শাহবাগে ফুলের দাম বাড়ানোর কারণ জানতে চাওয়ায় ঢাবি সাংবাদিকদের উপর হামলা
- Update Time : ১০:৪৩:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / 74
জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি
রাজধানীর শাহবাগে ফুলতলা ফ্লাওয়ার শপে ফুলের দাম বাড়ানোর ব্যাপারে খবর সংগ্রহ করতে গেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) তিন সাংবাদিকের ওপর হামলা করেছে ওই দোকানের কর্মচারীরা।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টার পরে শাহবাগের পাইকারি ফুলের দোকান মালিক সমিতির নেতা শেখ মো. মেরিনের দোকানে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলার আবেদন করেছে ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা।
মারধরের শিকার তিন সাংবাদিক হলেন- নিউজ বাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমের বিশ্বদ্যালয় প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম, রেডিও টুডের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. ইমদাদুল আজাদ ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রাসেল সরকার। তাদের মধ্যে ইমদাদুল আজাদের ডান চোখে মারাত্মকভাবে জখম হয়েছে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার ভুক্তভোগী মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলার আবেদন করেছেন। এতে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৬-৭ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন- পায়েল (৩৫), সাল্লু (২৭), আব্দুর রাজ্জাক (৩৫), বুলু (৩২), দিদার (৩১), বাবু (৩০), জাহাঙ্গীর (৩২)। তারা সবাই শাহবাগ ফুল মার্কেটের কর্মচারী।
জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে নিউজ বাংলার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক মনিরুল ইসলাম এবং বিডিনিউজ২৪ ডট কম এর ঢাবি প্রতিবেদক রাসেল সরকার পয়লা ফাল্গুন উপলক্ষে ফুলের ক্রয়-বিক্রয়ের অবস্থার সংবাদ সংগ্রহ করতে যান। এসময় মার্কেটে ফুলের দাম বাড়ার কারণ জানতে ফুলতলা ফ্লাওয়ার সপে কর্মরত পায়েল নামে একজনের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি খারাপ আচরন করেন। এক পর্যায়ে তারা উত্তেজিত হয়ে মনিরুল ইসলামের ওপর হামলা করেন । এসময় আশপাশের কর্মচারীরাও তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়। এ ঘটনার সময় পুলিশ পাশে থাকলেও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।
মামলার এজাহারে বাদী মনিরুল ইসলাম বলেন, আমি আমার সহকর্মী রাসেল সরকারকে নিয়ে শাহবাগ ফুল মার্কেটে ফুলের দাম বাড়ার কারণ সংক্রান্ত সংবাদ সংগ্রহে যাই। ফুলতলা ফ্লাওয়ার শপে কর্মরত পায়েলের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। এক পর্যায়ে খারাপ আচরণ করেন। আমাদের ভুয়া সাংবাদিক বলেন।
মনিরুল আরও বলেন, আমরা মৌখিকভাবে প্রতিবাদ করলে পায়েল উত্তেজিত হয়ে আমাকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন। আমার সহকর্মী প্রতিবাদ করতে গেলে অভিযুক্তরাসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৬-৭ জন এসে আমাদের দুজনকে মারপিট করেন।
সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যান রেডিও টুডের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. ইমদাদুল আজাদ। সাংবাদিক পরিচয়ে ঘটনার বিবরণ জানতে চাইলে বিবাদীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকেও মারপিট করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
এজাহারে বলা হয়, ইমদাদুল আজাদকে রাস্তায় ফেলে এলোপাতাড়ি মারপিট করলে তার ডান চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী আমাদের চিনতে পেরে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করেন এবং ইমদাদুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ ফুলতলা ফ্লাওয়ার শপের মালিক মো. মেরিন শেখ বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। ঢাকার বাইরে আছি। শুনেছি দোকানে ঝামেলা হয়েছে। আমাদের দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাজিরুর রহমান বলেন, সাংবাদিকদেরকে শাহবাগ মোড়ের ফুল মার্কেটে মারধর করা হয়েছে এমন অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টির মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।