ঢাবির মুহসীন হল থেকে অপহৃত ২ ব্যক্তি উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৩ ছাত্র
- Update Time : ০৪:২৩:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / 74
ঢাবি প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল থেকে ৩ দিন ধরে অপহৃত ২ ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ ও ঢাবি প্রক্টরিয়াল টিম। তারা হলেন- মোহাম্মদ আব্দুল জলিল ও হেফাজ উদ্দিন।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮ টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সহায়তায় পুলিশের অভিযানে মুহসীন হলের ৫৪৪ নম্বর কক্ষ থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। কক্ষটি হল প্রশাসন সিলগালা করে দেয়।
পরে এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।গ্রেপ্তারকৃত ৩ শিক্ষার্থী হলেন মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের উপ প্রচার সম্পাদক মোনতাছির হোসাইন, ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক উপ সম্পাদক আল শাহরিয়ার মাহমুদ তানসেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আবুল হাসান সাঈদি। এ ছাড়া ছাত্রলীগ নেতা মোনতাছিরের আত্মীয় মো. শাহাবুদ্দীনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জানা যায়, ব্যবসার কথা বলে ছাত্রলীগ নেতা মোনতাছির হোসাইনের আত্মীয় মো. শাহাবুদ্দীনের কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা ধার নিয়েছিলেন আবদুল জলিল নামের এক ব্যক্তি। তিনি টাকা ফেরত দিতে দেরি করছিলেন। তাই ২১ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত দুইটার দিকে শাহাবুদ্দীন ১০ থেকে ১২ জন নিয়ে গিয়ে আবদুল জলিল ও তাঁর বন্ধু হেফাজ উদ্দীনকে হাতিরঝিলের হাজীপাড়ার বাসা থেকে তুলে প্রথমে বিজয় একাত্তর হল ও পরে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে আটকে রাখেন। ওই ১০-১২ জনের মধ্যে ছাত্রলীগের গ্রেপ্তার হওয়া ৩ নেতাও ছিলেন।
আবদুল জলিল ও হেফাজ উদ্দীনের পরিবারের পক্ষ থেকে হাতিরঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। এরপর শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সহায়তায় পুলিশের অভিযানে মুহসীন হলের ৫৪৪ নম্বর কক্ষ থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শাহাবুদ্দীন ও তিন ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে হাতিরঝিল থানার পুলিশ।
উদ্ধার হওয়া আবদুল জলিল সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘শাহাবুদ্দীন আমার কাছে ৩৫ লাখ টাকা পান। মাঝে কিছুদিন তাঁর সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়নি। পরে ২১ ফেব্রুয়ারি রাত দুইটায় দলবল নিয়ে আমাকে বাসা থেকে তুলে আনা হয়। আমার শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, আমরা প্রথমে পুলিশের কাছ থেকে জানতে পারলাম, মুহসীন হলে চার বা পাঁচ তলায় আমাদের কয়েকজন ছাত্রের সহযোগিতায় একজনকে তুলে আনা হয়েছে। টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যে তাকে মারধরও করা হয়েছে। পরে শাহবাগ থানা ও হল প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করি। জড়িত ও ভুক্তভোগীদের জড়ো করে জিজ্ঞাসাবাদ করি। এতে সকল ঘটনা বেরিয়ে আসে।
প্রক্টর বলেন, বাংলাদেশের আইন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী এদের বিচার হবে। বিশ্ববিদ্যালয় এ ধরনের অপরাধমূলক কাজে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে থাকবে। ভুক্তভোগীকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারা আগেই একটি জিডি করেছে। তার ভিত্তিতে এখন মামলায় যাবে।
তিনি আরও জানান, জড়িতদের হাতিরঝিল থানায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের যে বিধি রয়েছে, তা প্রয়োগ করে হল প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আবদুল জলিলের শরীরে মারধরের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ পরিদর্শক (এসআই) আল আমিন।
এ ঘটনায় হওয়া মামলায় শাহাবুদ্দীন ও অভিযুক্ত তিন ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আওলাদ হোসেন।