বাংলাদেশে রপ্তানি কমেছে ভারতের

  • Update Time : ০৩:৩২:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 23

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও সহিংসতার মাঝে গত আগস্টে বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানি কমে গেছে প্রায় ২৮ শতাংশ। গত মাসে বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৬৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার; যা গত বছরের আগস্ট মাসে ছিল ৯৪৩ মিলিয়ন ডলার। বুধবার ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বিক্ষোভ ও সহিংসতায় বৈদেশিক মুদ্রার সংকট আরও গভীর হয়েছে। এর মাঝেই আগস্ট মাসে বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানি কমে গেছে।

ঋণমান নির্ণয়কারী আন্তর্জাতিকসংস্থা ক্রিসিল বলেছে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি ভারতের বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেনি। তবে দেশটিতে অস্থিতিশীলতা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে তা ভারতের কিছু রপ্তানি শিল্পের জন্য আয় ও চলতি মূলধন ঘাটতিতে প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ ভারতের এসব শিল্পের চাহিদার অথবা উৎপাদনের কেন্দ্র বাংলাদেশ।

দুই দেশের বাণিজ্যিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাংলাদেশে ভারতের অন্যতম প্রধান রপ্তানি পণ্য তুলা। চলতি বছরের আগস্টে বাংলাদেশে এই পণ্যের রপ্তানি ১০ শতাংশ বা ১ বিলিয়ন ডলার কমেছে। যদিও গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশে ভারতের তুলা রপ্তানির এই পরিমাণ ছিল ১ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। বিক্ষোভের কারণে বাংলাদেশে তৈরি পোষাকের বিদেশি অর্ডার কমে যাওয়ার মাঝেই ভারতের রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে।

ক্রিসিল বলেছে, বাংলাদেশ থেকে অর্ডার কমে যাওয়ায় তা ভারতীয় তৈরি পোষাক শিল্পের ওপর প্রভাব ফেলেছে। কারণ বাংলাদেশে তৈরি পোষাকের কাঁচামাল ও অন্যান্য পণ্য সরবরাহ করে ভারত।

অন্যদিকে, ভারতে তৈরি পোষাকের নতুন ক্রয়াদেশের বিষয়ে বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানি যখন খোঁজ-খবর নিচ্ছে, তখন বাংলাদেশে ভারতীয় তুলা রপ্তানি কমতে শুরু করেছে। তবে এর প্রভাব শিল্প বা সুনির্দিষ্ট রপ্তানি খাতের আয়ের ওপর কতটা নির্ভরশীল, বিষয়টি তার ওপর নির্ভর করবে।

এছাড়া ভারতের করপোরেট জগতের ঋণমানের ওপর দ্রুতই এর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে মনে করে না প্রতিষ্ঠানটি। এক্ষেত্রে বাংলাদেশি টাকার মান কী দাঁড়ায়, সেদিকে নজর রাখা দরকার হবে।

সংস্থাটি বলেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এর প্রভাব তুচ্ছ হবে। বাংলাদেশের সাথে ভারতের বাণিজ্য তুলনামূলকভাবে কম, যা দেশটির মোট রপ্তানির মাত্র আড়াই শতাংশ এবং গত অর্থবছরে মোট আমদানির শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ ছিল।

ঋণমান নির্ণয়কারী এই সংস্থার সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ভারতের পণ্য রপ্তানি ছিল প্রধানত তুলা, সুতা, পেট্রোলিয়াম পণ্য, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য।

আর বাংলাদেশ থেকে ভারতের আমদানি করা পণ্যের মধ্যে আছে উদ্ভিজ্জ চর্বি তেল, সামুদ্রিক পণ্য এবং পোশাক। বাংলাদেশ প্রায় ৮ থেকে ১০ শতাংশ তুলা পণ্য বিক্রি করে থাকে; যে কারণে তা বিশ্বের প্রধান প্রধান রপ্তানিকারকদের রাজস্বে প্রভাব ফেলতে পারে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


