এবছর প্রায় ৫ হাজার ৮০০ কৃষিযন্ত্র বিতরণ করা হবে

  • Update Time : ০৪:১৬:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল ২০২১
  • / 279
নিজস্ব প্রতিবেদক:
কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে, কৃষি উন্নয়নে ও খামার যান্ত্রিকীকরণে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করবে বলে মন্তব্য করেছেন, কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি।
.
তিনি বলেন, ১০-১৫ বছর আগেও বাংলাদেশের কৃষি ছিল সনাতন পদ্ধতির। চাষাবাদ, মাড়াইসহ সব কাজ মানুষকে শারীরিকভাবে করতে হতো। লাঙলে চাষ হতো। এখন যন্ত্রের মাধ্যমে জমি চাষ ও ফসল মাড়াই হচ্ছে। কিন্তু ধান কাটা ও রোপণ মানুষকে করতে হচ্ছে। এতে ফসল উৎপাদনে খরচ অনেক বেশি ও সময় সাপেক্ষ। সেজন্য বর্তমান সরকার ২০০৯ সাল থেকে গত ১২ বছর ধরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ৩ হাজার ২০ কোটি টাকার ‘কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’ প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে ৫০% ও হাওর-উপকূলীয় এলাকায় ৭০% ভর্তুকিতে কৃষকদেরকে কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হচ্ছে।
.
এ প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষিতে নতুন অধ্যায় সূচিত হলো। কৃষি যান্ত্রিকীকরণে বিপ্লব ঘটবে। বাংলাদেশের কৃষিও পশ্চিমা বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশের কৃষির মতো উন্নত ও আধুনিক হবে।
.
কৃষিমন্ত্রী মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে অনলাইনে ‘কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’ প্রকল্পের আওতায় সারা দেশে কৃষকের মাঝে ‘কম্বাইন হারভেস্টার, রিপারসহ বিভিন্ন কৃষিযন্ত্র’ বিতরণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে কৃষিতে সরকারের মূল লক্ষ্য হলো কৃষিকে আধুনিকায়ন ও লাভজনক করা।
.
কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে কৃষিকে আধুনিকায়ন ও লাভজনক করতে সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। এই প্রকল্প হলো তার অনন্য উদাহরণ। এর মাধ্যমে কৃষি লাভজনক হবে ও গ্রামীণ মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে বলে আশা করা যায়।
.
উল্লেখ্য, ৩ হাজার ২০ কোটি টাকার ‘কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২০ -২১ অর্থবছর থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রায় ৫২ হাজার কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ করা হবে। চলমান ২০২০-২১ অর্থবছরে এ প্রকল্পের অধীনে সারা দেশে ৫০০টি উপজেলায় ১৬১৭টি কম্বাইন হারভেস্টার, ৭০১টি রিপার, ১৮৪টি রাইস ট্রান্সপ্লান্টারসহ মোট ৫ হাজার ৭৭৬টি বিভিন্ন ধরণের কৃষিযন্ত্র কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হবে। এর মধ্যে হাওরে ধান সফলভাবে কাটার জন্য ৫১০টি কম্বাইন হারভেস্টার ও ২৩১টি রিপার বিতরণ করা হচ্ছে।
.
অনুষ্ঠানে নেত্রকোনা থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন ও কৃষিযন্ত্র বিতরণ করেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো: আশরাফ আলী খান খসরু এমপি।
.
মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) ড. মো: আবদুর রৌফ, অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি) মো: রুহুল আমিন তালুকদার, অতিরিক্ত সচিব (সার ব্যবস্থাপনা ও উপকরণ) মোঃ মাহবুবুল ইসলাম, মহাপরিচালক (বীজ) বলাই কৃষ্ণ হাজরা, অতিরিক্ত সচিব (নিরীক্ষা) মোঃ আব্দুল কাদের এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আসাদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
.
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইড় থেকে যুক্ত হন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক মনিরুল আলম ও প্রকল্প পরিচালক বেনজীর আলম।
.
এছাড়া, ১৩টি কৃষি অঞ্চলের ১৩টি উপজেলা থেকে প্রায় ৫ শতাধিক কর্মকর্তা ও কৃষক ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন। সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো: আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার কৃষিতে বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে। এর ফলেই কৃষিতে আজকের সাফল্য অর্জিত হয়েছে। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে।
.
তিনি আরও বলেন, গত বছর সরকার দ্রুততার সাথে ভর্তুকির মাধ্যমে ধান কাটার যন্ত্র দিয়েছিল, ফলে হাওরের ধান সফলভাবে ঘরে তোলা সম্ভব হয়েছিল। সরকার এ বছরও কম্বাইন হারভেস্টার, রিপারসহ ধান কাটার যন্ত্র বিতরণ করছে। আশা করি, এবারও সফলভাবে ধান ঘরে তোলা যাবে।
.
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আসাদুল্লাহ তাঁর বক্তব্যে জানান, ৪৮ লাখ হেক্টর জমির বোরো ধানের পুরোটা যন্ত্র দিয়ে কাটতে পারলে ৫ হাজার ২৭১ কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব হতো।

