ওমরজাইয়ের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে কুমিল্লাকে হারালো রংপুর
- Update Time : ০৫:৪৯:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৪
- / 109
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দিনের প্রথম ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ৮ রানে হারিয়েছে রংপুর রাইডার্স। আগে ব্যাট করতে নেমে বাবর আজমের ৩৭, ফজলে রাব্বির ৩০ রানের পর আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ২০ বলে ৩৬ রানের ঝড়ো ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ দাঁড় করায় রংপুর। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মহিদুল ইসলাম অংকনের ৬৩ রানের অনবদ্য ইনিংসের পরও বাকি ব্যাটারদের ব্যর্থতায় জয় পাওয়া হয়নি কুমিল্লার। এ নিয়ে পাঁচ ম্যাচ খেলে তৃতীয় জয় পেল নুরুল ইসলাম সোহানের দলটি।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু পায়নি রংপুর রাইডার্স। তানভির ইসলামের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ানের স্টাম্পিং হন ১২ বলে ১৪ রান করা ব্র্যান্ডন কিং। ফলে দলীয় ১৮ রানেই প্রথম উইকেট হারায় রংপুর। এরপর ফজলে মাহমুদ রাব্বিকে নিয়ে রংপুরের ইনিংস টানেন বাবর আজম।
তার সামনে হাতছানি দিচ্ছিল হাফ সেঞ্চুরি। খুশদিল শাহর লেংথ ডেলিভারিতে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন ৩৬ বলে ৩৭ রান করা বাবর। একপ্রান্ত আগলে রেখে দারুণ খেলছিলেন ফজলে মাহমুদ রাব্বি। তিনি মোস্তাফিজুর রহমানের বলে ডিপে জাকের আলী অনিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ২১ বলে ৩০ রান করে। আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করতে চেয়েও সেটা পারেননি শামীম হোসেন পাটোয়ারী।
রেইমন রেইফারের স্লোয়ার ডেলিভারিতে মিড অফের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে চাইলেও আউট হন লং অফে লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়ে। শামীমের ব্যাট থেকে আসে ১৪ রান। এরপর উইকেটে এসেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন মোহাম্মদ নবি। রেমন্ড রেইফারকে ১৯তম ওভারে প্রথম দুই বলে একটি করে চার ও ছক্কা মেরেন নবি।
তৃতীয় বলে মিড উইকেট দিয়ে খেলতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন ১৩ রান করা নবি। শেষ দিকে অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে ১৬৫ রান সংগ্রহ করে রংপুর। কুমিল্লার হয়ে দুটি উইকেট নেন রেইফার। একটি করে উইকেট নেন মোস্তাফিজ, তানভীর এবং খুশদিল।
রান তাড়ায় ইনিংসের তৃতীয় বলেই ওমরজাইয়ের শিকার অধিনায়ক লিটন দাস। ‘গোল্ডেন ডাক’ মেরে বিদায় নেন ‘এলকেডি’। পাওয়ারপ্লেতে এরপর আর উইকেট না হারালেও ৩৬ রানের বেশি তুলতে পারেনি কুমিল্লা। মোহাম্মদ রিজওয়ান দলকে টানতে থাকেন আস্তে-ধীরে। তবে তাকে সঙ্গ দেয়া মাহিদুল ইসলাম অংকন ছিলেন দুর্দান্ত। নবির বলে ১৭ রানে থাকা রিজওয়ান অবশ্য রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ক্যাচ হন সাকিবের হাতে।
দলীয় ৬০ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানো কুমিল্লাকে এরপর সহজ জয়ের পথে নিয়ে যেতে সাহায্য করেন মাহিদুল অংকন। বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে গোল্ডেন ডাক হয়ে সাজঘরে ফেরা মাহিদুল পরের দুই ম্যাচে সেরা একাদশের বাইরে ছিলেন। আজ প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে নেমেই ব্যাট হাতে করলেন বাজিমাত। ৪৩ বলে পেয়েছেন পঞ্চাশের দেখা। অংকন অবশ্য ফিফটি হাঁকিয়ে হয়ে ওঠেন আরও বিধ্বংসী। এরপর খেলতে থাকেন হাত খুলে, স্ট্রোক্সের ফোয়ারা ছুটিয়েছেন সিলেটের অনিন্দ্য সুন্দর মাঠে।
তবে বল হাতে এদিন ছন্দে থাকা হাসান মাহমুদ নিজের তৃতীয় ওভার করতে এসে ভাঙেন মাহিদুল অংকনের প্রতিরোধ। ব্যক্তিগত ৬৩ রানে অংকনকে বিদায় করতে লং অনে দৌড়ে এসে দারুণভাবে ক্যাচ লুফে নেন বাবর আজম। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে মাহিদুলের ৬৩ রান আসে ৫৫ বল থেকে, যা তিনি সাজান চার বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায়। এরপর খুশদিল শাহ আর তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাট চড়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স পৌঁছে যেতে চেয়েছিল জয়ের বন্দরে। এখানেও বাঁধা হয়ে দাঁড়ালেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ৮ বলে ১৩ করে ফেলা খুশদিলকে ফেরান ক্যাচ বানিয়ে।
জয়ের জন্য শেষ ওভারে কুমিল্লার দরকার ছিল ২৯ রান। সাকিব আল হাসানের বিপরীতে যা প্রায় কঠিন, এবং হয়েছেও তাই। স্ট্রাইকে থাকা তাওহীদ হৃদয় ও রেমন রেইফার ম্যাচ বের করে আনতে পারেননি। ওভারের দ্বিতীয় বলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউটের ফাঁদে পড়েন তাওহীদ হৃদয়। ফেরার আগে ২৮ বলে করেন ৩৯ রান। পরের বলে সাকিবকে ওভার বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে লং অফে বাবর আজমের হাতে সহজ ক্যাচ হন রেইফার।
জাকের আলি অনিক ব্যাট হাতে নেমেই দুই বলে হাঁকান দুই ওভার বাউন্ডারি। শেষ দুই বলে ২ ও চার মিলিয়ে জাকের মোট ৬ নিলে ৮ রানের পরাজয় নিশ্চিত হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। ৪ বলে ১৮ রানের ক্যামিও ইনিংসে দলকে জয়ে রাঙাতে পারলেন না জাকের আলি অনিক।