সংসদ ভবন ও বায়তুল মোকাররমে শুটিং করতে চান ফারুকী

  • Update Time : ০৩:৩৬:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / 189

বিনোদন ডেস্কঃ 

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন ও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে শুটিং করতে চান খ্যাতিমান নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। কেবল তিনি নন, তার মতে, এমন আইকনিক স্থানগুলো যেকোনো শুটিংয়ের জন্য উন্মুক্ত করা উচিৎ। এতে দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য আরও সুন্দরভাবে ফুটে উঠবে।

ফেসবুকে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এই দাবি তুলেছেন ফারুকী। অস্ট্রেলিয়ার উদাহরণ টেনে এই নির্মাতা জানান, বিভিন্ন মিডিয়ায় সিডনি ওপেরা হাউজ ও হারবার ব্রিজের চিত্র এতো বেশি উঠে এসেছে যে, এখন অস্ট্রেলিয়ার নাম উচ্চারিত হলেই সবার চোখে এগুলোর ছবি ভাসে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া সরকার যদি এসব স্থানে ছবি তোলা কিংবা শুটিং নিষিদ্ধ রাখত, এমনটা হতো না।

ফারুকী লিখেছেন, “আমাদের একটা সংসদ ভবন আছে। যেটা সারা পৃথিবীতে একটা আইকনিক স্ট্রাকচার হিসাবে আমরা হাজির করতে পারতাম। কিন্তু আপনি সেখানে শ্যুট করতে পারবেন না কারণ সেটা কেপিআই জোন। বিশেষ অনুমতি নিয়ে শ্যুট করা সম্ভব যেটা অনেকের পক্ষেই পাওয়া কঠিন। তাই বলি, আপনি আপনার দেশের সেরা জায়গাগুলোতে যদি শ্যুট না করতে দেন, তাহলে তো আপনার আফসোস করা উচিত না যে ‘তোমরা বাংলাদেশকে প্রপারলি দেখাও না’।”

আরও একটি বিষয় তুলে ধরেছেন ফারুকী। হিন্দু কিংবা খ্রিষ্ট ধর্মের অনুষ্ঠানগুলো বাইরের নির্মাতারা কত নান্দনিক রূপে তুলে ধরেন। কিন্তু বাংলাদেশে মুসলিমদের ধর্মীয় আচার সেভাবে পর্দায় আসে না। ফারুকীর প্রশ্ন, ‘আমার একটা দৃশ্যের জন্য বায়তুল মোকাররম মসজিদের ভেতরে শ্যুট করা দরকার, যেখানে দেখা যাবে হাজার হাজার লোক একসাথে জুমা আদায় করছে। একটু জোগাড় করে দিতে পারবেন? আপনি মসজিদে শ্যুট করতে দেবেন না, কিন্তু চাইবেন আপনার ধর্মের সুন্দর রিচুয়ালগুলা মানুষ জানুক, সেটা কিভাবে হবে?’

‘টেলিভিশন’ খ্যাত এই নির্মাতা আরও লিখেছেন, ‘আপনার প্রার্থনার সুন্দর এবং পবিত্র জায়গার ছবি তুলে প্রচারের মাধ্যমে সেটার সৌন্দর্য কমে না, পবিত্রতাও কমে না। বরং অনেকের কাছে সে সৌন্দর্য পৌঁছানোর একটা রাস্তা হয়। সংসদ ভবন বা এইরকম বিশেষ স্থাপনার ছবি তুলে প্রচারের মাধ্যমে এর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় না। আজকাল গুগল ম্যাপেই সব টার্গেট দেখা যায়। শ্যুটিংয়ের ফুটেজ থেকে ছবি নিয়ে নিরাপত্তার প্রতি হুমকি তৈরি করতে হয় না।’

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কীভাবে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে শুটিংয়ের বন্দোবস্ত হয়, সেটা জানিয়ে ফারুকী লিখেছেন, ‘দয়া করে শুটিংয়ের জন্য সব কিছু উন্মুক্ত করে দেন। একটা ফিল্ম কমিশন গঠন করেন যেখানে লোকেশন সার্ভিস ডেস্ক থাকবে। যার যেখানে শ্যুট করা প্রয়োজন সেটা উল্লেখ করে ওই কমিশনে আবেদন করবে। সাথে নির্ধারিত ফি-ও জমা দেবে। এবং তিন কার্য দিবসের মধ্যে তাদের অনুমতি দিয়ে দেওয়া হবে। সাথে ধরিয়ে দিতে পারেন লোকেশনের স্পেপিসিক নিয়ম কানুন। ব্যস, সব কিছু সুন্দর একটা সিস্টেমে চলে আসলো। সারা পৃথিবীতেই এই ফিল্ম কমিশন এবং লোকেশন সার্ভিস ডেস্ক আছে। দয়া করে আমাদের এখানেও এটা চালু করেন।’

প্রসঙ্গত, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী দুটি নতুন সিনেমা সম্পন্ন করে রেখেছেন। এগুলো হলো ‘শনিবার বিকেল’ ও ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’। দুটি সিনেমাই বিশ্বের বিভিন্ন উৎসবে পুরস্কৃত ও প্রশংসিত হয়েছে। তবে দেশে এখনো মুক্তি পায়নি।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