Please Share This Post in Your Social Media


এবছর প্রায় ৫ হাজার ৮০০ কৃষিযন্ত্র বিতরণ করা হবে

Update Time : ০৪:১৬:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল ২০২১
নিজস্ব প্রতিবেদক:
কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে, কৃষি উন্নয়নে ও খামার যান্ত্রিকীকরণে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করবে বলে মন্তব্য করেছেন, কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি।
.
তিনি বলেন, ১০-১৫ বছর আগেও বাংলাদেশের কৃষি ছিল সনাতন পদ্ধতির। চাষাবাদ, মাড়াইসহ সব কাজ মানুষকে শারীরিকভাবে করতে হতো। লাঙলে চাষ হতো। এখন যন্ত্রের মাধ্যমে জমি চাষ ও ফসল মাড়াই হচ্ছে। কিন্তু ধান কাটা ও রোপণ মানুষকে করতে হচ্ছে। এতে ফসল উৎপাদনে খরচ অনেক বেশি ও সময় সাপেক্ষ। সেজন্য বর্তমান সরকার ২০০৯ সাল থেকে গত ১২ বছর ধরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ৩ হাজার ২০ কোটি টাকার ‘কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’ প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে ৫০% ও হাওর-উপকূলীয় এলাকায় ৭০% ভর্তুকিতে কৃষকদেরকে কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হচ্ছে।
.
এ প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষিতে নতুন অধ্যায় সূচিত হলো। কৃষি যান্ত্রিকীকরণে বিপ্লব ঘটবে। বাংলাদেশের কৃষিও পশ্চিমা বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশের কৃষির মতো উন্নত ও আধুনিক হবে।
.
কৃষিমন্ত্রী মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে অনলাইনে ‘কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’ প্রকল্পের আওতায় সারা দেশে কৃষকের মাঝে ‘কম্বাইন হারভেস্টার, রিপারসহ বিভিন্ন কৃষিযন্ত্র’ বিতরণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে কৃষিতে সরকারের মূল লক্ষ্য হলো কৃষিকে আধুনিকায়ন ও লাভজনক করা।
.
কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে কৃষিকে আধুনিকায়ন ও লাভজনক করতে সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। এই প্রকল্প হলো তার অনন্য উদাহরণ। এর মাধ্যমে কৃষি লাভজনক হবে ও গ্রামীণ মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে বলে আশা করা যায়।
.
উল্লেখ্য, ৩ হাজার ২০ কোটি টাকার ‘কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২০ -২১ অর্থবছর থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রায় ৫২ হাজার কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ করা হবে। চলমান ২০২০-২১ অর্থবছরে এ প্রকল্পের অধীনে সারা দেশে ৫০০টি উপজেলায় ১৬১৭টি কম্বাইন হারভেস্টার, ৭০১টি রিপার, ১৮৪টি রাইস ট্রান্সপ্লান্টারসহ মোট ৫ হাজার ৭৭৬টি বিভিন্ন ধরণের কৃষিযন্ত্র কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হবে। এর মধ্যে হাওরে ধান সফলভাবে কাটার জন্য ৫১০টি কম্বাইন হারভেস্টার ও ২৩১টি রিপার বিতরণ করা হচ্ছে।
.
অনুষ্ঠানে নেত্রকোনা থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন ও কৃষিযন্ত্র বিতরণ করেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো: আশরাফ আলী খান খসরু এমপি।
.
মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) ড. মো: আবদুর রৌফ, অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি) মো: রুহুল আমিন তালুকদার, অতিরিক্ত সচিব (সার ব্যবস্থাপনা ও উপকরণ) মোঃ মাহবুবুল ইসলাম, মহাপরিচালক (বীজ) বলাই কৃষ্ণ হাজরা, অতিরিক্ত সচিব (নিরীক্ষা) মোঃ আব্দুল কাদের এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আসাদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
.
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইড় থেকে যুক্ত হন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক মনিরুল আলম ও প্রকল্প পরিচালক বেনজীর আলম।
.
এছাড়া, ১৩টি কৃষি অঞ্চলের ১৩টি উপজেলা থেকে প্রায় ৫ শতাধিক কর্মকর্তা ও কৃষক ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন। সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো: আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার কৃষিতে বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে। এর ফলেই কৃষিতে আজকের সাফল্য অর্জিত হয়েছে। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে।
.
তিনি আরও বলেন, গত বছর সরকার দ্রুততার সাথে ভর্তুকির মাধ্যমে ধান কাটার যন্ত্র দিয়েছিল, ফলে হাওরের ধান সফলভাবে ঘরে তোলা সম্ভব হয়েছিল। সরকার এ বছরও কম্বাইন হারভেস্টার, রিপারসহ ধান কাটার যন্ত্র বিতরণ করছে। আশা করি, এবারও সফলভাবে ধান ঘরে তোলা যাবে।
.
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আসাদুল্লাহ তাঁর বক্তব্যে জানান, ৪৮ লাখ হেক্টর জমির বোরো ধানের পুরোটা যন্ত্র দিয়ে কাটতে পারলে ৫ হাজার ২৭১ কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব হতো।