করোনা সঙ্কটেও বিএনপি নেতারা দেশবিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত: ওবায়দুল কাদের

  • Update Time : ০৬:১৪:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুলাই ২০২০
  • / 131
বিশেষ প্রতিনিধি:
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, বিএনপি দেশে ও বিদেশে যে ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাসী তা আবারও প্রমাণিত হয়েছে। করোনার বৈশ্বিক এ সঙ্কটেও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন না করে বিএনপি নেতারা দেশবিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত। মিথ্যাচারের ঢোলক বাজিয়ে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করাই তাদের রাজনীতি।

রবিবার সংসদ ভবনের তাঁর সরকারী বাসভবন থেকে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত এক অনলাইন ভিডিও বার্তায় ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করেন, সরকারের বিরোধিতা করতে গিয়ে বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে নেমেছে। দেশের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। এসব কারণে দলটি দিন-দিন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং রাজনীতিতে অপ্রাষঙ্গিক হয়ে পড়েছে।

বিএনপির এক নেতার ইতালিতে দেশবিরোধী প্রদত্ত বক্তব্যে প্রবাসীদের বিক্ষুব্ধ করেছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একটি অনলাইন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখলাম ইতালির বিএনপির সাবেক সভাপতি দেশের গণমাধ্যমকে দেয়া দেশবিরোধী অসত্য বক্তব্যে প্রবাসীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী ওই বিএনপি নেতা সাক্ষাতকারে বলেছেন বাংলাদেশে নাকি দশ লাখ লোক আক্রান্ত! কোন চিকিৎসা নেই দেশে। ১০ হাজার মানুষ ইতালির পথে রয়েছে। যারা ইতালি যাচ্ছে এবং তাদের সবার কাছে নাকি ভুয়া রিপোর্ট আছে! আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশকে ছোট করা।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘লাখ-লাখ প্রবাসীদের অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলে দিতে ইতালির গণমাধ্যমকে এমন অসত্য তথ্যমূলক প্রদত্ত বক্তব্যে ওখানকার প্রবাসীরা ক্ষুব্ধ। বিএনপি নেতার ভিডিও ইতালির লেগা নর্দ দলের নেতা মাতেও সালভিনি তাঁর ফেসবুকে শেয়ার করেছেন বলে ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে।’

বাংলাদেশী নাগরিকদের বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে সরকার নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদেশ ভ্রমণের পূর্বে সরকার নির্ধারিত ষোলটি প্রতিষ্ঠান থেকে করোনার সনদ গ্রহণ করতে হবে। নির্ধারিত প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষা করানোর জন্য বিদেশগামী ভাই-বোনদের আমি অনুরোধ করছি। তিনি বলেন, আমাদের কিছুসংখ্যক জনশক্তির অবহেলা এবং তথ্য গোপনের ফলে ২/৩টি দেশে অবস্থানরত প্রবাসীরা অস্বস্তিতে পড়েছে। এমন অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি আমরা চাই না।

সাম্প্রতিক সময়ে করোনা সংক্রমণ বিষয়ে মানুষের ভীতি কমে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে করোনা সংক্রমণ বিষয়ে জন-মানুষের মাঝে ভয়ভীতি কমে গেছে। নমুনা পরীক্ষা সংখ্যাগত বিচারে কমেছে। কিন্তু জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা, লক্ষণ ও সংক্রমণ লুকিয়ে অনেকে চলাফেরা করছেন কিন্তু পরীক্ষা করাচ্ছেন না। অপরদিকে নমুনার সংখ্যা কমলেও আক্রান্তের হার শতকরা হিসেবে বাড়ছে।

দরিদ্রদের বিনামূল্যে নমুনা পরীক্ষার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, অনেকে মনে করছেন অসহায় দরিদ্র মানুষকে ফি দিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে বলে নমুনা পরীক্ষা থেকে দূরে থাকছে। করোনার অভিঘাতে অনেক মানুষ এখনও কর্মহীন অসহায়। দরিদ্র মানুষের আর্থিক অক্ষমতার কথা বিবেচনা করে ফি ছাড়া পরীক্ষার সুযোগ প্রদানের বিষয়টি বিবেচনার জন্য আমি সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, নমুনা পরীক্ষায় আগ্রহ যেমন কমেছে, তেমনি দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার কারণে কারও কারও আস্থা কমতে পারে। এছাড়া কোথাও কোথাও নমুনা সংগ্রহের পর রেজাল্ট জানাতে দীর্ঘ সময় নিচ্ছে ল্যাবগুলো।এতে মানুষের মাঝে আস্থাহীনতা তৈরি হতে পারে, যা শুভ লক্ষণ নয়। তিনি কার্যকর সমন্বয়ের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার ফল দেয়া প্রক্রিয়ায় গতি আনতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।

বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মকর্তাদের বেতন প্রদানে পরিচালনা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সারাদেশে বিভিন্ন স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাখ-লাখ শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত। সরকারী ও এমপিওভুক্ত ছাড়াও বিশাল একটি অংশ বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত। এ সকল শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রতিষ্ঠান থেকে দেয়া হয়। এ সঙ্কটকালে প্রধানমন্ত্রী তাঁদের কথা মনে রেখে ইতোমধ্যে অনুদান দিয়েছেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানসমূহ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় শিক্ষক-কর্মচারী কষ্টকর জীবন যাপন করছেন। এ অবস্থায় তিনি বেসরকারী ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত কিংবা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার পরিচালনা সংশ্লিষ্টদের কষ্ট করে হলেও শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


