কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রয়োগে ৮৪ ডাক্তার-নার্সকে প্রশিক্ষণ প্রদান
- Update Time : ০৬:০১:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২১
- / 162
নিজস্ব প্রতিনিধি:
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন এলাকায় করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) ভ্যাকসিন প্রয়োগের লক্ষে ৮৪ জন ডাক্তার ও নার্সকে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)।
.
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল ১০.০০টা থেকে নগর ভবনের মেয়র হানিফ অডিটোরিয়ামে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদান সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের আয়োজন করে ডিএসসিসি।
.
প্রশিক্ষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং মুগদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ৩০ জন ডাক্তার ও ৫৪ জন নার্সকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রয়োগ সংক্রান্ত এই প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
.
দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ডা. ফজলে শামসুল কবির ও ডা. নিশাত পারভীন প্রশিক্ষণের প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দুজনেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রশিক্ষিত জাতীয় প্রশিক্ষক (মাস্টার ট্রেইনার) হিসেবে ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
.
.
প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, বৈশ্বিক মহামারীর শুরু থেকেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের নির্দেশনা ও নেতৃত্বে কর্পোরেশন জনগণের পাশে থেকে এই দুর্যোগ মোকাবিলায় কাজ করে চলেছে। লকডাউন বাস্তবায়ন থেকে শুরু করে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষকে সহযোগিতা এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল বিষয়ে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করে চলেছেন। সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় করোনা মহামারী মোকাবিলায় আমরা লক্ষণীয় সাফল্য পেয়েছি।
.
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করার আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, আমরা আশাবাদী, এই ভ্যাকসিন কার্যক্রমেও মেয়র মহোদয়ের নেতৃত্বে আমরা সফল হব।
.
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. শরীফ আহমেদ বলেন, সব ভ্যাকসিনের একটি ছোটখাটো প্বার্শপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। সবার শরীরে টিকার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সমানও হয় না, কারো কারো হতে পারে। এই টিকা নেওয়ার পর কারো যদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়, সেই বিষয়ে আমাদের পরবর্তী ব্যবস্থাপনা কি হবে – সে বিষয়ে আমরা আজকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। যে সকল হাসপাতালে এই ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হবে সেসব হাসপাতালের চিকিৎসকবৃন্দ, নার্সগণ – এই বিষয়ে প্রশিক্ষিত হবেন এবং টিকা প্রয়োগের পর কোন পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হয়ে থাকলে, সে বিষয়ে তারা কোন ধরনের ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করবেন – সেসব বিষয় নিয়েই আমাদের আজকের এই প্রশিক্ষণ।আপনাদের মাধ্যমে এটা জানাতে চাই যে, আপনারা জনগণকে উদ্বুদ্ধ করুন। জনসাধারণ যাতে পর্যায়ক্রমে এই ভ্যাকসিন নিতে পারেন এবং কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ যুদ্ধে যেন আমরা জয়ী হতে পারি।
.
প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মধ্যে কোভিড-১৯ এর সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ২০ নম্বর অবস্থানে আছে। আশা করছি, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রয়োগেও আমরা নজির স্থাপন করব। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং আগামী দিনে এই ভ্যাকসিন কার্যক্রম সুচারুভাবে সফল করার বিষয়েও আমরা আশাবাদী।
.
এ সময় ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে গুজব প্রতিরোধ করা সকলের দায়িত্ব এবং এ বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতা কামনা করে ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, ভ্যাকসিন নিয়ে অহেতুক গুজব প্রতিরোধ করার দায়িত্ব আপনাদের, আমাদের, সবার। কারণ, এটা একটা ভ্যাকসিন। মানুষের ভালোর জন্য ভ্যাকসিন প্রয়োগের লক্ষে আমরা দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। যাতে করে এই কার্যক্রমকে সুষ্টু-সুন্দরভাবে শেষ করতে পারি।
.
এ বিষয়ে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করি। ভ্যাকসিন কার্যক্রমে সিটি কর্পোরেশনের ভূমিকা কি, কারা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, এক দিনের প্রশিক্ষণ পর্যাপ্ত কিনা – এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় যে সকল ভ্যাকসিন টিম হবে, সেসব টিমকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষে আমাদের দুজন ডাক্তার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রশিক্ষিত জাতীয় শিক্ষক হিসেবে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। তারাই আজকের এই প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন। আর এটা বড় কোনো জটিল কোন বিষয় না। তাই এ বিষয়ে একদিনের প্রশিক্ষণই আমি মনে করি গুড এনাফ। কারণ, এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ জটিল কোন পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা হচ্ছে না, এই ভ্যাকসিনটা মাংসপেশিতে দেওয়া হবে।ইতোমধ্যে ইপিআই ভ্যাকসিন দিয়ে বিশ্বে আমরা নজির স্থাপন করেছি, আমাদের ডাক্তার-নার্সদের এ বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা আছে। আশা করি, এর মাধ্যমেই আমরা সফলকাম হব।
.
.
উল্লেখ্য যে, আগামী ২৭ জানুয়ারি করোনা ভ্যাকসিন কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপরের দিন অর্থাৎ ২৮ জানুয়ারি থেকে ঢাকা মহানগরীর পাঁচটি মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হবে। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং মুগদা মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত এলাকা বিধায় সংশ্লিষ্ট মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ জন ডাক্তার ও ৫৪ জন নার্সকে এই প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
.
প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। এই ভ্যাকসিন দুটি ডোজে দেওয়া হবে। পয়েন্ট ফাইভ মিলিলিটার একটা ডোজ, তার আট সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে।
Tag :