বাংলাদেশে রপ্তানি কমেছে ভারতের

Update Time : ০৩:৩২:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও সহিংসতার মাঝে গত আগস্টে বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানি কমে গেছে প্রায় ২৮ শতাংশ। গত মাসে বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৬৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার; যা গত বছরের আগস্ট মাসে ছিল ৯৪৩ মিলিয়ন ডলার। বুধবার ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বিক্ষোভ ও সহিংসতায় বৈদেশিক মুদ্রার সংকট আরও গভীর হয়েছে। এর মাঝেই আগস্ট মাসে বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানি কমে গেছে।

ঋণমান নির্ণয়কারী আন্তর্জাতিকসংস্থা ক্রিসিল বলেছে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি ভারতের বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেনি। তবে দেশটিতে অস্থিতিশীলতা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে তা ভারতের কিছু রপ্তানি শিল্পের জন্য আয় ও চলতি মূলধন ঘাটতিতে প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ ভারতের এসব শিল্পের চাহিদার অথবা উৎপাদনের কেন্দ্র বাংলাদেশ।

দুই দেশের বাণিজ্যিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাংলাদেশে ভারতের অন্যতম প্রধান রপ্তানি পণ্য তুলা। চলতি বছরের আগস্টে বাংলাদেশে এই পণ্যের রপ্তানি ১০ শতাংশ বা ১ বিলিয়ন ডলার কমেছে। যদিও গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশে ভারতের তুলা রপ্তানির এই পরিমাণ ছিল ১ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। বিক্ষোভের কারণে বাংলাদেশে তৈরি পোষাকের বিদেশি অর্ডার কমে যাওয়ার মাঝেই ভারতের রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে।

ক্রিসিল বলেছে, বাংলাদেশ থেকে অর্ডার কমে যাওয়ায় তা ভারতীয় তৈরি পোষাক শিল্পের ওপর প্রভাব ফেলেছে। কারণ বাংলাদেশে তৈরি পোষাকের কাঁচামাল ও অন্যান্য পণ্য সরবরাহ করে ভারত।

অন্যদিকে, ভারতে তৈরি পোষাকের নতুন ক্রয়াদেশের বিষয়ে বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানি যখন খোঁজ-খবর নিচ্ছে, তখন বাংলাদেশে ভারতীয় তুলা রপ্তানি কমতে শুরু করেছে। তবে এর প্রভাব শিল্প বা সুনির্দিষ্ট রপ্তানি খাতের আয়ের ওপর কতটা নির্ভরশীল, বিষয়টি তার ওপর নির্ভর করবে।

এছাড়া ভারতের করপোরেট জগতের ঋণমানের ওপর দ্রুতই এর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে মনে করে না প্রতিষ্ঠানটি। এক্ষেত্রে বাংলাদেশি টাকার মান কী দাঁড়ায়, সেদিকে নজর রাখা দরকার হবে।

সংস্থাটি বলেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এর প্রভাব তুচ্ছ হবে। বাংলাদেশের সাথে ভারতের বাণিজ্য তুলনামূলকভাবে কম, যা দেশটির মোট রপ্তানির মাত্র আড়াই শতাংশ এবং গত অর্থবছরে মোট আমদানির শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ ছিল।

ঋণমান নির্ণয়কারী এই সংস্থার সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ভারতের পণ্য রপ্তানি ছিল প্রধানত তুলা, সুতা, পেট্রোলিয়াম পণ্য, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য।

আর বাংলাদেশ থেকে ভারতের আমদানি করা পণ্যের মধ্যে আছে উদ্ভিজ্জ চর্বি তেল, সামুদ্রিক পণ্য এবং পোশাক। বাংলাদেশ প্রায় ৮ থেকে ১০ শতাংশ তুলা পণ্য বিক্রি করে থাকে; যে কারণে তা বিশ্বের প্রধান প্রধান রপ্তানিকারকদের রাজস্বে প্রভাব ফেলতে পারে।