করোনা সঙ্কটেও বিএনপি নেতারা দেশবিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত: ওবায়দুল কাদের

Update Time : ০৬:১৪:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুলাই ২০২০
বিশেষ প্রতিনিধি:
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, বিএনপি দেশে ও বিদেশে যে ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাসী তা আবারও প্রমাণিত হয়েছে। করোনার বৈশ্বিক এ সঙ্কটেও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন না করে বিএনপি নেতারা দেশবিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত। মিথ্যাচারের ঢোলক বাজিয়ে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করাই তাদের রাজনীতি।

রবিবার সংসদ ভবনের তাঁর সরকারী বাসভবন থেকে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত এক অনলাইন ভিডিও বার্তায় ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করেন, সরকারের বিরোধিতা করতে গিয়ে বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে নেমেছে। দেশের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। এসব কারণে দলটি দিন-দিন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং রাজনীতিতে অপ্রাষঙ্গিক হয়ে পড়েছে।

বিএনপির এক নেতার ইতালিতে দেশবিরোধী প্রদত্ত বক্তব্যে প্রবাসীদের বিক্ষুব্ধ করেছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একটি অনলাইন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখলাম ইতালির বিএনপির সাবেক সভাপতি দেশের গণমাধ্যমকে দেয়া দেশবিরোধী অসত্য বক্তব্যে প্রবাসীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী ওই বিএনপি নেতা সাক্ষাতকারে বলেছেন বাংলাদেশে নাকি দশ লাখ লোক আক্রান্ত! কোন চিকিৎসা নেই দেশে। ১০ হাজার মানুষ ইতালির পথে রয়েছে। যারা ইতালি যাচ্ছে এবং তাদের সবার কাছে নাকি ভুয়া রিপোর্ট আছে! আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশকে ছোট করা।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘লাখ-লাখ প্রবাসীদের অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলে দিতে ইতালির গণমাধ্যমকে এমন অসত্য তথ্যমূলক প্রদত্ত বক্তব্যে ওখানকার প্রবাসীরা ক্ষুব্ধ। বিএনপি নেতার ভিডিও ইতালির লেগা নর্দ দলের নেতা মাতেও সালভিনি তাঁর ফেসবুকে শেয়ার করেছেন বলে ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে।’

বাংলাদেশী নাগরিকদের বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে সরকার নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদেশ ভ্রমণের পূর্বে সরকার নির্ধারিত ষোলটি প্রতিষ্ঠান থেকে করোনার সনদ গ্রহণ করতে হবে। নির্ধারিত প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষা করানোর জন্য বিদেশগামী ভাই-বোনদের আমি অনুরোধ করছি। তিনি বলেন, আমাদের কিছুসংখ্যক জনশক্তির অবহেলা এবং তথ্য গোপনের ফলে ২/৩টি দেশে অবস্থানরত প্রবাসীরা অস্বস্তিতে পড়েছে। এমন অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি আমরা চাই না।

সাম্প্রতিক সময়ে করোনা সংক্রমণ বিষয়ে মানুষের ভীতি কমে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে করোনা সংক্রমণ বিষয়ে জন-মানুষের মাঝে ভয়ভীতি কমে গেছে। নমুনা পরীক্ষা সংখ্যাগত বিচারে কমেছে। কিন্তু জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা, লক্ষণ ও সংক্রমণ লুকিয়ে অনেকে চলাফেরা করছেন কিন্তু পরীক্ষা করাচ্ছেন না। অপরদিকে নমুনার সংখ্যা কমলেও আক্রান্তের হার শতকরা হিসেবে বাড়ছে।

দরিদ্রদের বিনামূল্যে নমুনা পরীক্ষার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, অনেকে মনে করছেন অসহায় দরিদ্র মানুষকে ফি দিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে বলে নমুনা পরীক্ষা থেকে দূরে থাকছে। করোনার অভিঘাতে অনেক মানুষ এখনও কর্মহীন অসহায়। দরিদ্র মানুষের আর্থিক অক্ষমতার কথা বিবেচনা করে ফি ছাড়া পরীক্ষার সুযোগ প্রদানের বিষয়টি বিবেচনার জন্য আমি সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, নমুনা পরীক্ষায় আগ্রহ যেমন কমেছে, তেমনি দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার কারণে কারও কারও আস্থা কমতে পারে। এছাড়া কোথাও কোথাও নমুনা সংগ্রহের পর রেজাল্ট জানাতে দীর্ঘ সময় নিচ্ছে ল্যাবগুলো।এতে মানুষের মাঝে আস্থাহীনতা তৈরি হতে পারে, যা শুভ লক্ষণ নয়। তিনি কার্যকর সমন্বয়ের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার ফল দেয়া প্রক্রিয়ায় গতি আনতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।

বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মকর্তাদের বেতন প্রদানে পরিচালনা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সারাদেশে বিভিন্ন স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাখ-লাখ শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত। সরকারী ও এমপিওভুক্ত ছাড়াও বিশাল একটি অংশ বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত। এ সকল শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রতিষ্ঠান থেকে দেয়া হয়। এ সঙ্কটকালে প্রধানমন্ত্রী তাঁদের কথা মনে রেখে ইতোমধ্যে অনুদান দিয়েছেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানসমূহ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় শিক্ষক-কর্মচারী কষ্টকর জীবন যাপন করছেন। এ অবস্থায় তিনি বেসরকারী ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত কিংবা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার পরিচালনা সংশ্লিষ্টদের কষ্ট করে হলেও শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।