ধর্ষণ পৈশাচিকতা ও অপরাধ

  • Update Time : ০৩:৪৭:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই ২০২০
  • / 189

জিসান তাসফিকঃ

ধর্ষণ একটি নিত্য ব্যবহারিত শব্দ। কিন্তু এমন একটি শব্দ যা আমাদেরকে আতঙ্কিত করে। আইনের ভাষায় ধর্ষণ হলো বাংলাদেশ দন্ডবিধি ৩৭৫ ধারা অনুযায়ী কোনো নারীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে, সম্মতি ছাড়া, ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে, ১৪ বছরের কম হলে এরূপ ক্ষেত্রে যৌন সহবাস হলেও সেটা ধর্ষণ বলে বিবেচিত হবে এবং এটাই আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। তবে বর্তমান আইনে ১৬ বছর বলা আছে। বিবাহের ক্ষেত্রে এসব ধর্ষণ হয় না, কারণ বিবাহ আইন অনুযায়ী উভয়ের সম্মতিতে সম্পন্ন হয়। এরা প্রাপ্তবয়স্ক হয় এবং এদের পারস্পরিক সম্পর্ক বোঝার ক্ষমতা থাকে।

পত্রিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, আমাদের দেশে ধর্ষণের ২০১৯ সালে ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৪১৩ নারী। এর মধ্যে ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৭৬ জন এবং ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ১০ জন।

প্রতিনিয়ত অনেকে ধর্ষণের শিকার হয়। চক্ষুশুলে অনেক প্রকাশ করে না বরং কষ্ট ভোগ করতে থাকে। প্রকাশিত হবার মধ্যে যেগুলো দেশকে আলোড়িত তরে তার মধ্যে তনু হত্যাকাণ্ড, মহাখালিতে ঢাবির এক শিক্ষার্থীর ধর্ষণ, হিরামনি ধর্ষণ ও হত্যা, ৬ বছরের এক শিশু ধর্ষণ ও হত্যা। উদাহরণ দিলে শেষ হবে না। অনুসন্ধান করলে এমন হাজারো উদাহরণ সামনে এসে যায়। কিন্তু সমাজে কি এভাবেই থাকবে? এর কি কোনো সমাধান নেই? নারীদের উপর নির্যাতন আজকের নয় সেই প্রাচীনকাল থেকে চলতে এসেছে। আজও চলছে। ধর্ষণের জন্য দায়ী কে? কেনই বা ধর্ষণ বেড়েই চলেছে? কারণ অনেক আছে কিন্তু সমাজে আজও কোনো সমাধান নেই।

আমি একটু ভিন্ন ভাবে তথা বৈজ্ঞানিক ভাবে বিশ্লেষণ করে দেখি, পুরুষ ও মহিলা শারীরিক ভাবে ভিন্ন এবং পরস্পর পরস্পরকে আর্কষণ অনুভব করে। এটা প্রকৃতির নিয়ম। বিজ্ঞান এটাকে সহজাত প্রবৃত্তি বলে অর্থাৎ জীবের যে স্নায়বিক আচরণ জন্মগত ভাবে আসে, সমাজে বসবাস করে নয়। নরনারীর ক্ষেত্রে যে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া কিন্তু একটি নির্দিষ্ট বয়স অতিক্রান্ত হবার পরে হরমোন জনিত কারণে এমন আর্কষণ শারীরিক ও মানষিক চাহিদা প্রকট হয়। এই চাহিদা পূরণের জন্য আমাদের সমাজে বিবাহ প্রথা আছে। কিন্তু তারপরেও এমন ঘৃনিত কাজ হয়।

