স্ত্রীকে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিলেন স্বামী!

  • Update Time : ০৬:১৩:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ জুলাই ২০২১
  • / 220
নিজস্ব প্রতিবেদক:

মৌলভীবাজার বড়লেখায় রহিমা বেগম (২০) নামে এক গৃহবধূকে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে স্বামী ও শ্বাশুড়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় গৃহবধূর হাত-মুখসহ শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশের উপর পুড়ে গেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় গৃহবধূরকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ রবিবার (০৪ জুলাই) ভোরে বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের রফিক উদ্দিনের মেয়ে রহিমা বেগমের সঙ্গে প্রায় তিন বছর আগে একই ইউনিয়নের আরেঙ্গাবাদ গ্রামের মুকুল মিয়ার ছেলে শিপন আহমদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রহিমার সঙ্গে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজনের ঝগড়া হতো। এতে স্বামী ও তার স্বজনরা রহিমাকে নির্যাতন করতো।

বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কয়েকবার সমাধান করে দিলেও কোনো লাভ হয়নি। এরপরও তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকতো। স্বামী ও তার স্বজনদের নির্যাতন সইতে না পেরে প্রায় সাতমাস আগে এক সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি হরিপুর গ্রামে চলে যায় রহিমা। সন্তানকে দেখার সুযোগে শ্বশুর বাড়িতে আসতেন রহিমার স্বামী শিপন আহমদ।

শনিবার (০৩ জুলাই) স্বামী শিপন সন্তানকে দেখতে শ্বশুর বাড়িতে যান। সেখানে রাত্রিযাপন করেন শিপন। রবিবার ভোর পাঁচটার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী রহিমা বেগমের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় স্বামী শিপন। ঘটনার পরই তিনি শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে যান। রহিমার চিৎকার শুনে স্বজনরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এদিকে এ ঘটনায় রবিবার বিকেলে স্বামী শিপন আহমদ ও শ্বাশুড়ীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার ডা. মো ফয়জুল ইসলাম বলেন, সকাল সাতটার দিকে রহিমা বেগমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তার হাত-মুখসহ শরীরের ৫০ শতাংশের ওপরে পুড়ে গেছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছে। এ ঘটনায় রহিমার ভাই রাজীব আহমেদ বাদী হয়ে স্বামীসহ ৩জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। অভিযুক্ত স্বামী ও শ্বাশুড়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media


স্ত্রীকে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিলেন স্বামী!

Update Time : ০৬:১৩:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ জুলাই ২০২১
নিজস্ব প্রতিবেদক:

মৌলভীবাজার বড়লেখায় রহিমা বেগম (২০) নামে এক গৃহবধূকে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে স্বামী ও শ্বাশুড়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় গৃহবধূর হাত-মুখসহ শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশের উপর পুড়ে গেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় গৃহবধূরকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ রবিবার (০৪ জুলাই) ভোরে বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের রফিক উদ্দিনের মেয়ে রহিমা বেগমের সঙ্গে প্রায় তিন বছর আগে একই ইউনিয়নের আরেঙ্গাবাদ গ্রামের মুকুল মিয়ার ছেলে শিপন আহমদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রহিমার সঙ্গে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজনের ঝগড়া হতো। এতে স্বামী ও তার স্বজনরা রহিমাকে নির্যাতন করতো।

বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কয়েকবার সমাধান করে দিলেও কোনো লাভ হয়নি। এরপরও তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকতো। স্বামী ও তার স্বজনদের নির্যাতন সইতে না পেরে প্রায় সাতমাস আগে এক সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি হরিপুর গ্রামে চলে যায় রহিমা। সন্তানকে দেখার সুযোগে শ্বশুর বাড়িতে আসতেন রহিমার স্বামী শিপন আহমদ।

শনিবার (০৩ জুলাই) স্বামী শিপন সন্তানকে দেখতে শ্বশুর বাড়িতে যান। সেখানে রাত্রিযাপন করেন শিপন। রবিবার ভোর পাঁচটার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী রহিমা বেগমের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় স্বামী শিপন। ঘটনার পরই তিনি শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে যান। রহিমার চিৎকার শুনে স্বজনরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এদিকে এ ঘটনায় রবিবার বিকেলে স্বামী শিপন আহমদ ও শ্বাশুড়ীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার ডা. মো ফয়জুল ইসলাম বলেন, সকাল সাতটার দিকে রহিমা বেগমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তার হাত-মুখসহ শরীরের ৫০ শতাংশের ওপরে পুড়ে গেছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছে। এ ঘটনায় রহিমার ভাই রাজীব আহমেদ বাদী হয়ে স্বামীসহ ৩জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। অভিযুক্ত স্বামী ও শ্বাশুড়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।