জুমআর নামাজের নির্দেশনা ও এ দিনের বিশেষ আমল
- Update Time : ১২:১১:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুন ২০২১
- / 200
সপ্তাহের সেরা মহিমান্বিত দিন ‘ইয়াওমুল জুমআ’। আল্লাহ তাআলার কাছে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ দিন এটি। কুরআন-সুন্নাহর বর্ণনায়ও ওঠে এসেছে জুমআর দিনের অপরিসীম গুরুত্ব ও তাৎপর্য। এ দিনটির রয়েছে বিশেষ কিছু আমল। সেই আমলগুলো কী?
আল্লাহ তাআলা জুমআর দিনের করণীয় ও প্রাপ্তি বর্ণনায় একটি স্বতন্ত্র সুরাই নাজিল করেছেন। এ সুরাটির নাম দিয়েছে সুরাতুল জুমআ। এ সুরায় জুমআর নামাজ পড়ার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِي لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
হে মুমিনগণ! জুমআর দিনে যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে দ্রুত (মসজিদে) ছুটে যাও। আর বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ।’ (সুরা জুমআ : আয়াত ৯)
জুমআর নামাজ আদায়ের পর কী করণীয়। এ সম্পর্কেও মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন-
فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِن فَضْلِ اللَّهِ وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيراً لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
অতঃপর (জুমআর) নামাজ শেষ হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ [সুরা জুমআ : আয়াত ১০)
জুমআর দিনের বিশেষ আমল
সপ্তাহের সেরা দিন জুমআর আগে ও পরে এমন অনেক আমল আছে যা পালন করা সহজ আর এতে সাওয়াব অনেক বেশি। হাদিসের বর্ণনায় প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা তুলে ধরেছেন এভাবে-
‘যে ব্যক্তি জুমআ দিন গোসল করল, আগে আগে মসজিদে গেল, বাহনে না চড়ে পায়ে হেঁটে মসজিদে গেল, ইমামের কাছাকাছি বসল, মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনল, কোনো অনর্থক কথা বা কাজ করল না, আল্লাহ তাআলা তাকে প্রতি কদমে এক বছরের নফল রোজা ও নামাজের সওয়াব দান করবেন।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি)
এছাড়াও জুমআর দিনের আরও বিশেষ আমল হলো-
১. জুমআর দিন ফজরের ফরজ নামাজে সুরা সাজদা ও সুরা দাহর/ইনসান তেলাওয়াত করা।
২. জুমআর দিন ভালোভাবে গোসল করা।
৩. সবচেয়ে উত্তম পোশাক পরা।
৪. সুগন্ধি ব্যবহার করা (যদি থাকে)।
৫. জুমআর নামাজের জন্য সবার আগে মসজিদে যাওয়ার চেষ্টা করা।
৬. সম্ভব হলে পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া।
৭. জুমআর দিন সুরা কাহফ তেলাওয়াত করা। পুরো সুরা পড়তে না পারলেও প্রথম ও শেষ ১০ আয়াত তেলাওয়াত করা।
৮. মসজিদে গিয়ে দুখুলুল মসজিদ ২ রাকাআত নামাজ পড়ে বসা। অনেকে কমপক্ষে ৪ রাকাআত সুন্নাত পড়ার ওপর জোর দিয়েছেন।
৯. জুমআর নামাজে ইমামের কাছাকাছি গিয়ে বসা।
১০. মনোযোগ সহকারে খুতবা শোনা এবং খুতবা চলাকালীন চুপ থাকা আবশ্যক। কেউ মসজিদে কথা বললে ‘চুপ করুন‘ এ কথাও না বলা।
১১. দুই খুতবার মাঝের সময়ে বেশি বেশি দোয়া করা এবং জুমআর দিনের অন্য সময়ও দোয়া করা। কারণ এদিনে দোয়া কবুল হয়।
১২, জুমআর দিন ও জুমআর রাতে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা।
১৩. জুমআর দিন আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়ে ৮০ বার দরূদ পড়া, তাওবাহ-ইসতেগফার পড়া এবং আসরের নামাজ পড়ে মাগরিবের নামাজের জন্য মসজিদে অবস্থান করেই অপেক্ষা করা। মাগরিবের আজানের আগে দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে রোনাজারি ও ক্ষমা প্রার্থনা করা। এ সময় মহান আল্লাহর কোনো আবেদনই ফেরত দেন না।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমআর দিনের বিশেষ আমলে দিনটি অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।