মানুষকে নিয়ন্ত্রণের জন্য সমাজে আছে আইন আর আইনের প্রয়োগ। ঠিকই তেমনি আইনে কঠোর থেকে কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে ধর্ষণ কমিয়ে আনা সম্ভব। এছাড়াও পুরুষ ও নারীদের বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় যে সামাজিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে সেখানেও পারস্পরিক দূরত্ব ও সতর্কতা বজায় রাখা উচিত। কিন্তু এটাও যথেষ্ট না কারণ কুপ্রবৃত্তি মানুষের মনের ইচ্ছা। তাই পরিবর্তনটা আসত হলে মানুষের ভিতর থেকে আসতে হবে আর এটা সম্ভব শিক্ষা ও সংস্কৃতির মাধ্যমে। কিন্তু আমাদের দেশের শিক্ষা ও সংস্কৃতির হযবরল অবস্থা। কোনোটি যে আমার, কোনটি সেটাও বুঝা যায় না এর সাথেও বুঝার উপায় নাই কোনটি ভালো আর খারাপ। এক্ষেত্রে আমাদের প্রত্যেকের সচেতন হতে হবে। আর সমাজে অবাধ অশ্লীলতা আর ও বন্ধ করা উচিত এবং এইসব কৃতকর্মের জন্য এদেরকে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। কেননা প্রতিনিয়ত এইসব হতে থাকলে কে কখন কাকে ধর্ষণ করে বসে বলা যায় না? আর চোখের সমানে এইসব অবাধে চলতে থাকলে মস্তিষ্ক এটারই প্রতিক্রিয়া চলতে থাকে। যার ফলে নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের পক্ষে কষ্টসাধ্য হয়ে যায়।

ধর্ষণ কিংবা ধর্ষণের চেষ্টার জন্য বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থাঃ
ধর্ষণের ফলে অপরাধীর শাস্তি হল পেনাল কোড ৩৭৬ ধারা অনুযায়ী যাবৎ জীবন কারাদণ্ড অথবা দশ বছরের কারাদণ্ড এবং সেই সাথে অর্থদণ্ড ও আছে। ধর্ষণের শাস্তি এখানে শেষ নয়। যদি এটা অপহরণ করে নিয়ে যায় তবে পেনাল কোড ৩৬২ ধারা অনুযায়ী এই অপহরণ ও দন্ডনীয় অপরাধ এবং ৩৬৩ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং সেই সাথে অর্থদণ্ড ও থাকবে। আবার আমরা দেখতেছি যে ধর্ষণের পরে হত্যা ও করা হয়। হত্যা করা নিন্দনীয় অপরাধ, এবং সর্বোচ্চ সাজানো মৃত্যু দন্ড (পেনাল কোড ২৯৯, ৩০০, ৩০১, ৩০২)

আবার নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ২০০০ এর ৯ ধারা অনুযায়ী; নারী ও শিশু নির্যাতনে ধর্ষণের সাজা যাবৎজীবন কারাদণ্ড ও সেই সাথে অর্থ দন্ড।
য‍দি মৃত্যু হয় তবে ৯(২) এতে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যু দন্ড দেওয়া হয়েছে অথবা যাবৎজীবন কারাদণ্ড । ঠিক এমনই সাজা গনধর্ষনের ক্ষেত্রে ও বলা দেওয়া হয়েছে ৯(৩) এবং তাও সমান রুপে।

এছাড়াও গত বছরের মহামান্য উচ্চ আদালতের (২০১৯) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে যেসব নির্দেশনা দেন তার মধ্যে অন্যমত কথা ছিল মামলার রায় ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে।

টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে রুপা খাতুনকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায়ে আদালত গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ চার আসামির মৃত্যুদণ্ড ও একজনের সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। আবার অনেকেই মনে করে যে আইনের দূর্বলতা জন্য ধর্ষণকারীরা পার পেয়ে যায়। আসলে এটা ভুল কথা। দূর্বলতা আইনের না। দূর্বলতা সাক্ষ্যপ্রমাণের। কোনো ব্যক্তিই দোষী না যতক্ষণ না পর্যন্ত সেটা প্রমাণিত হয়। কেননা আইন চায় না কোনো নির্দোষ সাজা ভোগ করুক। তবে এখন উন্নত প্রযুক্তির ফলে অনেক কঠিন কাজ সহজ হয়েছে। যার মধ্যে ফরেনসিক টেস্ট অন্যতম। এখন প্রশাসনের লোকজনের নিজ দায়িত্বে সৎ হলেই হয়। ধর্ষণ এমন এক অপরাধ যার জন্য আইনে কোনো সমঝোতার অনুমতি নেই। এটা ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী বিচার হবেই এবং সরকারের পূর্ণ সহযোগিতা থাকবে। সুতরাং অপরাধী পার পেয়ে যাবার সুযোগ নেই।

কিন্তু এর থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল ধর্ষণের হাত থেকে নারী ও শিশুকে রক্ষা করা। নারী জাতির যদি জন্ম হয় ধর্ষিতা হবার জন্য তবে আমাদের জন্য জারজই হবে। কেউ যাতে ধর্ষণ না করতে পারে তার জন্য আমাদেরই সচেতন হতে হবে।