সংসদ ভবন ও বায়তুল মোকাররমে শুটিং করতে চান ফারুকী

Update Time : ০৩:৩৬:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২

বিনোদন ডেস্কঃ 

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন ও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে শুটিং করতে চান খ্যাতিমান নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। কেবল তিনি নন, তার মতে, এমন আইকনিক স্থানগুলো যেকোনো শুটিংয়ের জন্য উন্মুক্ত করা উচিৎ। এতে দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য আরও সুন্দরভাবে ফুটে উঠবে।

ফেসবুকে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এই দাবি তুলেছেন ফারুকী। অস্ট্রেলিয়ার উদাহরণ টেনে এই নির্মাতা জানান, বিভিন্ন মিডিয়ায় সিডনি ওপেরা হাউজ ও হারবার ব্রিজের চিত্র এতো বেশি উঠে এসেছে যে, এখন অস্ট্রেলিয়ার নাম উচ্চারিত হলেই সবার চোখে এগুলোর ছবি ভাসে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া সরকার যদি এসব স্থানে ছবি তোলা কিংবা শুটিং নিষিদ্ধ রাখত, এমনটা হতো না।

ফারুকী লিখেছেন, “আমাদের একটা সংসদ ভবন আছে। যেটা সারা পৃথিবীতে একটা আইকনিক স্ট্রাকচার হিসাবে আমরা হাজির করতে পারতাম। কিন্তু আপনি সেখানে শ্যুট করতে পারবেন না কারণ সেটা কেপিআই জোন। বিশেষ অনুমতি নিয়ে শ্যুট করা সম্ভব যেটা অনেকের পক্ষেই পাওয়া কঠিন। তাই বলি, আপনি আপনার দেশের সেরা জায়গাগুলোতে যদি শ্যুট না করতে দেন, তাহলে তো আপনার আফসোস করা উচিত না যে ‘তোমরা বাংলাদেশকে প্রপারলি দেখাও না’।”

আরও একটি বিষয় তুলে ধরেছেন ফারুকী। হিন্দু কিংবা খ্রিষ্ট ধর্মের অনুষ্ঠানগুলো বাইরের নির্মাতারা কত নান্দনিক রূপে তুলে ধরেন। কিন্তু বাংলাদেশে মুসলিমদের ধর্মীয় আচার সেভাবে পর্দায় আসে না। ফারুকীর প্রশ্ন, ‘আমার একটা দৃশ্যের জন্য বায়তুল মোকাররম মসজিদের ভেতরে শ্যুট করা দরকার, যেখানে দেখা যাবে হাজার হাজার লোক একসাথে জুমা আদায় করছে। একটু জোগাড় করে দিতে পারবেন? আপনি মসজিদে শ্যুট করতে দেবেন না, কিন্তু চাইবেন আপনার ধর্মের সুন্দর রিচুয়ালগুলা মানুষ জানুক, সেটা কিভাবে হবে?’

‘টেলিভিশন’ খ্যাত এই নির্মাতা আরও লিখেছেন, ‘আপনার প্রার্থনার সুন্দর এবং পবিত্র জায়গার ছবি তুলে প্রচারের মাধ্যমে সেটার সৌন্দর্য কমে না, পবিত্রতাও কমে না। বরং অনেকের কাছে সে সৌন্দর্য পৌঁছানোর একটা রাস্তা হয়। সংসদ ভবন বা এইরকম বিশেষ স্থাপনার ছবি তুলে প্রচারের মাধ্যমে এর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় না। আজকাল গুগল ম্যাপেই সব টার্গেট দেখা যায়। শ্যুটিংয়ের ফুটেজ থেকে ছবি নিয়ে নিরাপত্তার প্রতি হুমকি তৈরি করতে হয় না।’

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কীভাবে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে শুটিংয়ের বন্দোবস্ত হয়, সেটা জানিয়ে ফারুকী লিখেছেন, ‘দয়া করে শুটিংয়ের জন্য সব কিছু উন্মুক্ত করে দেন। একটা ফিল্ম কমিশন গঠন করেন যেখানে লোকেশন সার্ভিস ডেস্ক থাকবে। যার যেখানে শ্যুট করা প্রয়োজন সেটা উল্লেখ করে ওই কমিশনে আবেদন করবে। সাথে নির্ধারিত ফি-ও জমা দেবে। এবং তিন কার্য দিবসের মধ্যে তাদের অনুমতি দিয়ে দেওয়া হবে। সাথে ধরিয়ে দিতে পারেন লোকেশনের স্পেপিসিক নিয়ম কানুন। ব্যস, সব কিছু সুন্দর একটা সিস্টেমে চলে আসলো। সারা পৃথিবীতেই এই ফিল্ম কমিশন এবং লোকেশন সার্ভিস ডেস্ক আছে। দয়া করে আমাদের এখানেও এটা চালু করেন।’

প্রসঙ্গত, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী দুটি নতুন সিনেমা সম্পন্ন করে রেখেছেন। এগুলো হলো ‘শনিবার বিকেল’ ও ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’। দুটি সিনেমাই বিশ্বের বিভিন্ন উৎসবে পুরস্কৃত ও প্রশংসিত হয়েছে। তবে দেশে এখনো মুক্তি পায়নি।