শুভ জন্মদিন মাশরাফি বিন মর্তুজা

  • Update Time : ০৮:২৫:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ অক্টোবর ২০২০
  • / 315

 বিডি সমাচার ডেস্ক:

আজ ৫ অক্টোবর। বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার জন্মদিন। ৩৬ পেরিয়ে ৩৭ পা দিলেন ম্যাশ। নড়াইলের দুরন্ত সেই কিশোর থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে খেলার স্বপ্ন পূরণ, দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে নিজেকে ভিন্ন ভাবে আবিষ্কার। এখানেই কি শেষ, না। এখন তিনি রাজনীতিতে। করছেন মানুষের সেবা। মাঠের পর এখানেও এক সফল মাশরাফির প্রতিচ্ছবি।

১৯৮৩ সালে আজকের এই দিনটায় মায়ের কোল আলো করে এই ধরনীতে আছেন কৌশিক। ছোট বেলা থেকে দুষ্ট দুরন্ত দুর্বার। স্কুলের ধরাবাঁধা পড়ালেখাতেও ছিলেন তুখোড়। তবে, বাঁধাপড়া জীবনে আটকে রাখতে পারতো না কেউই দুরন্ত কিশোরটিকে। তাই চিত্রা নদীতে তীব্র ঢেউয়ের বিপরীতে দু:সাহসিক সাঁতারের পাল্লা মেতে উঠা কৌশিকের দেখা মিলতো প্রায়ই।

বিকেলে ফুটবলে আর সন্ধ্যায় ব্যাডমিন্টনের নেশা ছিলো। কিন্তু, ধীরে ধীরে ক্রিকেটের প্রতি প্রেম বেড়েছে। প্রথমে ব্যাটিংয়ে আগ্রহ বেশি থাকলেও, কিশোর কৌশিকের বোলিংয়ে গতি ছিলো চমৎকার। পাড়া মহল্লায় দারুণ আলোচিত হন। হই উঠে / এতো অল্প বয়সে কৌশিক নামে ছেলেটির বল চোখে দেখা যায় না। তার খেলা উপভোগে নড়াইলের মাঠে মাঠে মানুষের আগ্রহ থাকতো তুঙ্গে। এভাবেই নড়াইল জয় করে ঢাকায় আগমন ঘটে কৌশিকের।

বয়স ভিত্তি ক্রিকেটের বাঁধা টপকে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অভিষেক ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এরপরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যানভাসে কৌশিক থেকে সবার প্রিয় মাশরাফি বিন মর্তুজা হয়ে উঠা। এরপর কঠিন পথ, সংগ্রাম, ইনজুরির অভিশাপ দল থেকে বাদ পড়া কতো কিছু। যেন সিনেমার গল্পের মতো তার এ জীবন এখন পর্যন্ত। হ্যাঁ, নায়কের মতোই। তবে, ক্যারিয়ারের কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলোই বলি শুনুন।

২০০৯ সালে সর্বশেষ টেস্ট খেলেন। এরপর এলিট ফরম্যাটে আর ফেরা হয়নি। অপয়া ইনজুরির ঈর্ষায়। সাতবার গুরুত্বর অস্ত্রোপচার হয়েছে হাঁটুতে। কিন্তু, অদম্য ইচ্ছা শক্তি আর আত্মবিশ্বাসের কারণেই মাশরাফি ফিরেছেন বার বার। অনেকটা ফিট থাকলেও, ২০১১ বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ পড়েছেন। বুক ছাপা কষ্ট সহ্য করেছেন। তারপরেও দমিয়ে রাখা যায়নি মাশরাফি থেকে হয়ে উঠা সবার প্রিয় ম্যাশকে।

২০১৪ সালে বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব পাওয়ার লাল সবুজের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সাফল্যে এনে দিয়েছেন। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে দুইবার এশিয়া কাপের ফাইনাল ছাড়াও, তার নেতৃত্বেই প্রথম আরাধ্য বহুজাতিক ট্রফি জেতে বাংলাদেশ। ৮৮ ম্যাচে টাইগারদের নেতৃত্ব দিয়ে ৫০ ম্যাচে বাংলাদেশকে বিজয়ের উপলক্ষ্য এনে দিয়েছেন সবার প্রিয় ম্যাশ।

এ বছরের মার্চে অধিনায়কত্ব ছেড়েছেন। কিন্তু, ক্রিকেট এখনো ছাড়েননি। আরও খেলা চালিয়ে যাওয়া ইচ্ছে আছে মাশরাফীর। বর্তমানে নড়াইল -০২ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে সবার আস্থা ভাজন হয়ে উঠেছেন। প্রায় ২০ বছর দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন। বয়স বেড়ে দাঁড়িয়েছে আজ ৩৭ এ। মাঠের ক্রিকেটের মতো রাজনীতির মাঠেও সফল হবার আগাম বার্তা পাওয়ায় যায় মাশরাফির রাজনৈতিক দর্শনে। এমন মাশরাফিরা সফল হেই তো সমৃদ্ধ হয় লাল সবুজের বাংলাদেশ।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


