ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলা থাকবে, ক্লাস চলবে অনলাইনে

  • Update Time : ০২:৪৩:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ জানুয়ারী ২০২২
  • / 189

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নতুন করে করোনাভাইরাসের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় দুই দফায় বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

জাতীয় সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে একই সময় পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও (ঢাবি) বন্ধ থাকবে। তবে এসময়ে খোলা থাকবে ঢাবির সব আবাসিক হল। সেশনজট নিরসনে প্রতিষ্ঠানটিতে ক্লাস চলবে অনলাইনে, সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে প্রশাসনিক কার্যালয়।

শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা যে যেখানে আছে সেখানেই যেন নিরাপদ থাকে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবস্থান করে। ক্লাস অনলাইনে চলবে। সীমিত পরিসরে অফিস খোলা রাখা হবে। আমাদের শিক্ষার্থীরা যেন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে না পড়ে সেজন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

উপাচার্য বলেন, আমরাও জাতীয় সিদ্ধান্তকে অনুসরণ করছি। করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও বন্ধ থাকবে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২১ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনের আলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম ২১ জানুয়ারি থেকে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসসমূহ সীমিত পরিসরে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা থাকবে। জরুরি পরিষেবাসমূহ (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ইন্টারনেট, স্বাস্থ্যসেবা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি) যথারীতি অব্যাহত থাকবে।

এতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ আবাসস্থলে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে অবস্থান করার পরামর্শ দেওয়া হলো। ক্যাম্পাসে সভা, সমাবেশ ও জনসমাগম না করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ করা হলো।

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে গত ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে ১৩ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে ১১ দফা বিধিনিষেধ দেয় সরকার। শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ৬ দফা নির্দেশনা দিয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি হয়।

দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে ২০২০ সালের মার্চে ঢাবি কর্তৃপক্ষ শ্রেণি কার্যক্রম ও আবাসিক হল বন্ধ করে দেয়। করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর ঢাবির সব আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য গত বছরের ৫ অক্টোবর থেকে খুলে দেওয়া হয়। প্রথম ধাপে অগ্রাধিকারভিত্তিতে কেবল স্নাতক শেষবর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা পরিচয়পত্র ও টিকা কার্ড দেখিয়ে হলে ওঠার সুযোগ পান। গত ১০ অক্টোবর থেকে ঢাবির আবাসিক হলে উঠতে শুরু করেন অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীরাও।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। ওই বছরের শেষ দিকে সংক্রমণ ও মৃত্যু কিছুটা নিম্নমুখী হলেও ২০২১ সালের এপ্রিলের পর থেকে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। তবে ২০২২ সালের শুরুতেই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট আবারও চোখ রাঙাতে শুরু করে। দ্রুত বাড়তে থাকে সংক্রমণ ও মৃত্যু।

গতকাল বৃহস্পতিবার দেশে করোনায় একদিনে চারজনের মৃত্যু ও ১০ হাজার ৮৮৮ জনের আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত দেশে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৮ হাজার ১৮০ জন এবং মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ লাখ ৫৩ হাজার ১৮২ জন।

Please Share This Post in Your Social Media


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলা থাকবে, ক্লাস চলবে অনলাইনে

Update Time : ০২:৪৩:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ জানুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নতুন করে করোনাভাইরাসের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় দুই দফায় বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

জাতীয় সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে একই সময় পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও (ঢাবি) বন্ধ থাকবে। তবে এসময়ে খোলা থাকবে ঢাবির সব আবাসিক হল। সেশনজট নিরসনে প্রতিষ্ঠানটিতে ক্লাস চলবে অনলাইনে, সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে প্রশাসনিক কার্যালয়।

শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা যে যেখানে আছে সেখানেই যেন নিরাপদ থাকে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবস্থান করে। ক্লাস অনলাইনে চলবে। সীমিত পরিসরে অফিস খোলা রাখা হবে। আমাদের শিক্ষার্থীরা যেন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে না পড়ে সেজন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

উপাচার্য বলেন, আমরাও জাতীয় সিদ্ধান্তকে অনুসরণ করছি। করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও বন্ধ থাকবে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২১ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনের আলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম ২১ জানুয়ারি থেকে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসসমূহ সীমিত পরিসরে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা থাকবে। জরুরি পরিষেবাসমূহ (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ইন্টারনেট, স্বাস্থ্যসেবা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি) যথারীতি অব্যাহত থাকবে।

এতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ আবাসস্থলে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে অবস্থান করার পরামর্শ দেওয়া হলো। ক্যাম্পাসে সভা, সমাবেশ ও জনসমাগম না করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ করা হলো।

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে গত ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে ১৩ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে ১১ দফা বিধিনিষেধ দেয় সরকার। শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ৬ দফা নির্দেশনা দিয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি হয়।

দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে ২০২০ সালের মার্চে ঢাবি কর্তৃপক্ষ শ্রেণি কার্যক্রম ও আবাসিক হল বন্ধ করে দেয়। করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর ঢাবির সব আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য গত বছরের ৫ অক্টোবর থেকে খুলে দেওয়া হয়। প্রথম ধাপে অগ্রাধিকারভিত্তিতে কেবল স্নাতক শেষবর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা পরিচয়পত্র ও টিকা কার্ড দেখিয়ে হলে ওঠার সুযোগ পান। গত ১০ অক্টোবর থেকে ঢাবির আবাসিক হলে উঠতে শুরু করেন অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীরাও।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। ওই বছরের শেষ দিকে সংক্রমণ ও মৃত্যু কিছুটা নিম্নমুখী হলেও ২০২১ সালের এপ্রিলের পর থেকে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। তবে ২০২২ সালের শুরুতেই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট আবারও চোখ রাঙাতে শুরু করে। দ্রুত বাড়তে থাকে সংক্রমণ ও মৃত্যু।

গতকাল বৃহস্পতিবার দেশে করোনায় একদিনে চারজনের মৃত্যু ও ১০ হাজার ৮৮৮ জনের আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত দেশে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৮ হাজার ১৮০ জন এবং মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ লাখ ৫৩ হাজার ১৮২ জন।