বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাকে যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে : শিক্ষামন্ত্রী
- Update Time : ১২:০৯:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ জুলাই ২০২১
- / 223
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, জবি:
বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করে শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা, ইউজিসি সক্ষমতা আইন, শিক্ষা কমিশন নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন। যাতে করে শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা নিয়ে কারো কোনো প্রশ্ন না থাকে। বর্তমানে শিক্ষার মূলনীতি গুলো হলো মূল্যবোধ, নৈতিকতা, দক্ষতা। শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের আমরা এখন কাজ করছি। সেজন্যে বিনামূল্যে বই দেয়া, স্বাক্ষরতা হার বৃদ্ধি, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা, শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ, কারিগরি শিক্ষার, শিক্ষক প্রশিক্ষণ দেয়া নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। করোনার মধ্যে অনলাইনে পাঠদান পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও অনলাইন পাঠদান পদ্ধতি চালু হয়েছে। তাই অনলাইন শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা তৈরি নিয়েও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) অনলাইনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রসায়ন বিভাগের আয়োজনে “জাতিগঠনে শিক্ষার ভূমিকাঃ বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শন ও বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা” শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনিনএসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের জন্যে দলিল হিসেবে সংবিধান দিয়েছেন। সেখানে তার শিক্ষা দর্শন তুলে ধরা আছে। তিনি ড. খুদরত এ খুদার নেতৃত্বে শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু মানবসম্পদ উন্নয়নে, বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শন কে যুগোপযোগী করে আমরা কাজ করছি। বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শন নিয়ে তার কন্যার নেতৃত্বে আমরা কাজ করছি। যখন পাকিস্তান আমাদের ভাষা, শিক্ষার ওপর আঘাত এনেছে তখন বঙ্গবন্ধু সবাইকে নিয়ে তা প্রতিহত করেছেন। বিজ্ঞান, কারিগরি জ্ঞানভিত্তিক এবং জনসংখ্যাকে কিভাবে জনসম্পদে পরিণত করা যায় সেদিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু বলেন, আমাদের শিক্ষা হবে গণমুখী শিক্ষা।
তিনি আরও বলেন, টিকা দিয়ে শিক্ষার্থীদের দ্রুত ক্যাম্পাসে ফিরাতে আমরা চেষ্টা করছি। প্রতিটি উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল তৈরি হচ্ছে। এগুলো থেকে প্রদত্ত ডিগ্রির সার্টিফিকেট গুলো সমমানের প্রতিষ্ঠানে কাজে লাগাতে পারে সে চেষ্টা চলছে। আইসিটি স্কিল, ভাষার শিক্ষা, বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার নিয়ে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বিদেশি ভাষা ( ইংরেজি) এখন টুল হয়ে গেছে। কমিউনিকেশন স্কিল, কোলাবোরেশান স্কিল, ক্রিটিকাল থিঙ্কিং স্কিল গুলো অর্জন করা প্রয়োজন। জ্ঞানের প্রয়োগ দিকটা নিয়ে আমরা ভাবি না। শিক্ষার প্রায়োগিক দিকটা নিয়ে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। শুধু স্কিল অর্জন করলে কাজ শেষ নয়। দক্ষ মানুষ হওয়ার পাশাপাশি আমাদেরকে মানবিক মানুষ হতে হবে। আমাদের কে শুধু শিক্ষার্থীদেরকে জ্ঞান অর্জন করার সহায়তা করলে হবে না। তাদেরকে চাকরির জন্যে উপযুক্ত করে তুলতে হবে। সেজন্যে শিক্ষকদেরকে আরো মনোযোগী হতে হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থার বর্তমানে বেহাল দশা।বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দুর্নীতি ও গবেষণা চুরি অহরহ। কিছু শিক্ষক আছেন তারা শুধু অধ্যাপক হওয়ার জন্য যে কয়টা গবেষণা দরকার শুধু সে কয়টা গবেষণা করেন। পরবর্তীতে আর একটি গবেষণাও করেন না। তাদের কাছে গবেষণা একটি বিলাসিতা। এমন শিক্ষকদের কাছ থেকে আমাদের শিক্ষার্থীরা কি শিখবেন?
ওয়েবিনারে অংশগ্রহণকৃত সকলকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে সভাপতির বক্তব্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, ৭ই মার্চে পর বঙ্গবন্ধুর ভাষণই ছিলো বাংলাদেশের শাসন। বঙ্গবন্ধু তার দর্শন দিয়ে যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশকে নতুন করে সাজিয়েছেন। শিক্ষা সংক্রান্ত, পরিবেশ, কৃষি, গবেষণা নিয়ে বঙ্গবন্ধু আইন প্রণয়ন করেছিলেন। তিনি আমাদের জন্যে দলিল হিসেবে সংবিধান দিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার এক্সিলেন্সের জন্যে সহায়তা কামনা করেন।
আলোচক হিসেবে ওয়েবিনারে উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি’র সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান, বিশেষ অতিথি হিসেবে ট্রেজারার কামালউদ্দিন আহমেদ এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম।
এছাড়া ওয়েবিনারে অধ্যাপক ড. সুব্রত চন্দ্র রায় ও অধ্যাপক ড. নাফিস আহমেদ সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শামছুন নাহার, ওয়েবিনার কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দ আলম প্রমুখ।