কোটা আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াত ঢুকে কর্মসূচি ঠিক করে দিচ্ছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

  • Update Time : ০৫:১৫:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪
  • / 43

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

শিক্ষার্থীরা না বুঝেই কোটাবিরোধী আন্দোলন করছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াত প্রবেশ করে কর্মসূচি ঠিক করে দিচ্ছে।

বুধবার (১৭ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত এক সভায় তিনি একথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা না বুঝেই কোটাবিরোধী আন্দোলন করছে। সরকারি চাকরিতে কোটা সরকার বাতিল করেছে। সরকার এটি বাতিল করেছে তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে, তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে। গত কয়েকটি বিসিএস পরীক্ষা কোটাবিহীন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোটার ভিত্তিতে নয়, সরকারি চাকরিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সম্পূর্ণ কোটাবিহীনভাবে।’

‘স্বাধীনতার পর থেকেই কোটা ছিল। স্বাধীনতার আগেও কোটা ছিল। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, নারী ও জেলা কোটা ছিল। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ছিল না। যেটি আমাদের সরকার পুনর্বহাল করেছে। বিভিন্ন পর্যায়ের কোটা দেশ স্বাধীনের পর থেকে ছিল।’

যেহেতু কোটা সরকার বাতিল করেছিল, দেশের যে কোনো নাগরিক আদালতে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সে কারণে একজন ব্যক্তি হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন। সরকার যে কোটা বাতিল করেছিল, সেটি অবৈধ বলে রায় হয়। অর্থাৎ সরকারের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন, কোটা পুনর্বহালের কথা বলেছেন। হাইকোর্ট রায় দিলো সরকারের বিরুদ্ধে। আবার আন্দোলন করছে সরকারের বিরুদ্ধে।’

হাইকোর্টের এ রায় সুপ্রিম কোর্ট স্থগিত করে দিয়েছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অর্থাৎ সরকার যে কোটা বাদ করে দিয়েছিল, হাইকোর্ট সেই রায় পুনর্বহাল করেছে। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী কোটা নেই। এটি জানার পরও যারা আন্দোলন করছে। দুরভিসন্ধিজনকভাবে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ভুল বুঝিয়ে সেখানে সম্পৃক্ত করছে। এরপর সেখানে বিএনপি-জামায়াত ঢুকেছে। কোটা আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াত প্রবেশ করে কর্মসূচি ঠিক করে দিচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘ওয়ান/ইলেভেনের কুশীলবরা এখনো সক্রিয়। মানে যারা ষড়যন্ত্রকারী। এটি মানুষ বোঝে। তারা নির্বাচনের আগে সক্রিয় ছিল। বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দেশের নির্বাচন পণ্ড করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের পরে সরকার যেন বিশ্ববাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য না হয়, সেজন্য সক্রিয় ছিল। সেই চেষ্টায় তারা ব্যর্থ হয়ে সক্রিয় হয়েছে দেশে একটি গণ্ডগোল পাকানোর জন্য। বিএনপি-জামায়াতের যেমন আন্দোলন করার কোনো ক্ষমতা নেই, ওয়ান ইলেভেনের কুশীলবদের জনগণের কাছে যাওয়ারও কোনো ক্ষমতা নেই।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গতকাল সারাদেশে যে নৈরাজ্য হয়েছে এর প্রধান কারণ বিএনপি-জামায়তের সন্ত্রাসীরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম-রংপুরসহ সারাদেশে তারা লাঠিসোঁটা, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে নেমেছে। চট্টগ্রামে মানুষের রগ কেটেছে। রগকাটা বাহিনী হচ্ছে শিবির। চট্টগ্রামে ছয়তলা ভবনের ছাদ থেকে ছাত্রলীগের কর্মীদের ফেলে দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামে তিনজন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে একজন ছাত্রদল নেতা। ছাত্রদলের নেতা ওখানে গেলো কেন? তাহলে তারা ওখানে ঢুকেছে প্রমাণ হলো।’

‘ঢাকায় একজন পথচারী ও আরেকজন ছাত্র নিহত হয়েছে। গতকাল বিএনপি-জামায়াত চাচ্ছিল দেশে কোটা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে লাশ তৈরি হোক।’পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কোটা আন্দোলনকারীরা গতকাল সমাবেশ করেও কোনো কর্মসূচি দেয়নি। রাত সাড়ে ১২টায় কর্মসূচি ঘোষণা, গায়েবানা জানাজা ও মিছিল। তার মানে লাশের রাজনীতি। এর মানে, এই কর্মসূচি কোটা আন্দোলনকারীদের নয়, বিএনপি-জামায়াতের পরামর্শে দেওয়া হয়েছে। আমরা দেশকে বিএনপি-জামায়াতের সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে অস্থিতিশীল করতে দেবো না।