লেখকঃ শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ধর্ষণ পৈশাচিকতা ও অপরাধ

Update Time : ০৩:৪৭:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই ২০২০

জিসান তাসফিকঃ

ধর্ষণ একটি নিত্য ব্যবহারিত শব্দ। কিন্তু এমন একটি শব্দ যা আমাদেরকে আতঙ্কিত করে। আইনের ভাষায় ধর্ষণ হলো বাংলাদেশ দন্ডবিধি ৩৭৫ ধারা অনুযায়ী কোনো নারীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে, সম্মতি ছাড়া, ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে, ১৪ বছরের কম হলে এরূপ ক্ষেত্রে যৌন সহবাস হলেও সেটা ধর্ষণ বলে বিবেচিত হবে এবং এটাই আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। তবে বর্তমান আইনে ১৬ বছর বলা আছে। বিবাহের ক্ষেত্রে এসব ধর্ষণ হয় না, কারণ বিবাহ আইন অনুযায়ী উভয়ের সম্মতিতে সম্পন্ন হয়। এরা প্রাপ্তবয়স্ক হয় এবং এদের পারস্পরিক সম্পর্ক বোঝার ক্ষমতা থাকে।

পত্রিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, আমাদের দেশে ধর্ষণের ২০১৯ সালে ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৪১৩ নারী। এর মধ্যে ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৭৬ জন এবং ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ১০ জন।

প্রতিনিয়ত অনেকে ধর্ষণের শিকার হয়। চক্ষুশুলে অনেক প্রকাশ করে না বরং কষ্ট ভোগ করতে থাকে। প্রকাশিত হবার মধ্যে যেগুলো দেশকে আলোড়িত তরে তার মধ্যে তনু হত্যাকাণ্ড, মহাখালিতে ঢাবির এক শিক্ষার্থীর ধর্ষণ, হিরামনি ধর্ষণ ও হত্যা, ৬ বছরের এক শিশু ধর্ষণ ও হত্যা। উদাহরণ দিলে শেষ হবে না। অনুসন্ধান করলে এমন হাজারো উদাহরণ সামনে এসে যায়। কিন্তু সমাজে কি এভাবেই থাকবে? এর কি কোনো সমাধান নেই? নারীদের উপর নির্যাতন আজকের নয় সেই প্রাচীনকাল থেকে চলতে এসেছে। আজও চলছে। ধর্ষণের জন্য দায়ী কে? কেনই বা ধর্ষণ বেড়েই চলেছে? কারণ অনেক আছে কিন্তু সমাজে আজও কোনো সমাধান নেই।

আমি একটু ভিন্ন ভাবে তথা বৈজ্ঞানিক ভাবে বিশ্লেষণ করে দেখি, পুরুষ ও মহিলা শারীরিক ভাবে ভিন্ন এবং পরস্পর পরস্পরকে আর্কষণ অনুভব করে। এটা প্রকৃতির নিয়ম। বিজ্ঞান এটাকে সহজাত প্রবৃত্তি বলে অর্থাৎ জীবের যে স্নায়বিক আচরণ জন্মগত ভাবে আসে, সমাজে বসবাস করে নয়। নরনারীর ক্ষেত্রে যে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া কিন্তু একটি নির্দিষ্ট বয়স অতিক্রান্ত হবার পরে হরমোন জনিত কারণে এমন আর্কষণ শারীরিক ও মানষিক চাহিদা প্রকট হয়। এই চাহিদা পূরণের জন্য আমাদের সমাজে বিবাহ প্রথা আছে। কিন্তু তারপরেও এমন ঘৃনিত কাজ হয়।

