বাড়ছে চায়না আদা-রসুনের দাম

  • Update Time : ০২:২৫:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৩
  • / 170

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

দেশের অন্যতম বৃহত্তম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে এক সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি চায়না আদা বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকায়। সপ্তাহ পার না হতেই গত মঙ্গলবার সেই আদা বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। মাত্র চার দিনের ব্যবধানেই কেজিতে দাম বেড়ে গেছে ১৫ টাকা। আড়তদাররা জানিয়েছেন, বাজারে চায়না আদার সংকট রয়েছে, তাই দাম বাড়ছে। আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, চীনেই আদার দাম বেড়ে গেছে; যার প্রভাব পড়েছে এখানে। তাই বাজারে আদার দাম বাড়ছে।

শুধু চায়না আদা নয়, বাজারে বেড়েছে চায়না রসুনের দামও। আড়তদাররা জানিয়েছেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে চায়না রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে অন্তত ১০ টাকা। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হয়েছে ৮০-৮৫ টাকায়। আর মঙ্গলবার তা বিক্রি হয়েছে ৯৩ থেকে ৯৫ টাকায়।

জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের মেসার্স এএইচ ট্রেডার্সের মালিক আহসান খালেদ বলেন, ‘এক মাস ধরে চায়না আদার দাম ঊর্ধ্বমুখী। তবে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে গত এক সপ্তাহে। সাত দিনের ব্যবধানে কেজিতে অন্তত ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। এর পরও বাজারে চায়না আদা নেই। সবাই এখন মিয়ানমারের আদা বিক্রি করছে। দাম কম থাকায় অনেকে এখন মিয়ানমার থেকে আদা আমদানি করছেন।’

মঙ্গলবার খাদ্যপণ্যের অন্যতম বাজার খাতুনগঞ্জ ঘুরে দেখা যায়, পেঁয়াজ, রসুনের আড়তগুলোয় খুব বেশি চায়না আদা নেই। কয়েকটি আড়তে থাকলেও তা পরিমাণে ছিল অনেক কম। তবে প্রায় প্রতি আড়তেই মিয়ানমারের আদা দেখা গেছে। আড়তদাররা জানিয়েছেন, বাজারে এখন মিয়ানমারের প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা। তাই বাজারে এখন মিয়ানমারের আদার সরবরাহ বেশি। সরবরাহ বেশি হলেও মান তুলনামূলক খারাপ হওয়ায় চায়না আদার চাহিদাই বেশি।

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, ‘বাজারে চায়না আদার সরবরাহ অনেক কম; তাই যাদের কাছে আছে তারা বেশি দামে বিক্রি করছেন। রসুনের দামও বাড়তি। আমদানিকারকরা চায়না আদা আমদানি করছেন না, তাই দাম বেড়ে যাচ্ছে।’

তবে আমদানিকারকরা বলছেন, চীনে আদার দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই আমদানি করছেন না। বেশি দামে আমদানি করলে লোকসানে পড়তে পারেন, তাই আমদানিকারকরা বিকল্প উৎস থেকে আদা আমদানি করছেন। অনেক আমদানিকারক এখন চায়না আদার পরিবর্তে মিয়ানমার এবং ভারতের কেরালা থেকে আদা আমদানি করছেন। যে কারণে বাজারে এখন মিয়ানমারের আদার সরবরাহ বেড়েছে। খাতুনগঞ্জের প্রতিটি আড়তই এখন মিয়ানমারের আদায় সয়লাব। মঙ্গলবার সরেজমিনেও এমন চিত্র দেখা গেছে।

দাম বাড়ার কার‌ণ জানতে চাইলে আমদানিকারক আবদুল মান্নান শাকিল বলেন, ‘চীনেই আদার দাম বেড়ে গেছে। প্রতি টন আমদানিতে খরচ পড়ছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ ডলার। সে হিসেবে আমদানিতেই ১ কেজি চায়না আদার দাম পড়ে যাচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। অথচ খাতুনগঞ্জে এখন প্রতি কেজি চায়না আদা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আগে যেগুলো আমদানি করেছি, সেগুলোর দাম ছিল ৯০০ থেকে ৯৫০ ডলার। ওই আদা দেশে আসতে কেজিতে খরচ পড়ে ১২০ টাকার মতো, মূলত সেগুলোই এখন বাজারে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন কেউ এলসি করতে চাইছে না; তাই বাজারে চায়না আদার সরবরাহ কম।’

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


বাড়ছে চায়না আদা-রসুনের দাম

Update Time : ০২:২৫:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

দেশের অন্যতম বৃহত্তম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে এক সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি চায়না আদা বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকায়। সপ্তাহ পার না হতেই গত মঙ্গলবার সেই আদা বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। মাত্র চার দিনের ব্যবধানেই কেজিতে দাম বেড়ে গেছে ১৫ টাকা। আড়তদাররা জানিয়েছেন, বাজারে চায়না আদার সংকট রয়েছে, তাই দাম বাড়ছে। আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, চীনেই আদার দাম বেড়ে গেছে; যার প্রভাব পড়েছে এখানে। তাই বাজারে আদার দাম বাড়ছে।

শুধু চায়না আদা নয়, বাজারে বেড়েছে চায়না রসুনের দামও। আড়তদাররা জানিয়েছেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে চায়না রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে অন্তত ১০ টাকা। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হয়েছে ৮০-৮৫ টাকায়। আর মঙ্গলবার তা বিক্রি হয়েছে ৯৩ থেকে ৯৫ টাকায়।

জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের মেসার্স এএইচ ট্রেডার্সের মালিক আহসান খালেদ বলেন, ‘এক মাস ধরে চায়না আদার দাম ঊর্ধ্বমুখী। তবে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে গত এক সপ্তাহে। সাত দিনের ব্যবধানে কেজিতে অন্তত ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। এর পরও বাজারে চায়না আদা নেই। সবাই এখন মিয়ানমারের আদা বিক্রি করছে। দাম কম থাকায় অনেকে এখন মিয়ানমার থেকে আদা আমদানি করছেন।’

মঙ্গলবার খাদ্যপণ্যের অন্যতম বাজার খাতুনগঞ্জ ঘুরে দেখা যায়, পেঁয়াজ, রসুনের আড়তগুলোয় খুব বেশি চায়না আদা নেই। কয়েকটি আড়তে থাকলেও তা পরিমাণে ছিল অনেক কম। তবে প্রায় প্রতি আড়তেই মিয়ানমারের আদা দেখা গেছে। আড়তদাররা জানিয়েছেন, বাজারে এখন মিয়ানমারের প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা। তাই বাজারে এখন মিয়ানমারের আদার সরবরাহ বেশি। সরবরাহ বেশি হলেও মান তুলনামূলক খারাপ হওয়ায় চায়না আদার চাহিদাই বেশি।

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, ‘বাজারে চায়না আদার সরবরাহ অনেক কম; তাই যাদের কাছে আছে তারা বেশি দামে বিক্রি করছেন। রসুনের দামও বাড়তি। আমদানিকারকরা চায়না আদা আমদানি করছেন না, তাই দাম বেড়ে যাচ্ছে।’

তবে আমদানিকারকরা বলছেন, চীনে আদার দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই আমদানি করছেন না। বেশি দামে আমদানি করলে লোকসানে পড়তে পারেন, তাই আমদানিকারকরা বিকল্প উৎস থেকে আদা আমদানি করছেন। অনেক আমদানিকারক এখন চায়না আদার পরিবর্তে মিয়ানমার এবং ভারতের কেরালা থেকে আদা আমদানি করছেন। যে কারণে বাজারে এখন মিয়ানমারের আদার সরবরাহ বেড়েছে। খাতুনগঞ্জের প্রতিটি আড়তই এখন মিয়ানমারের আদায় সয়লাব। মঙ্গলবার সরেজমিনেও এমন চিত্র দেখা গেছে।

দাম বাড়ার কার‌ণ জানতে চাইলে আমদানিকারক আবদুল মান্নান শাকিল বলেন, ‘চীনেই আদার দাম বেড়ে গেছে। প্রতি টন আমদানিতে খরচ পড়ছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ ডলার। সে হিসেবে আমদানিতেই ১ কেজি চায়না আদার দাম পড়ে যাচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। অথচ খাতুনগঞ্জে এখন প্রতি কেজি চায়না আদা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আগে যেগুলো আমদানি করেছি, সেগুলোর দাম ছিল ৯০০ থেকে ৯৫০ ডলার। ওই আদা দেশে আসতে কেজিতে খরচ পড়ে ১২০ টাকার মতো, মূলত সেগুলোই এখন বাজারে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন কেউ এলসি করতে চাইছে না; তাই বাজারে চায়না আদার সরবরাহ কম।’