আবিদের বেঁচে থাকাটাই এক বিস্ময়

  • Update Time : ০১:১৫:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩
  • / 635

রিয়াজুল হক:

কয়েকদিন আগে খুলনা থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে শিবচরে ভয়াবহ এক বাস দুর্ঘটনা ঘটে। বিশজন মানুষ স্পট ডেড। ভাবুন একবার, কতটা ভয়ংকর দুর্ঘটনা!

দুর্ঘটনার পরপরই আমার ছোট ভাই জহির আমাকে জানালো, ওই বাসে আবিদ নামে আমাদের স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তন ছাত্র ছিল। তবে সে বেঁচে আছে। ভাবলাম, একই স্কুল কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র হলে আমার ফেসবুকের ফ্রেন্ড লিস্টে থাকার কথা। পেয়েও গেলাম। বেশ জুনিয়র হওয়ার কারণে আগে কখনও কথা হয়নি।

দুর্ঘটনার পর গতকাল রাতে আবিদের সাথে আমার কথা হলো।

ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনার সময় আবিদ ‘ডি’ সিরিয়ালের সিটে বসেছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, দুর্ঘটনায় বাসের সামনের দিকের যাত্রী মারা গেছে নাকি পেছনের দিকের?

No description available.

আবিদ জানাল- ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’, ‘ডি’, ‘ই’ সিরিয়ালের সব যাত্রী মারা গেছে। শুধুমাত্র ‘ডি’ সিরিয়ালের যাত্রী হয়েও সে বেঁচে আছে। ওর কথা শুনেই মনে হচ্ছিল, আবিদের বেঁচে থাকাটাই তো এক বিস্ময়। রাখে আল্লাহ, মারে কে?

আরো বড় বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, তার বড় ধরণের বিপর্যয় ঘটেনি, যেখানে মৃত্যুই ছিল খুব সাধারণ একটা ব্যাপার। বেশ কয়েকজনের মারাত্মকভাবে অঙ্গহানি হয়েছে। তবে আবিদের একটা দাঁত ভেঙে গেছে।

দুর্ঘটনার পর বাসার লোকজন দুর্ঘটনাস্থল শিবচর থেকে আবিদকে খুলনায় নিয়ে আসে এবং একটি হাসপাতালে ভর্তি করে। কয়েকদিন হাসপাতালে ছিল। এখন ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছে। ডাক্তারের কড়া নির্দেশ বেড রেস্ট নিতে হবে।

তবে আবিদের সাথে কথা বলে বুঝলাম, দুর্ঘটনার পর সে একটা ট্রমার মধ্যে আছে। অবশ্য সেটাই স্বাভাবিক। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা একজন মানুষের স্বাভাবিক হতে সময় তো লাগবেই।

মহান আল্লাহ আবিদকে পুরোপুরি সুস্থ করে দিক। এই প্রার্থনা সব সময় থাকবে।

লেখক: যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক।

Please Share This Post in Your Social Media


আবিদের বেঁচে থাকাটাই এক বিস্ময়

Update Time : ০১:১৫:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩

রিয়াজুল হক:

কয়েকদিন আগে খুলনা থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে শিবচরে ভয়াবহ এক বাস দুর্ঘটনা ঘটে। বিশজন মানুষ স্পট ডেড। ভাবুন একবার, কতটা ভয়ংকর দুর্ঘটনা!

দুর্ঘটনার পরপরই আমার ছোট ভাই জহির আমাকে জানালো, ওই বাসে আবিদ নামে আমাদের স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তন ছাত্র ছিল। তবে সে বেঁচে আছে। ভাবলাম, একই স্কুল কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র হলে আমার ফেসবুকের ফ্রেন্ড লিস্টে থাকার কথা। পেয়েও গেলাম। বেশ জুনিয়র হওয়ার কারণে আগে কখনও কথা হয়নি।

দুর্ঘটনার পর গতকাল রাতে আবিদের সাথে আমার কথা হলো।

ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনার সময় আবিদ ‘ডি’ সিরিয়ালের সিটে বসেছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, দুর্ঘটনায় বাসের সামনের দিকের যাত্রী মারা গেছে নাকি পেছনের দিকের?

No description available.

আবিদ জানাল- ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’, ‘ডি’, ‘ই’ সিরিয়ালের সব যাত্রী মারা গেছে। শুধুমাত্র ‘ডি’ সিরিয়ালের যাত্রী হয়েও সে বেঁচে আছে। ওর কথা শুনেই মনে হচ্ছিল, আবিদের বেঁচে থাকাটাই তো এক বিস্ময়। রাখে আল্লাহ, মারে কে?

আরো বড় বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, তার বড় ধরণের বিপর্যয় ঘটেনি, যেখানে মৃত্যুই ছিল খুব সাধারণ একটা ব্যাপার। বেশ কয়েকজনের মারাত্মকভাবে অঙ্গহানি হয়েছে। তবে আবিদের একটা দাঁত ভেঙে গেছে।

দুর্ঘটনার পর বাসার লোকজন দুর্ঘটনাস্থল শিবচর থেকে আবিদকে খুলনায় নিয়ে আসে এবং একটি হাসপাতালে ভর্তি করে। কয়েকদিন হাসপাতালে ছিল। এখন ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছে। ডাক্তারের কড়া নির্দেশ বেড রেস্ট নিতে হবে।

তবে আবিদের সাথে কথা বলে বুঝলাম, দুর্ঘটনার পর সে একটা ট্রমার মধ্যে আছে। অবশ্য সেটাই স্বাভাবিক। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা একজন মানুষের স্বাভাবিক হতে সময় তো লাগবেই।

মহান আল্লাহ আবিদকে পুরোপুরি সুস্থ করে দিক। এই প্রার্থনা সব সময় থাকবে।

লেখক: যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক।