যবিপ্রবিতে শিক্ষার্থী মারধরের ঘটনায় বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

  • Update Time : ০৭:১৩:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪
  • / 63

*তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন
*দ্রুত বিচারের আশ্বাস

যবিপ্রবি প্রতিনিধি

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) থাপ্পড় দিয়ে এক শিক্ষার্থীর কান ফাটানোর ঘটনায় বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। ভুক্তভোগীর নিজ বিভাগ ক্লাইমেট এন্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট (সিডিএম) বিভাগের পক্ষ থেকে এ মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধন থেকে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দুই(০২) দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে অভিযুক্ত রোটার‍্যাক্ট ক্লাবের সভাপতি আকিব ইবনে সাইদকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিসহ তিন দফা দাবি উত্থাপন করেন।

শনিবার (৯ মার্চ) বেলা ১০:৩০ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিভিন্ন লেখা প্লাকার্ড হাতে নিয়ে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। এসময় তাঁরা ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, অভিযুক্ত আকিবের বহিষ্কার চাই’, ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, কুড়িয়ে পাওয়া কর্কশিটকে কেন্দ্র করে রোটারেক্ট ক্লাবের সভাপতি থাপ্পড় মেরে কানের পর্দা ফটিয়ে ফেলবে, আবার চোর বলে অপবাদও দিবে এটা আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে কখনোই মেনে নিতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হয়ে অপর শিক্ষার্থীকে কারণ ছাড়াই চোর বলে কিভাবে! বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্লাবের সভাপতির মতো দায়িত্বের জায়গা থেকে এমন সন্ত্রাসী কার্যক্রম করলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যরা কি শিখবে? এ ঘটনার পরে ক্যাম্পাসে আমরা আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত আকিবের স্থায়ী বহিষ্কার চাই।

কর্মসূচির এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টররা উপস্থিত হয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। এসময় শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবিসহ উক্ত ঘটনার বিচার চেয়ে দুই কার্যদিবসের আল্টিমেটাম দেয়। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- ভুক্তভোগী সুমনের চিকিৎসার সকল খরচ বহন করা, দুই কার্যদিবসের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া এবং অভিযুক্ত আকিব ইবনে সাঈদকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো: হাফিজ উদ্দিন বলেন, আমরা ভুক্তভোগীর থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই ঘটনার তদন্ত করে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রোটার‍্যাক্ট ক্লাব ও ফটোগ্রাফিক সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে দ্বিতীয় গেট সংলগ্ন একটি জায়গায় ফটো এক্সিবিশন ‘আরণ্যক – ARANNYAK’ অনুষ্ঠিত হয়। পরদিন ৭ মার্চ সন্ধ্যায় রঙ করা ককশিট কুড়িয়ে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকস্থ যুথি-বীথি হোটেলের সামনে সুমন কুমার মণ্ডল নামের এক ছাত্রকে সজোরে থাপ্পড় মারেন আকিব ইবনে সাঈদ। এ সময় জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ভুক্তভোগী ওই ছাত্র। এরপর তাকে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করা হয়। ভুক্তভোগী সুমন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাইমেট এন্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট (সিডিএম) বিভাগের ১ম বর্ষের ছাত্র। অভিযুক্ত আকিব ইবনে সাইদ অ্যাকাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম (এআইএস) বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র, এআইএস ক্লাবের সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের এআইএস বিভাগ ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


যবিপ্রবিতে শিক্ষার্থী মারধরের ঘটনায় বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

Update Time : ০৭:১৩:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪

*তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন
*দ্রুত বিচারের আশ্বাস

যবিপ্রবি প্রতিনিধি

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) থাপ্পড় দিয়ে এক শিক্ষার্থীর কান ফাটানোর ঘটনায় বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। ভুক্তভোগীর নিজ বিভাগ ক্লাইমেট এন্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট (সিডিএম) বিভাগের পক্ষ থেকে এ মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধন থেকে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দুই(০২) দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে অভিযুক্ত রোটার‍্যাক্ট ক্লাবের সভাপতি আকিব ইবনে সাইদকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিসহ তিন দফা দাবি উত্থাপন করেন।

শনিবার (৯ মার্চ) বেলা ১০:৩০ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিভিন্ন লেখা প্লাকার্ড হাতে নিয়ে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। এসময় তাঁরা ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, অভিযুক্ত আকিবের বহিষ্কার চাই’, ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, কুড়িয়ে পাওয়া কর্কশিটকে কেন্দ্র করে রোটারেক্ট ক্লাবের সভাপতি থাপ্পড় মেরে কানের পর্দা ফটিয়ে ফেলবে, আবার চোর বলে অপবাদও দিবে এটা আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে কখনোই মেনে নিতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হয়ে অপর শিক্ষার্থীকে কারণ ছাড়াই চোর বলে কিভাবে! বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্লাবের সভাপতির মতো দায়িত্বের জায়গা থেকে এমন সন্ত্রাসী কার্যক্রম করলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যরা কি শিখবে? এ ঘটনার পরে ক্যাম্পাসে আমরা আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত আকিবের স্থায়ী বহিষ্কার চাই।

কর্মসূচির এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টররা উপস্থিত হয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। এসময় শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবিসহ উক্ত ঘটনার বিচার চেয়ে দুই কার্যদিবসের আল্টিমেটাম দেয়। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- ভুক্তভোগী সুমনের চিকিৎসার সকল খরচ বহন করা, দুই কার্যদিবসের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া এবং অভিযুক্ত আকিব ইবনে সাঈদকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো: হাফিজ উদ্দিন বলেন, আমরা ভুক্তভোগীর থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই ঘটনার তদন্ত করে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রোটার‍্যাক্ট ক্লাব ও ফটোগ্রাফিক সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে দ্বিতীয় গেট সংলগ্ন একটি জায়গায় ফটো এক্সিবিশন ‘আরণ্যক – ARANNYAK’ অনুষ্ঠিত হয়। পরদিন ৭ মার্চ সন্ধ্যায় রঙ করা ককশিট কুড়িয়ে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকস্থ যুথি-বীথি হোটেলের সামনে সুমন কুমার মণ্ডল নামের এক ছাত্রকে সজোরে থাপ্পড় মারেন আকিব ইবনে সাঈদ। এ সময় জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ভুক্তভোগী ওই ছাত্র। এরপর তাকে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করা হয়। ভুক্তভোগী সুমন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাইমেট এন্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট (সিডিএম) বিভাগের ১ম বর্ষের ছাত্র। অভিযুক্ত আকিব ইবনে সাইদ অ্যাকাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম (এআইএস) বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র, এআইএস ক্লাবের সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের এআইএস বিভাগ ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক।