তথ্য নয়, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করুন: টিআইবি

  • Update Time : ০৫:৩৪:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১
  • / 198

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কোভিড মোকাবিলায় তথ্য নয়, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গণমাধ্যমের কাছে রোগী ও স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক তথ্য আদান-প্রদানে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ঢাকার সিভিল নির্দেশনা বাতিল এবং কাদের স্বার্থে এ ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো, তা খতিয়ে দেখে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (১০ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশে বর্তমানে কোভিড-১৯ অতিমারির সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে এবং আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় প্রতিদিনই রেকর্ড ছাড়াচ্ছে। এমন সময় ঢাকা জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোর স্বাস্থ্য ও রোগীর সেবা বিষয়ক যে কোনও তথ্য গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশে বিধিনিষেধ আরোপ করা মুক্ত গণমাধ্যম ও অবাধ তথ্য প্রবাহের সাংবিধানিক অধিকার এবং তথ্য জানার অধিকারের পুরোপুরি লঙ্ঘন। বিষয়টি গণমাধ্যমের অবাধ তথ্য সংগ্রহ ও প্রচারে ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা দেওয়ারও শামিল।

তিনি বলেন, এ নির্দেশনা জারির পরদিনই স্বাস্থ্য অধিদফতর ১০টির বেশি জাতীয় দৈনিকে রাষ্ট্রীয় তথা জনগণের অর্থব্যয়ে ‘করোনার ভয়াবহতা ঠেকাতে বিধিনিষেধ আন্তরিক ও কঠোরভাবে পালনের আকুল আবেদন’ শীর্ষক বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। এতে সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্যখাতে কোনও অনিয়ম-দুর্নীতি সংঘটিত হয়নি বলেও সাফাই গাইবার অপচেষ্টা করা হয়েছে। অথচ গত এক বছরে স্বাস্থ্যখাতের নিয়োগ, ক্রয়, অবকাঠামো নির্মাণ ও সেবাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগুনতি অনিয়ম-দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার সংবাদ পত্রিকার পাতা খুললেই পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে উত্থাপিত প্রতিবেদনেও এটি দেখা গেছে।

টিআইবির সাম্প্রতিক গবেষণাগুলোতেও এ খাতে সুশাসনের ঘাটতির নানা চিত্র উঠে এসেছে। এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং তথ্য প্রদানে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে মূলত স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা ঢাকার প্রচেষ্টা একই সূত্রে গাঁথা।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বিবৃতিতে আরও বলেন, সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ সংকটের কারণে যখন একজন সাধারণ কোভিড রোগী গড়ে ৫ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণে বাধ্য হচ্ছেন, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার অভাবে কোভিড রোগীর মৃত্যুর ঘটনা উচ্চ আদালতের দৃষ্টিগোচর হয়েছে, কোভিড-১৯ মোকাবিলা কার্যক্রমে বিগত দিনগুলোতে সংঘটিত অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে শৈথিল্যের পাশাপাশি সংঘটিত অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত ও বিচারেও ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে- তখন বিধিনিষেধের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহে বাধা সৃষ্টি স্বাস্থ্যসেবায় বিদ্যমান অনিয়ম-দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার তথ্য গোপন কিংবা ‘অস্বীকারের সংস্কৃতির’ ধারাবাহিকতায় দুর্নীতিবাজদের বিশেষ সুবিধা দিবে একথা বলাই যায়।

Please Share This Post in Your Social Media


তথ্য নয়, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করুন: টিআইবি

Update Time : ০৫:৩৪:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কোভিড মোকাবিলায় তথ্য নয়, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গণমাধ্যমের কাছে রোগী ও স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক তথ্য আদান-প্রদানে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ঢাকার সিভিল নির্দেশনা বাতিল এবং কাদের স্বার্থে এ ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো, তা খতিয়ে দেখে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (১০ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশে বর্তমানে কোভিড-১৯ অতিমারির সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে এবং আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় প্রতিদিনই রেকর্ড ছাড়াচ্ছে। এমন সময় ঢাকা জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোর স্বাস্থ্য ও রোগীর সেবা বিষয়ক যে কোনও তথ্য গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশে বিধিনিষেধ আরোপ করা মুক্ত গণমাধ্যম ও অবাধ তথ্য প্রবাহের সাংবিধানিক অধিকার এবং তথ্য জানার অধিকারের পুরোপুরি লঙ্ঘন। বিষয়টি গণমাধ্যমের অবাধ তথ্য সংগ্রহ ও প্রচারে ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা দেওয়ারও শামিল।

তিনি বলেন, এ নির্দেশনা জারির পরদিনই স্বাস্থ্য অধিদফতর ১০টির বেশি জাতীয় দৈনিকে রাষ্ট্রীয় তথা জনগণের অর্থব্যয়ে ‘করোনার ভয়াবহতা ঠেকাতে বিধিনিষেধ আন্তরিক ও কঠোরভাবে পালনের আকুল আবেদন’ শীর্ষক বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। এতে সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্যখাতে কোনও অনিয়ম-দুর্নীতি সংঘটিত হয়নি বলেও সাফাই গাইবার অপচেষ্টা করা হয়েছে। অথচ গত এক বছরে স্বাস্থ্যখাতের নিয়োগ, ক্রয়, অবকাঠামো নির্মাণ ও সেবাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগুনতি অনিয়ম-দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার সংবাদ পত্রিকার পাতা খুললেই পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে উত্থাপিত প্রতিবেদনেও এটি দেখা গেছে।

টিআইবির সাম্প্রতিক গবেষণাগুলোতেও এ খাতে সুশাসনের ঘাটতির নানা চিত্র উঠে এসেছে। এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং তথ্য প্রদানে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে মূলত স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা ঢাকার প্রচেষ্টা একই সূত্রে গাঁথা।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বিবৃতিতে আরও বলেন, সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ সংকটের কারণে যখন একজন সাধারণ কোভিড রোগী গড়ে ৫ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণে বাধ্য হচ্ছেন, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার অভাবে কোভিড রোগীর মৃত্যুর ঘটনা উচ্চ আদালতের দৃষ্টিগোচর হয়েছে, কোভিড-১৯ মোকাবিলা কার্যক্রমে বিগত দিনগুলোতে সংঘটিত অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে শৈথিল্যের পাশাপাশি সংঘটিত অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত ও বিচারেও ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে- তখন বিধিনিষেধের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহে বাধা সৃষ্টি স্বাস্থ্যসেবায় বিদ্যমান অনিয়ম-দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার তথ্য গোপন কিংবা ‘অস্বীকারের সংস্কৃতির’ ধারাবাহিকতায় দুর্নীতিবাজদের বিশেষ সুবিধা দিবে একথা বলাই যায়।