উচ্চ খেলাপি ঋণ আর্থিক খাতের জন্য বড় হুমকি: বাংলাদেশ ব্যাংক

  • Update Time : ০৪:২১:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪
  • / 77

উচ্চ খেলাপি ঋণকে দেশের আর্থিক খাতের জন্য বড় হুমকি বলে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ব্যাংকব্যবস্থায় বিদ্যমান উচ্চ খেলাপি ঋণ আর্থিক খাতের অগ্রগতিতে বিরাট হুমকিস্বরূপ। খেলাপি ঋণ বেশি হলে ব্যাংকগুলোকে এই ঋণের বিপরীতে প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি বাড়াতে হয়। ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতির জন্য মূলত খেলাপি ঋণই দায়ী। খেলাপি ঋণ কমানো ছাড়া ব্যাংকব্যবস্থায় মূলধন পর্যাপ্ততার কোনো উন্নতি হবে না।

মুদ্রা ও বিনিময় হার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত ত্রৈমাসিক পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। এমন এক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এমন মন্তব্য করল, যখন ঋণ দেওয়ায় অনিয়ম, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার শিথিলতার কারণে ব্যাংকিং খাত বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণের ভারে জর্জরিত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। ডিসেম্বরে অবশ্য খেলাপি ঋণ কিছুটা কমে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকায় নামে, যা মোট ঋণের ৯ শতাংশ।

পর্যালোচনা প্রতিবেদনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ১০ বছর ধরে ন্যূনতম মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত ধরে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোও মূলধন ঘাটতিতে আছে।

প্রতিবেদনে বিশেষ তারল্য সহায়তা, টাকার অবমূল্যায়ন, বৈদেশিক হিসাবে ঘাটতি এবং তারল্য ঘাটতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ইসলামী ব্যাংকগুলোর ঋণ নেওয়াকে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। শিগগিরই এসব সমস্যার সমাধান করা না গেলে সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চলতি ২০২৩–২৪ অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে মুদ্রা সরবরাহ তার আগের প্রান্তিকের তুলনায় ১ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়ে ১৯ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ ঋণের পরিমাণ চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে ২ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়ে ১৯ লাখ ৭১ হাজার কোটি টাকায় উঠেছে।

Please Share This Post in Your Social Media


উচ্চ খেলাপি ঋণ আর্থিক খাতের জন্য বড় হুমকি: বাংলাদেশ ব্যাংক

Update Time : ০৪:২১:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪

উচ্চ খেলাপি ঋণকে দেশের আর্থিক খাতের জন্য বড় হুমকি বলে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ব্যাংকব্যবস্থায় বিদ্যমান উচ্চ খেলাপি ঋণ আর্থিক খাতের অগ্রগতিতে বিরাট হুমকিস্বরূপ। খেলাপি ঋণ বেশি হলে ব্যাংকগুলোকে এই ঋণের বিপরীতে প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি বাড়াতে হয়। ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতির জন্য মূলত খেলাপি ঋণই দায়ী। খেলাপি ঋণ কমানো ছাড়া ব্যাংকব্যবস্থায় মূলধন পর্যাপ্ততার কোনো উন্নতি হবে না।

মুদ্রা ও বিনিময় হার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত ত্রৈমাসিক পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। এমন এক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এমন মন্তব্য করল, যখন ঋণ দেওয়ায় অনিয়ম, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার শিথিলতার কারণে ব্যাংকিং খাত বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণের ভারে জর্জরিত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। ডিসেম্বরে অবশ্য খেলাপি ঋণ কিছুটা কমে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকায় নামে, যা মোট ঋণের ৯ শতাংশ।

পর্যালোচনা প্রতিবেদনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ১০ বছর ধরে ন্যূনতম মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত ধরে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোও মূলধন ঘাটতিতে আছে।

প্রতিবেদনে বিশেষ তারল্য সহায়তা, টাকার অবমূল্যায়ন, বৈদেশিক হিসাবে ঘাটতি এবং তারল্য ঘাটতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ইসলামী ব্যাংকগুলোর ঋণ নেওয়াকে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। শিগগিরই এসব সমস্যার সমাধান করা না গেলে সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চলতি ২০২৩–২৪ অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে মুদ্রা সরবরাহ তার আগের প্রান্তিকের তুলনায় ১ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়ে ১৯ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ ঋণের পরিমাণ চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে ২ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়ে ১৯ লাখ ৭১ হাজার কোটি টাকায় উঠেছে।