বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংককে সাহায্য করতেই হবে: অর্থমন্ত্রী

  • Update Time : ১২:৩৭:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৩
  • / 166

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংককে সাহায্য করতেই হবে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। যাই হোক না কেন বিশ্বব্যাংক এ ব্যাপারে অস্বীকৃতি জানাতে পারবে না বলেও উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী।

রোববার বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) অ্যাক্সেল ভান ট্রটসেনবার্গ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাংকের মধ্যে অংশীদারত্ব সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তার সঙ্গে ছিলেন সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার। সেখানে অর্থমন্ত্রী একথা বলেন। অর্থ মন্ত্রণালয় ও বিশ্বব্যাংক যৌথভাবে এই উদযাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে আপনাদেরকে সাহায্য করতেই হবে। আপনারা না করতে পারবেন না।’

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে সহায়তাকারী প্রথম উন্নয়ন সহযোগী বিশ্বব্যাংক। তারপর থেকে এই দাতা সংস্থাটি প্রায় ৩৯ বিলিয়ন ঋণ সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যার বেশির ভাগই অনুদান বা রেয়াতি ঋণের (কম সুদে)। বাংলাদেশে বর্তমানে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) বৃহত্তম চলমান কর্মসূচি রয়েছে।

পদ্মাসেতুতে কথিত দুর্নীতির অভিযোগ আসার পর বিশ্ব আর্থিক খাতের এই মোড়ল সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কিছুটা শীতল হয়ে পড়েছিল। যদিও দুর্নীতির অভিযোগ বারবার নাকচ করেছে সরকার। এ নিয়ে কানাডার আদালতে হওয়া মামলায়ও দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যদিও তার আগেই দেশের এই মেগাপ্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করার ঘোষণা দেয়।

বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন বাতিলের ঘোষণায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায় সরকার। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ওয়াশিংটনভিত্তিক বহুজাতিক এই সংস্থার সমালোচনা আসে। তখনই ২০১২ সালের ৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে প্রয়োজনে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন।

এদিকে শনিবার বিশ্বব্যাংকের এমডি ঢাকায় পৌঁছে সাক্ষাত করতে গেলে অর্থমন্ত্রীর দেশের মেগাপ্রকল্পে অর্থায়ন করতে প্রতিষ্ঠানটির প্রতি ‘অনুরোধ’ করেন।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের ওই অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংক এমডি ভন ট্রটসেনবার্গ বলেন, ‘বাংলাদেশ তিনটি বিষয়ে খুব ভালো করেছে। নারীর ক্ষমতায়ন, মানুষের উপর বিনিয়োগ এবং পরিবেশ। তবে বাংলাদেশকে আরও ভালো করতে হবে। ২০৩১ সালের মধ্যে মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক আহমদ কায়কাউস, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সাবেক সভাপতি নিহাদ কবির, গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) আহসান এইচ মনসুর এবং বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান মাল্টিলেটারাল ইনভেস্টমেন্ট গ্যারান্টি এজেন্সির (মিগা) ভাইস প্রেসিডেন্ট জুনায়েদ কামাল আহমদ বক্তব্য রাখেন।

উদযাপন অনুষ্ঠানের ফাঁকে সম্মেলন কেন্দ্রটির কার্নিভাল হলে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী এবং বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক যৌথভাবে একটি মাল্টিমিডিয়া ফটো প্রদর্শনী ‘এ জার্নি টুগেদার’ উদ্বোধন করেন। প্রদর্শনীটি রোববার রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে।

বাংলাদেশের উন্নয়ন নিজ চোখে দেখতেই বিশ্ব আর্থিক খাতের মোড়ল সংস্থা বিশ্বব্যাংকের এমডি ঢাকায় এসেছেন। বাংলাদেশে এটিই তার প্রথম আনুষ্ঠানিক সফর।

তিন দিনের এই সফরে ট্রটসেনবার্গ বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে অংশীদারত্ব সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি এবং বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন অর্জন উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। ২৪ জানুয়ারি রাতে তিনি ঢাকা ছাড়বেন বলে জানা যায়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংককে সাহায্য করতেই হবে: অর্থমন্ত্রী

