করোনা নিয়ে স্বাস্থ্যের ডিজির বক্তব্য কাণ্ডজ্ঞানহীন: ওবায়দুল কাদের

  • Update Time : ০৮:২৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০
  • / 201

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আরও দুই-তিন বছর চলতে পারে বলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের আয়ুষ্কাল নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অদূরদর্শী ও কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য মানুষকে হতাশ করেছে। স্পর্শকাতর এ সময় দায়িত্বশীল পদে থেকে কারও দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য রাখা মোটেও সমীচীন নয়।’ ওবায়দুল কাদের এ সময় এ ধরনের বক্তব্য থেকে বিরত থাকারও পরামর্শ দেন।

শুক্রবার (১৯ জুন) সংসদ ভবন এলাকার সরকারি বাসভবন থেকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রসঙ্গত স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে অংশ নিয়ে বলেছেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এক, দুই বা তিন মাসে শেষ হবে না। এটি দুই থেকে তিন বছর ধরে চলতে পারে, যদিও সংক্রমণের মাত্রা একই হারে নাও থাকতে পারে।

স্বাস্থ্য দফতরের ডিজির এই বক্তব্যের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার যখন দিন-রাত পরিশ্রম করে মানুষের মনোবল চাঙ্গা রাখার জন্য নিয়মিত প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন, করোনা যোদ্ধাদের প্রতিনিয়ত সাহস দিচ্ছেন, তখন স্বাস্থ্যবিভাগের ঊর্ধ্বতন কোনও কোনও কর্মকর্তার করোনার আয়ুষ্কাল নিয়ে অদূরদর্শী ও কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য জনমনে হতাশা তৈরি করছে।আমি এ ধরনের সমন্বয়হীন ও দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য থেকে নিজেদের বিরত রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি। স্পর্শকাতর এ সময় দায়িত্বশীল পদে থেকে কারও দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য রাখা মোটেও সমীচীন নয়।’

খুলনায় চিকিৎসক হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করার আশ্বাস দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এ সংকটে ফ্রন্টলাইনে কর্মরত যোদ্ধাদের অনেকেই নিজেকে দেশ ও জাতির সেবায় উৎসর্গ করেছেন। এপর্যন্ত ৪২ জন চিকিৎসক ২৬ জন পুলিশসহ নার্স, টেকনিশিয়ান, সাংবাদিক আনসার সদস্য প্রাণ দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে খুলনায় একজন চিকিৎসক হত্যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। সব সম্মুখযোদ্ধাকে আমি ধৈর্য ধারনের আহ্বান জানাচ্ছি। মনে করিয়ে দিতে চাই, শেখ হাসিনার সরকার অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। অন্যায়কারী যতই ক্ষমতাবান হোক তার রেহাই নেই।’

প্রশাসনকে সহযোগিতার জন্য আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন  সংক্রমণের বর্তমান পর্যায়ে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে আবারও আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের আশার শেষ ঠিকানা চেতনার বাতিঘর শেখ হাসিনা দিনরাত নিরলস পরিশ্রম করছেন। তার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের নেতাকর্মীরা অতীতের মতো সাহসী অমানবিক ভূমিকা পালন করবে বলে আমার বিশ্বাস।’

এলাকাভিত্তিক লকডাউনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘জোনভিত্তিক লকডাউনের সিদ্ধান্তের পরপরই দ্রুত এবং কার্যকরভাবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রতিষ্ঠা করতে হবে সুসমন্বয়। সঠিক সমন্বয় সাধন সম্ভব হলে লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিবিড় মনিটরিং এবং পাশাপাশি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে শক্তিশালী টিমওয়ার্ক গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।’

লকডাউন এলাকার জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, ‘এসব এলাকার লকডাউন করা হবে সে সব এলাকার জনসাধারণকে বুঝতে সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিদিন ক্রমবর্ধমান এই সংক্রমণ পরিস্থিতিতে আমাদের হতাশ হওয়ার কোনও কারণ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এ সংকট কাটিয়ে উঠবো, ইনশাআল্লাহ।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


করোনা নিয়ে স্বাস্থ্যের ডিজির বক্তব্য কাণ্ডজ্ঞানহীন: ওবায়দুল কাদের

Update Time : ০৮:২৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আরও দুই-তিন বছর চলতে পারে বলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের আয়ুষ্কাল নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অদূরদর্শী ও কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য মানুষকে হতাশ করেছে। স্পর্শকাতর এ সময় দায়িত্বশীল পদে থেকে কারও দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য রাখা মোটেও সমীচীন নয়।’ ওবায়দুল কাদের এ সময় এ ধরনের বক্তব্য থেকে বিরত থাকারও পরামর্শ দেন।

শুক্রবার (১৯ জুন) সংসদ ভবন এলাকার সরকারি বাসভবন থেকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রসঙ্গত স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে অংশ নিয়ে বলেছেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এক, দুই বা তিন মাসে শেষ হবে না। এটি দুই থেকে তিন বছর ধরে চলতে পারে, যদিও সংক্রমণের মাত্রা একই হারে নাও থাকতে পারে।

স্বাস্থ্য দফতরের ডিজির এই বক্তব্যের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার যখন দিন-রাত পরিশ্রম করে মানুষের মনোবল চাঙ্গা রাখার জন্য নিয়মিত প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন, করোনা যোদ্ধাদের প্রতিনিয়ত সাহস দিচ্ছেন, তখন স্বাস্থ্যবিভাগের ঊর্ধ্বতন কোনও কোনও কর্মকর্তার করোনার আয়ুষ্কাল নিয়ে অদূরদর্শী ও কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য জনমনে হতাশা তৈরি করছে।আমি এ ধরনের সমন্বয়হীন ও দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য থেকে নিজেদের বিরত রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি। স্পর্শকাতর এ সময় দায়িত্বশীল পদে থেকে কারও দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য রাখা মোটেও সমীচীন নয়।’

খুলনায় চিকিৎসক হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করার আশ্বাস দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এ সংকটে ফ্রন্টলাইনে কর্মরত যোদ্ধাদের অনেকেই নিজেকে দেশ ও জাতির সেবায় উৎসর্গ করেছেন। এপর্যন্ত ৪২ জন চিকিৎসক ২৬ জন পুলিশসহ নার্স, টেকনিশিয়ান, সাংবাদিক আনসার সদস্য প্রাণ দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে খুলনায় একজন চিকিৎসক হত্যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। সব সম্মুখযোদ্ধাকে আমি ধৈর্য ধারনের আহ্বান জানাচ্ছি। মনে করিয়ে দিতে চাই, শেখ হাসিনার সরকার অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। অন্যায়কারী যতই ক্ষমতাবান হোক তার রেহাই নেই।’

প্রশাসনকে সহযোগিতার জন্য আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন  সংক্রমণের বর্তমান পর্যায়ে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে আবারও আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের আশার শেষ ঠিকানা চেতনার বাতিঘর শেখ হাসিনা দিনরাত নিরলস পরিশ্রম করছেন। তার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের নেতাকর্মীরা অতীতের মতো সাহসী অমানবিক ভূমিকা পালন করবে বলে আমার বিশ্বাস।’

এলাকাভিত্তিক লকডাউনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘জোনভিত্তিক লকডাউনের সিদ্ধান্তের পরপরই দ্রুত এবং কার্যকরভাবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রতিষ্ঠা করতে হবে সুসমন্বয়। সঠিক সমন্বয় সাধন সম্ভব হলে লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিবিড় মনিটরিং এবং পাশাপাশি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে শক্তিশালী টিমওয়ার্ক গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।’

লকডাউন এলাকার জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, ‘এসব এলাকার লকডাউন করা হবে সে সব এলাকার জনসাধারণকে বুঝতে সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিদিন ক্রমবর্ধমান এই সংক্রমণ পরিস্থিতিতে আমাদের হতাশ হওয়ার কোনও কারণ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এ সংকট কাটিয়ে উঠবো, ইনশাআল্লাহ।