৬৭ শিক্ষার্থীকে বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

  • Update Time : ০৪:১৮:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ মার্চ ২০২৪
  • / 103

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও এর অধিভুক্ত কলেজ সমূহের ৬০ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলা পরিষদের সভার সুপারিশ অনুযায়ী গত রবিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) ঢাবি জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা উল্লেখ করা হয়। সাময়িক বহিষ্কৃতরা হলেন – মৃৎশিল্প বিভাগের জাহিদ শেখ ও মো. শাহরিন ইসলাম, ফলিত গণিত বিভাগের মো. আযহা ইসলাম, সংগীত বিভাগের মর্তুজা হাসান খান, ইতিহাস বিভাগের মো. আজিম মাহমুদ তওসিফ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মো. রিয়াদ মাল এবং ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মো. আব্দুল ওহেদ।

জনসংযোগ দপ্তরের বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, মৃৎশিল্প বিভাগের সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী জাহিদ শেখ ও মো. শাহরিন ইসলাম শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের একজন শিক্ষার্থীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলে আটক রেখে ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এই ঘটনায় ভিকটিম শিক্ষার্থীর পিতা অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের নামে লালবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদেরকে এই সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

সাময়িক বহিষ্কৃত ফলিত গণিত বিভাগের মো. আযহা ইসলাম, সংগীত বিভাগের মর্তুজা হাসান খান, ইতিহাস বিভাগের মো. আজিম মাহমুদ তওসিফ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মো, রিয়াদ মাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানস্থ শিখা চিরন্তনে
ঘুরতে আসা দুজন দর্শনার্থীর গতিরোধ করে এলোপাথাড়ি মারধর করে ৫ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ভিকটিম শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত এই চার শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

এছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ও মর্যাদা ক্ষুণ্ণ, অসদাচরণ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী অভিযোগে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মো. আব্দুল ওহেদকে সাময়িক বহিষ্কৃকার করা হয়েছে। আব্দুল ওহেদ এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ’ নামে একটি গ্রুপে বিশ্ববিদ্যালয়ের মলচত্বরে নির্মাণাধীন শতবার্ষিক মনুমেন্ট নিয়ে এক ভিডিও আপলোড করেন। সেখানে অশ্রাব্য ভাষায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও গণমাধ্যমকর্মীদের গালিগালাজ করায় তাকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। এ সময়ে তাকে টিএসসির ছাত্র নির্দেশনা ও পরামর্শদান দপ্তরে নিয়মিত কাউন্সেলিং নিতে হবে এবং তার মানসিক মূল্যায়ন বিবেচনায় শাস্তি কমানো হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।

সাময়িক বহিষ্কারের চিঠি সংশ্লিষ্ট থানা, শিক্ষার্থীর স্থানীয় অভিভাবক এবং স্থায়ী ঠিকানায় প্রেরণ করা হবে। বহিষ্কৃত এই ৭ শিক্ষার্থী বহিষ্কারাদেশ চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয় হলে অবস্থান করতে পারবে না।

তাদের কৃত অপরাধের জন্য ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না’ মর্মে কারণ দর্শানো এবং ৭ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব প্রদানের জন্য বলা হয়েছে।

এ ছাড়াও, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কৃত ৬০জন শিক্ষার্থীর মধ্যে দুই জনকে পরীক্ষাসহ তিন সেমিস্টার, ৪০জনকে পরীক্ষাসহ দুই সেমিস্টার এবং ১৮জনকে পরীক্ষাসহ ১ সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

সিন্ডিকেট সভায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছারসহ সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


৬৭ শিক্ষার্থীকে বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Update Time : ০৪:১৮:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ মার্চ ২০২৪

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও এর অধিভুক্ত কলেজ সমূহের ৬০ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলা পরিষদের সভার সুপারিশ অনুযায়ী গত রবিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) ঢাবি জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা উল্লেখ করা হয়। সাময়িক বহিষ্কৃতরা হলেন – মৃৎশিল্প বিভাগের জাহিদ শেখ ও মো. শাহরিন ইসলাম, ফলিত গণিত বিভাগের মো. আযহা ইসলাম, সংগীত বিভাগের মর্তুজা হাসান খান, ইতিহাস বিভাগের মো. আজিম মাহমুদ তওসিফ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মো. রিয়াদ মাল এবং ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মো. আব্দুল ওহেদ।

জনসংযোগ দপ্তরের বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, মৃৎশিল্প বিভাগের সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী জাহিদ শেখ ও মো. শাহরিন ইসলাম শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের একজন শিক্ষার্থীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলে আটক রেখে ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এই ঘটনায় ভিকটিম শিক্ষার্থীর পিতা অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের নামে লালবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদেরকে এই সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

সাময়িক বহিষ্কৃত ফলিত গণিত বিভাগের মো. আযহা ইসলাম, সংগীত বিভাগের মর্তুজা হাসান খান, ইতিহাস বিভাগের মো. আজিম মাহমুদ তওসিফ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মো, রিয়াদ মাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানস্থ শিখা চিরন্তনে
ঘুরতে আসা দুজন দর্শনার্থীর গতিরোধ করে এলোপাথাড়ি মারধর করে ৫ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ভিকটিম শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত এই চার শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

এছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ও মর্যাদা ক্ষুণ্ণ, অসদাচরণ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী অভিযোগে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মো. আব্দুল ওহেদকে সাময়িক বহিষ্কৃকার করা হয়েছে। আব্দুল ওহেদ এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ’ নামে একটি গ্রুপে বিশ্ববিদ্যালয়ের মলচত্বরে নির্মাণাধীন শতবার্ষিক মনুমেন্ট নিয়ে এক ভিডিও আপলোড করেন। সেখানে অশ্রাব্য ভাষায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও গণমাধ্যমকর্মীদের গালিগালাজ করায় তাকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। এ সময়ে তাকে টিএসসির ছাত্র নির্দেশনা ও পরামর্শদান দপ্তরে নিয়মিত কাউন্সেলিং নিতে হবে এবং তার মানসিক মূল্যায়ন বিবেচনায় শাস্তি কমানো হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।

সাময়িক বহিষ্কারের চিঠি সংশ্লিষ্ট থানা, শিক্ষার্থীর স্থানীয় অভিভাবক এবং স্থায়ী ঠিকানায় প্রেরণ করা হবে। বহিষ্কৃত এই ৭ শিক্ষার্থী বহিষ্কারাদেশ চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয় হলে অবস্থান করতে পারবে না।

তাদের কৃত অপরাধের জন্য ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না’ মর্মে কারণ দর্শানো এবং ৭ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব প্রদানের জন্য বলা হয়েছে।

এ ছাড়াও, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কৃত ৬০জন শিক্ষার্থীর মধ্যে দুই জনকে পরীক্ষাসহ তিন সেমিস্টার, ৪০জনকে পরীক্ষাসহ দুই সেমিস্টার এবং ১৮জনকে পরীক্ষাসহ ১ সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

সিন্ডিকেট সভায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছারসহ সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।