Please Share This Post in Your Social Media


কোটা আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াত ঢুকে কর্মসূচি ঠিক করে দিচ্ছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

Update Time : ০৫:১৫:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪

শিক্ষার্থীরা না বুঝেই কোটাবিরোধী আন্দোলন করছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াত প্রবেশ করে কর্মসূচি ঠিক করে দিচ্ছে।

বুধবার (১৭ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত এক সভায় তিনি একথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা না বুঝেই কোটাবিরোধী আন্দোলন করছে। সরকারি চাকরিতে কোটা সরকার বাতিল করেছে। সরকার এটি বাতিল করেছে তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে, তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে। গত কয়েকটি বিসিএস পরীক্ষা কোটাবিহীন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোটার ভিত্তিতে নয়, সরকারি চাকরিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সম্পূর্ণ কোটাবিহীনভাবে।’

‘স্বাধীনতার পর থেকেই কোটা ছিল। স্বাধীনতার আগেও কোটা ছিল। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, নারী ও জেলা কোটা ছিল। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ছিল না। যেটি আমাদের সরকার পুনর্বহাল করেছে। বিভিন্ন পর্যায়ের কোটা দেশ স্বাধীনের পর থেকে ছিল।’

যেহেতু কোটা সরকার বাতিল করেছিল, দেশের যে কোনো নাগরিক আদালতে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সে কারণে একজন ব্যক্তি হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন। সরকার যে কোটা বাতিল করেছিল, সেটি অবৈধ বলে রায় হয়। অর্থাৎ সরকারের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন, কোটা পুনর্বহালের কথা বলেছেন। হাইকোর্ট রায় দিলো সরকারের বিরুদ্ধে। আবার আন্দোলন করছে সরকারের বিরুদ্ধে।’

হাইকোর্টের এ রায় সুপ্রিম কোর্ট স্থগিত করে দিয়েছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অর্থাৎ সরকার যে কোটা বাদ করে দিয়েছিল, হাইকোর্ট সেই রায় পুনর্বহাল করেছে। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী কোটা নেই। এটি জানার পরও যারা আন্দোলন করছে। দুরভিসন্ধিজনকভাবে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ভুল বুঝিয়ে সেখানে সম্পৃক্ত করছে। এরপর সেখানে বিএনপি-জামায়াত ঢুকেছে। কোটা আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াত প্রবেশ করে কর্মসূচি ঠিক করে দিচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘ওয়ান/ইলেভেনের কুশীলবরা এখনো সক্রিয়। মানে যারা ষড়যন্ত্রকারী। এটি মানুষ বোঝে। তারা নির্বাচনের আগে সক্রিয় ছিল। বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দেশের নির্বাচন পণ্ড করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের পরে সরকার যেন বিশ্ববাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য না হয়, সেজন্য সক্রিয় ছিল। সেই চেষ্টায় তারা ব্যর্থ হয়ে সক্রিয় হয়েছে দেশে একটি গণ্ডগোল পাকানোর জন্য। বিএনপি-জামায়াতের যেমন আন্দোলন করার কোনো ক্ষমতা নেই, ওয়ান ইলেভেনের কুশীলবদের জনগণের কাছে যাওয়ারও কোনো ক্ষমতা নেই।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গতকাল সারাদেশে যে নৈরাজ্য হয়েছে এর প্রধান কারণ বিএনপি-জামায়তের সন্ত্রাসীরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম-রংপুরসহ সারাদেশে তারা লাঠিসোঁটা, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে নেমেছে। চট্টগ্রামে মানুষের রগ কেটেছে। রগকাটা বাহিনী হচ্ছে শিবির। চট্টগ্রামে ছয়তলা ভবনের ছাদ থেকে ছাত্রলীগের কর্মীদের ফেলে দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামে তিনজন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে একজন ছাত্রদল নেতা। ছাত্রদলের নেতা ওখানে গেলো কেন? তাহলে তারা ওখানে ঢুকেছে প্রমাণ হলো।’

‘ঢাকায় একজন পথচারী ও আরেকজন ছাত্র নিহত হয়েছে। গতকাল বিএনপি-জামায়াত চাচ্ছিল দেশে কোটা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে লাশ তৈরি হোক।’পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কোটা আন্দোলনকারীরা গতকাল সমাবেশ করেও কোনো কর্মসূচি দেয়নি। রাত সাড়ে ১২টায় কর্মসূচি ঘোষণা, গায়েবানা জানাজা ও মিছিল। তার মানে লাশের রাজনীতি। এর মানে, এই কর্মসূচি কোটা আন্দোলনকারীদের নয়, বিএনপি-জামায়াতের পরামর্শে দেওয়া হয়েছে। আমরা দেশকে বিএনপি-জামায়াতের সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে অস্থিতিশীল করতে দেবো না।