইফতার হলে’, ‘রমজান ইফতার-অধিকার অধিকার’,— ইত্যাদি বলে স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।

মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিবাদী মিছিল রাজু ভাস্কর্য থেকে মিলন চত্বর হয়ে কেন্দ্রীয় মসজিদ, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী হয়ে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ইফতার পার্টির উপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের মিছিল-মানববন্ধন

Update Time : ১১:০৫:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ মার্চ ২০২৪

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

পবিত্র মাহে রমজানে মুসলমানদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ইফতার পার্টি আয়োজনে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা । এরূপ নিষেধাজ্ঞাকে হাজার বছরের বাঙ্গালি মুসলিম সংস্কৃতির উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ বলে মন্তব্য করেন তারা ।

সোমবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ইফতার পার্টির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইফতার পার্টি বন্ধের সিদ্ধান্ত একটি মুসলিম বিদ্বেষী সিদ্ধান্ত। এ দেশের ক্যাম্পাসগুলোতে কনসার্ট হতে পারলে, গানের আয়োজন হলে ইফতার পার্টিও হবে, শবেবরাতও পালন হবে। এদেশের ক্যাম্পাস-গুলোয় ৯০ ভাগ মুসলমানের সন্তান পড়াশোনা করে, কারো চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্তে, কারো নগ্ন হস্তক্ষেপে শিক্ষার্থীরা ইফতার পার্টি থেকে বিরত থাকবে না।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন ভুঁইয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে বেশিরভাগই মুসলমান শিক্ষার্থী থাকা সত্বেও এমন নিষেধাজ্ঞা ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের অংশ। এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই খেজুরের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে, রাবিতে গরুর মাংস নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। কুচক্রী মহল যত ষড়যন্ত্র করবে আমরা আরো বেশি বেশি ইফতার করব। যেখানেই মুসলিম কমিউনিটি আছে সেখানেই ইফতার হবে। ক্যাম্পাসে ইফতার হবে, রোজা হবে, শিক্ষার্থীরা কুরআন তিলাওয়াত করবে, কেউ আটকিয়ে রাখতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে যে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে আমরা এটা প্রত্যাহারের দাবি জানাই।

মানববন্ধনে সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, মুসলিমদের হাজার বছরের ঐতিহ্য রোজা রাখা, ইফতার করা। মুসলিমরা রোজা রাখবে এটাই স্বাভাবিক। আজকে কোন একটা গোষ্ঠী চাচ্ছে মুসলমানদের সংস্কৃতি থেকে এটা মুছে দিতে। তারই অংশ হিসেবে তারা বাংলাদেশের দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমরা এটা মানতে পারি না। আমাদের আস্থার জায়গা, দেশনেত্রী শেখ হাসিনার নাম করে একটা চক্র এই কাজ করছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান, তিনি এই ধরনের কথা বলতে পারেন না।তাকে ব্যবহার করে কেউ এটা করার চেষ্টা করছে।

রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিক কায়েম বলেন, ইফতার আমাদের হাজার বছরের বাঙ্গালি মুসলিম সংস্কৃতির অংশ। শাবিপ্রবি এবং নোবিপ্রবি তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইফতার মাহফিলের উপর নগ্ন হস্তক্ষেপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবেকবান শিক্ষার্থীরা নিজেদের টিউশন ও বৃত্তির টাকা দিয়ে ক্যাম্পাসের সর্বত্র গণ ইফতার কর্মসূচি আয়োজন করে এই সংস্কৃতিকে আরো বেশী উজ্জীবিত করবো।

উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচিতে ‘আহলান সাহলান-মাহে রমজান’, ‘সাওম সালাত ইফতার-মুসলমানদের অধিকার’, ‘ক্যাম্পাসগুলোতে কনসার্ট হলে-ইফতার পার্টিও হতে হবে’, ‘ক্যাম্পাসে কনসার্ট হলে-সমস্যা কি ইফতার হলে’, ‘রমজান ইফতার-অধিকার অধিকার’,— ইত্যাদি বলে স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।

মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিবাদী মিছিল রাজু ভাস্কর্য থেকে মিলন চত্বর হয়ে কেন্দ্রীয় মসজিদ, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী হয়ে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করে।