Update Time : ১২:৩৭:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংককে সাহায্য করতেই হবে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। যাই হোক না কেন বিশ্বব্যাংক এ ব্যাপারে অস্বীকৃতি জানাতে পারবে না বলেও উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী।

রোববার বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) অ্যাক্সেল ভান ট্রটসেনবার্গ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাংকের মধ্যে অংশীদারত্ব সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তার সঙ্গে ছিলেন সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার। সেখানে অর্থমন্ত্রী একথা বলেন। অর্থ মন্ত্রণালয় ও বিশ্বব্যাংক যৌথভাবে এই উদযাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে আপনাদেরকে সাহায্য করতেই হবে। আপনারা না করতে পারবেন না।’

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে সহায়তাকারী প্রথম উন্নয়ন সহযোগী বিশ্বব্যাংক। তারপর থেকে এই দাতা সংস্থাটি প্রায় ৩৯ বিলিয়ন ঋণ সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যার বেশির ভাগই অনুদান বা রেয়াতি ঋণের (কম সুদে)। বাংলাদেশে বর্তমানে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) বৃহত্তম চলমান কর্মসূচি রয়েছে।

পদ্মাসেতুতে কথিত দুর্নীতির অভিযোগ আসার পর বিশ্ব আর্থিক খাতের এই মোড়ল সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কিছুটা শীতল হয়ে পড়েছিল। যদিও দুর্নীতির অভিযোগ বারবার নাকচ করেছে সরকার। এ নিয়ে কানাডার আদালতে হওয়া মামলায়ও দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যদিও তার আগেই দেশের এই মেগাপ্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করার ঘোষণা দেয়।

বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন বাতিলের ঘোষণায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায় সরকার। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ওয়াশিংটনভিত্তিক বহুজাতিক এই সংস্থার সমালোচনা আসে। তখনই ২০১২ সালের ৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে প্রয়োজনে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন।

এদিকে শনিবার বিশ্বব্যাংকের এমডি ঢাকায় পৌঁছে সাক্ষাত করতে গেলে অর্থমন্ত্রীর দেশের মেগাপ্রকল্পে অর্থায়ন করতে প্রতিষ্ঠানটির প্রতি ‘অনুরোধ’ করেন।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের ওই অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংক এমডি ভন ট্রটসেনবার্গ বলেন, ‘বাংলাদেশ তিনটি বিষয়ে খুব ভালো করেছে। নারীর ক্ষমতায়ন, মানুষের উপর বিনিয়োগ এবং পরিবেশ। তবে বাংলাদেশকে আরও ভালো করতে হবে। ২০৩১ সালের মধ্যে মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক আহমদ কায়কাউস, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সাবেক সভাপতি নিহাদ কবির, গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) আহসান এইচ মনসুর এবং বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান মাল্টিলেটারাল ইনভেস্টমেন্ট গ্যারান্টি এজেন্সির (মিগা) ভাইস প্রেসিডেন্ট জুনায়েদ কামাল আহমদ বক্তব্য রাখেন।

উদযাপন অনুষ্ঠানের ফাঁকে সম্মেলন কেন্দ্রটির কার্নিভাল হলে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী এবং বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক যৌথভাবে একটি মাল্টিমিডিয়া ফটো প্রদর্শনী ‘এ জার্নি টুগেদার’ উদ্বোধন করেন। প্রদর্শনীটি রোববার রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে।

বাংলাদেশের উন্নয়ন নিজ চোখে দেখতেই বিশ্ব আর্থিক খাতের মোড়ল সংস্থা বিশ্বব্যাংকের এমডি ঢাকায় এসেছেন। বাংলাদেশে এটিই তার প্রথম আনুষ্ঠানিক সফর।

তিন দিনের এই সফরে ট্রটসেনবার্গ বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে অংশীদারত্ব সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি এবং বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন অর্জন উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। ২৪ জানুয়ারি রাতে তিনি ঢাকা ছাড়বেন বলে জানা যায়।