মানুষকে নিয়ন্ত্রণের জন্য সমাজে আছে আইন আর আইনের প্রয়োগ। ঠিকই তেমনি আইনে কঠোর থেকে কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে ধর্ষণ কমিয়ে আনা সম্ভব। এছাড়াও পুরুষ ও নারীদের বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় যে সামাজিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে সেখানেও পারস্পরিক দূরত্ব ও সতর্কতা বজায় রাখা উচিত। কিন্তু এটাও যথেষ্ট না কারণ কুপ্রবৃত্তি মানুষের মনের ইচ্ছা। তাই পরিবর্তনটা আসত হলে মানুষের ভিতর থেকে আসতে হবে আর এটা সম্ভব শিক্ষা ও সংস্কৃতির মাধ্যমে। কিন্তু আমাদের দেশের শিক্ষা ও সংস্কৃতির হযবরল অবস্থা। কোনোটি যে আমার, কোনটি সেটাও বুঝা যায় না এর সাথেও বুঝার উপায় নাই কোনটি ভালো আর খারাপ। এক্ষেত্রে আমাদের প্রত্যেকের সচেতন হতে হবে। আর সমাজে অবাধ অশ্লীলতা আর ও বন্ধ করা উচিত এবং এইসব কৃতকর্মের জন্য এদেরকে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। কেননা প্রতিনিয়ত এইসব হতে থাকলে কে কখন কাকে ধর্ষণ করে বসে বলা যায় না? আর চোখের সমানে এইসব অবাধে চলতে থাকলে মস্তিষ্ক এটারই প্রতিক্রিয়া চলতে থাকে। যার ফলে নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের পক্ষে কষ্টসাধ্য হয়ে যায়।

ধর্ষণ কিংবা ধর্ষণের চেষ্টার জন্য বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থাঃ
ধর্ষণের ফলে অপরাধীর শাস্তি হল পেনাল কোড ৩৭৬ ধারা অনুযায়ী যাবৎ জীবন কারাদণ্ড অথবা দশ বছরের কারাদণ্ড এবং সেই সাথে অর্থদণ্ড ও আছে। ধর্ষণের শাস্তি এখানে শেষ নয়। যদি এটা অপহরণ করে নিয়ে যায় তবে পেনাল কোড ৩৬২ ধারা অনুযায়ী এই অপহরণ ও দন্ডনীয় অপরাধ এবং ৩৬৩ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং সেই সাথে অর্থদণ্ড ও থাকবে। আবার আমরা দেখতেছি যে ধর্ষণের পরে হত্যা ও করা হয়। হত্যা করা নিন্দনীয় অপরাধ, এবং সর্বোচ্চ সাজানো মৃত্যু দন্ড (পেনাল কোড ২৯৯, ৩০০, ৩০১, ৩০২)

আবার নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ২০০০ এর ৯ ধারা অনুযায়ী; নারী ও শিশু নির্যাতনে ধর্ষণের সাজা যাবৎজীবন কারাদণ্ড ও সেই সাথে অর্থ দন্ড।
য‍দি মৃত্যু হয় তবে ৯(২) এতে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যু দন্ড দেওয়া হয়েছে অথবা যাবৎজীবন কারাদণ্ড । ঠিক এমনই সাজা গনধর্ষনের ক্ষেত্রে ও বলা দেওয়া হয়েছে ৯(৩) এবং তাও সমান রুপে।

এছাড়াও গত বছরের মহামান্য উচ্চ আদালতের (২০১৯) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে যেসব নির্দেশনা দেন তার মধ্যে অন্যমত কথা ছিল মামলার রায় ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে।

টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে রুপা খাতুনকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায়ে আদালত গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ চার আসামির মৃত্যুদণ্ড ও একজনের সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। আবার অনেকেই মনে করে যে আইনের দূর্বলতা জন্য ধর্ষণকারীরা পার পেয়ে যায়। আসলে এটা ভুল কথা। দূর্বলতা আইনের না। দূর্বলতা সাক্ষ্যপ্রমাণের। কোনো ব্যক্তিই দোষী না যতক্ষণ না পর্যন্ত সেটা প্রমাণিত হয়। কেননা আইন চায় না কোনো নির্দোষ সাজা ভোগ করুক। তবে এখন উন্নত প্রযুক্তির ফলে অনেক কঠিন কাজ সহজ হয়েছে। যার মধ্যে ফরেনসিক টেস্ট অন্যতম। এখন প্রশাসনের লোকজনের নিজ দায়িত্বে সৎ হলেই হয়। ধর্ষণ এমন এক অপরাধ যার জন্য আইনে কোনো সমঝোতার অনুমতি নেই। এটা ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী বিচার হবেই এবং সরকারের পূর্ণ সহযোগিতা থাকবে। সুতরাং অপরাধী পার পেয়ে যাবার সুযোগ নেই।

কিন্তু এর থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল ধর্ষণের হাত থেকে নারী ও শিশুকে রক্ষা করা। নারী জাতির যদি জন্ম হয় ধর্ষিতা হবার জন্য তবে আমাদের জন্য জারজই হবে। কেউ যাতে ধর্ষণ না করতে পারে তার জন্য আমাদেরই সচেতন হতে হবে।

লেখকঃ শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়