শুভ জন্মদিন মাশরাফি বিন মর্তুজা

Update Time : ০৮:২৫:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ অক্টোবর ২০২০

 বিডি সমাচার ডেস্ক:

আজ ৫ অক্টোবর। বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার জন্মদিন। ৩৬ পেরিয়ে ৩৭ পা দিলেন ম্যাশ। নড়াইলের দুরন্ত সেই কিশোর থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে খেলার স্বপ্ন পূরণ, দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে নিজেকে ভিন্ন ভাবে আবিষ্কার। এখানেই কি শেষ, না। এখন তিনি রাজনীতিতে। করছেন মানুষের সেবা। মাঠের পর এখানেও এক সফল মাশরাফির প্রতিচ্ছবি।

১৯৮৩ সালে আজকের এই দিনটায় মায়ের কোল আলো করে এই ধরনীতে আছেন কৌশিক। ছোট বেলা থেকে দুষ্ট দুরন্ত দুর্বার। স্কুলের ধরাবাঁধা পড়ালেখাতেও ছিলেন তুখোড়। তবে, বাঁধাপড়া জীবনে আটকে রাখতে পারতো না কেউই দুরন্ত কিশোরটিকে। তাই চিত্রা নদীতে তীব্র ঢেউয়ের বিপরীতে দু:সাহসিক সাঁতারের পাল্লা মেতে উঠা কৌশিকের দেখা মিলতো প্রায়ই।

বিকেলে ফুটবলে আর সন্ধ্যায় ব্যাডমিন্টনের নেশা ছিলো। কিন্তু, ধীরে ধীরে ক্রিকেটের প্রতি প্রেম বেড়েছে। প্রথমে ব্যাটিংয়ে আগ্রহ বেশি থাকলেও, কিশোর কৌশিকের বোলিংয়ে গতি ছিলো চমৎকার। পাড়া মহল্লায় দারুণ আলোচিত হন। হই উঠে / এতো অল্প বয়সে কৌশিক নামে ছেলেটির বল চোখে দেখা যায় না। তার খেলা উপভোগে নড়াইলের মাঠে মাঠে মানুষের আগ্রহ থাকতো তুঙ্গে। এভাবেই নড়াইল জয় করে ঢাকায় আগমন ঘটে কৌশিকের।

বয়স ভিত্তি ক্রিকেটের বাঁধা টপকে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অভিষেক ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এরপরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যানভাসে কৌশিক থেকে সবার প্রিয় মাশরাফি বিন মর্তুজা হয়ে উঠা। এরপর কঠিন পথ, সংগ্রাম, ইনজুরির অভিশাপ দল থেকে বাদ পড়া কতো কিছু। যেন সিনেমার গল্পের মতো তার এ জীবন এখন পর্যন্ত। হ্যাঁ, নায়কের মতোই। তবে, ক্যারিয়ারের কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলোই বলি শুনুন।

২০০৯ সালে সর্বশেষ টেস্ট খেলেন। এরপর এলিট ফরম্যাটে আর ফেরা হয়নি। অপয়া ইনজুরির ঈর্ষায়। সাতবার গুরুত্বর অস্ত্রোপচার হয়েছে হাঁটুতে। কিন্তু, অদম্য ইচ্ছা শক্তি আর আত্মবিশ্বাসের কারণেই মাশরাফি ফিরেছেন বার বার। অনেকটা ফিট থাকলেও, ২০১১ বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ পড়েছেন। বুক ছাপা কষ্ট সহ্য করেছেন। তারপরেও দমিয়ে রাখা যায়নি মাশরাফি থেকে হয়ে উঠা সবার প্রিয় ম্যাশকে।

২০১৪ সালে বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব পাওয়ার লাল সবুজের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সাফল্যে এনে দিয়েছেন। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে দুইবার এশিয়া কাপের ফাইনাল ছাড়াও, তার নেতৃত্বেই প্রথম আরাধ্য বহুজাতিক ট্রফি জেতে বাংলাদেশ। ৮৮ ম্যাচে টাইগারদের নেতৃত্ব দিয়ে ৫০ ম্যাচে বাংলাদেশকে বিজয়ের উপলক্ষ্য এনে দিয়েছেন সবার প্রিয় ম্যাশ।

এ বছরের মার্চে অধিনায়কত্ব ছেড়েছেন। কিন্তু, ক্রিকেট এখনো ছাড়েননি। আরও খেলা চালিয়ে যাওয়া ইচ্ছে আছে মাশরাফীর। বর্তমানে নড়াইল -০২ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে সবার আস্থা ভাজন হয়ে উঠেছেন। প্রায় ২০ বছর দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন। বয়স বেড়ে দাঁড়িয়েছে আজ ৩৭ এ। মাঠের ক্রিকেটের মতো রাজনীতির মাঠেও সফল হবার আগাম বার্তা পাওয়ায় যায় মাশরাফির রাজনৈতিক দর্শনে। এমন মাশরাফিরা সফল হেই তো সমৃদ্ধ হয় লাল সবুজের বাংলাদেশ।