নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ডাকা হরতালে নাশকতার একটি মামলায় হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের আরও তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার (১৭ মে) দুপুরে ভার্চু্য়াল কোর্টে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা ফেরদৌসের আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ড শুনানিতে রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান এবং মামুনুল হকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক নয়ন।

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সিদ্ধিরগঞ্জে হরতালে নাশকতার ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় হেফাজত নেতা মামুনুল হককে গ্রেফতার দেখিয়ে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে পিবিআই। আদালত শুনানি শেষে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এর আগে সোনারগাঁ থানায় দায়ের করা কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীর ধর্ষণ ও সহিংসতার চারটিসহ মোট পাঁচটি মামলায় (১২ মে) মামুনুল হকের বিরুদ্ধে তিনদিন করে মোট ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।’

আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যে কয়টি মামলায় রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে তার কোনোটিতেই এখনো মামুনুল হককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নারায়ণগঞ্জে নিয়ে আসা হয়নি। কারণ ঢাকায় বিভিন্ন মামলায় মামুনুল হক পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রয়েছেন। সেখানের কার্যক্রম শেষ হলে তাকে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে আসা হবে এবং রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল আলম জানান, প্রত্যেক মামলার তদন্তকারী অফিসার যেহেতু ভিন্ন সেহেতু একজন করে তদন্তকারী অফিসার মামুনুল হককে তিনদিন করে জিজ্ঞাসাবাদের সময় পাবেন।

উল্লেখ্য, গত ৩০ এপ্রিল প্রলোভন, প্রতারণা, নির্যাতনের অভিযোগ এনে হেফাজতে ইসলামের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলা করেন তার দাবি করা দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণা।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিবিরোধী আন্দোলনের নামে রাজধানী ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হাটহাজারীতে বেপরোয়া তাণ্ডবের পর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রিসোর্টকাণ্ডে মামুনুল হককে নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাণ্ডবের অভিযোগে একে একে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেফতার করতে থাকে।

এরই ধারাবাহিকতায় মাওলানা মামুনুল হককে গত ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

২০২০ সালে দায়ের হওয়া মোহাম্মদপুর থানার একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পল্টন ও মতিঝিল থানার পৃথক দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় তাকে।