অ্যাডভেঞ্চার এ নারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ!
- Update Time : ১০:০৯:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১
- / 288
রাহিমা আক্তার রিয়া:
নারী মানেই আমরা একটা অবলা,অসহায় আর দূর্বল জাতি সত্ত্বাকে বুঝি।কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় যখনই সুযোগ এসেছে নিজের সুপ্ত মেধা ও প্রতিভাকে প্রকাশ করার,ঠিক তখনই নারীরা বারবার প্রমাণ করেছে বিধাতা কোনো অংশেই বিদ্যা-বুদ্ধিতে নারীদের পিছিয়ে রাখেননি।বরং ক্ষেত্র বিশেষে তারা পুরুষদের ছাপিয়ে গেছেন বহুবার।
সৃষ্টির আদিলগ্ন থেকে পুরুষের শৌর্যে-বীর্যে প্রবাহিত হচ্ছে পেশীশক্তির অহংকার। পুরুষত্বের সেই অহংকারকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে,নারীরা জয় করেছে সকল প্রতিবন্ধকতার পাহাড়! বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার ফ্যাস্টিবল-২০২১ এর আয়োজনে ১০০ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ৪৩ জন নারীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিলো এমনই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত! জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম পার্বত্য জেলা উন্নয়ন বোর্ড এবং বাংলাদেশ অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন এর যৌথ উদ্দ্যোগে গত ১১ই জানুয়ারি,২০২১ হতে ১৫ই জানুয়ারি, ২০২১ রাঙামাটি জেলার মারী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার ফ্যাস্টিবল-২০২১,এতে ১০০ জন সদস্যকে অংশগ্রহণকারী হিসেবে নির্বাচন করা হয়।
এর মধ্যে ৫০ জন ছিলেন জাতীয় পর্যায়ের ও বাকি ৫০ জন ছিলেন তিন পার্বত্য জেলার স্থানীয় অধিবাসী।আর এই ১০০ জন সদস্যের মধ্যে ৪৩ জন সদস্য মানে প্রায় অর্ধেক সংখ্যা-ই নারীর উপস্থিতি ছিলো এক বিশাল অর্জন।এই ১০০ জন সদস্যকে ৩টি গ্রুপে ভাগ করা হয় এবং তিনটি জেলায় (খাগড়াছড়ি,রাঙামাটি, বান্দরবন)-এ স্থানান্তর করা হয়।তিনটি জেলাতেই থাকে ভিন্ন ভিন্ন আয়োজন এবং চমকপ্রদ সব ইভেন্ট।
সবুজে ঘেরা বন-পাহাড়ের আঁকা- বাকা,উঁচু-নিচু বন্ধুর পথে নারীরাও পুরুষদের সাথে হেঁটে চলেছিলো সমান গতিতে।পাহাড়ের সৌন্দর্যের ফাঁক ফোকরে লুকিয়ে থাকা মৃত্যু ফাঁদ তাদের একদমই দমিয়ে দিতে পারেনি।পূর্ণ উদ্যমে ট্রাকিং,ক্যানিওনিং, ট্রেজার হান্ট,হাইকিং,কায়াকিং,ট্রেইল রান ও রেপলিং,ট্রি টপ একটিভিটি ও জিপ
লাইনিং এর মতো কঠিন শব্দগুলোকেও জয় করেছিলো তারা আত্মবিশ্বাসের সাথে।আর পারবেই বা না কেন? সকলকে দিক নির্দেশনা দেয়ার জন্য সদা প্রস্তুত ছিলো বাংলাদেশ অ্যাডভেঞ্চার ক্লাব এর এক দক্ষ দুঃসাহসিক দল।দলীয় সঠিক ব্যবস্থাপনা আর আন্তরিক সহযোগিতার মাধ্যমেই তাঁরা একটি সফল অ্যাডভেঞ্চার ফ্যাস্টিবল উপহার দিতে সক্ষম হয়েছিলেন।প্রথম দিনের সেই অপরিচিত মুখগুলো ফেরার পূর্বে পরিণত হয়েছিলো একটি পরিবারে! নারী-পুরুষের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ,সহযোগী মনোভাব আর বন্ধুত্বের প্রগাঢ়তায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিলো প্রতিটি অংশগ্রহণকারীর মন।
পরিশেষে,চোখ জুড়ানো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ আর পাহাড়ি জনপ্রতিনিধিদের আতিথিয়তায় সিক্ত হৃদয় নিয়ে ঘরে ফিরেছিলো ওরা একশ জন! পাহাড় জয়ের এই মিছিলে নারীদের পথচলা আরো মসৃণ হোক,উচ্চতার শিখরে পৌছে পাহাড়ের মতোই তারা মাথা উঁচু করে বাঁচুক!!!
লেখক: সহকারী শিক্ষক, সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ।