দেশের জন্য করোনাকালে জীবন দিলেন পুলিশের যে সকল গর্বিত সদস্য
- Update Time : ১০:৩৩:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুন ২০২০
- / 145
বিশেষ সংবাদদাতা :
দেশে করোনার বিস্তারের শুরু থেকে জনগণের সেবা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে প্রধান সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। করোনাকালে সম্মানিত নাগরিকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। মানুষের জন্য সর্বোচ্চ ঝুঁকি নেওয়ায় একক পেশা হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশের গর্বিত সদস্যগণ সর্বোচ্চ সংখ্যক করোনার সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। ১৩ জুন ২০২০ খ্রিঃ শনিবার পর্যন্ত চলমান করোনাযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের ২৪ জন গর্বিত সদস্য দেশের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে শহিদ হয়েছেন।
.
দেশের জন্য আত্মোৎসর্গকারী বাংলাদেশ পুলিশের গর্বিত সদস্যদের মধ্যে পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) পদমর্যাদার ৪ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। তাঁরা হলেন,বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট এসপিবিএন-২ এর ইন্সপেক্টর গোলাম কিবরিয়ার (৫৮), সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের সদর কোর্টের ইন্সপেক্টর মোঃ ফজলুর রহমান (৫৭), কুড়িগ্রাম জেলার পুলিশের পুলিশ লাইন্সের ইন্সপেক্টর মোঃ আব্দুল জলিল সরদার (৫৫) এবং ডিএমপির সিটিটিসির ইন্সপেক্টর রাজু আহম্মেদ (৪৩)।
.
চলমান করোনাযুদ্ধে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পদমর্যাদার ৬ জন কর্মকর্তা দেশের জন্য আত্মাহুতি দিয়েছেন। তাঁরা হলেন, বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) প্ররক্ষা শাখার এসআই নাজির উদ্দিন (৫৫) এবং সিটিএসবি’র এসআই মজিবুর রহমান (৫৮) ও এসআই মোঃ রাসেল বিশ্বাস (৩৫)। এ তালিকায় আরও রয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সীতাকুণ্ড থানার এসআই মোঃ একরামুল ইসলাম (৪৫), রাজশাহী আরআরএফের এসআই মোশারফ হোসেন শেখ (৫৬) এবং ডিএমপি’র পিওএম-পশ্চিম বিভাগের এসআই সুলতানুল আরেফিন (৪৪)।
.
দেশের মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পদমর্যাদার ৩ জন্য গর্বিত সদস্য শহীদ হয়েছেন। তাঁরা হলেন, ডিএমপি’র পিওএম-দক্ষিণ বিভাগের এএসআই শ্রী রঘুনাথ রায় (৪৮) ও এএসআই আঃ খালেক (৩৬) এবং সিএমপি’র এএসআই মোহাম্মদ মর্তুজা কাইয়ুম (৪৮)।
করোনাকালে সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে দেশের মানুষের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের নায়েক পদমর্যাদার একজন এবং কনস্টেবল পদমর্যাদার ৯ জন গর্বিত সদস্য শহীদ হয়েছেন।
.
তাঁরা হলেন,ডিএমপির এমটি শাখার নায়েক আল মামুন (৪৩), হাজারীবাগ পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল মোঃ আলমগীর হোসেন (৫৪), ট্রাফিক-পূর্ব বিভাগের কনস্টেবল মোঃ জালাল উদ্দিন (৪৭), ট্রাফিক-উত্তর বিভাগের কনস্টেবল আশেক মাহমুদ (৪২) এবং ওয়ারি ফাঁড়ির মোঃ জসিম উদ্দিন (৪০)। এ তালিকায় আরও রয়েছেন সিএমপির হালিশহর থানার কনস্টেবল নেকবার হোসেন (৪২), ট্রাফিক বন্দর বিভাগের মোঃ নঈমুল হক (৩৮) এবং কনস্টেবল মামুন উদ্দিন (২৭)। দিনাজপুরের বীরগঞ্জ থানার কনস্টেবল মোঃ আমিনুল হক (৪৪) ও চট্টগ্রাম জেলার সদর কোর্টের কনস্টেবল মোখলেছুর রহমান (৫৭) দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশ পুলিশের ইউনিট ব্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর সদর দপ্তরে কর্মরত এসএসএইই /এম (পি) আলী হায়দার আবু এনাম এবং ডিএমপি’র মিরপুর বিভাগের পল্লবী জোনের সিভিল স্টাফ নিরোধ চন্দ্র করোনায় সংক্রমিত হয়ে শাহাদাৎ বরণ করেছেন।
.
করোনাযুদ্ধে মাঠ পর্যায়ের প্রধান অগ্রসেনানী বাংলাদেশ পুলিশ। এ কারণে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত সবার আগে পুলিশকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এ লড়াইয়ে দেশের কল্যাণ ও মানুষের নিরাপত্তা, সেবা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গিয়ে এ পর্যন্ত ২৪ জন প্রিয় সহকর্মীকে হারাতে হয়েছে। তবুও একবিন্দু দমে না গিয়ে শক্ত মনোবল আর পূর্ণ উদ্যমে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ পুলিশ।
Tag :