সুবর্ণচরে ভোটের রাতে দলবদ্ধ ধর্ষণ: ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন ৬

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০২:১০:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৩৬ Time View

পাঁচ বছর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় ১০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন আদালত। সেই সঙ্গে অপর ৬ আসামিকে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও তাদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস ১৫ জন আসামির উপস্থিতিতে আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। এর আগে সকাল ১১টা থেকে পুরো রায় পড়া শুরু করেন বিচারক।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সুবর্ণচর উপজেলার মধ্যম বাগ্যা গ্রামের মো. সোহেল (৩৮), মো. হানিফ (৩০), স্বপন (৪২), মো. চৌধুরী (২৫), ইব্রাহীম খলিল বেচু (২৫), মো. বাদশা আলম বসু (৪০), আবুল হোসেন আবু (৪০), মোশারফ (৩৫), মো. সালাউদ্দিন (৩২), মো. জসিম উদ্দিন (৩২), মো. হাসান আলী বুলু (৪৫), মো. মুরাদ (২৮), মো. জামাল ওরফে হেঞ্জু মাঝি (২৮) ও মো. সোহেল (২৮)। এরমধ্যে আসামি মো. মিন্টু ওরফে হেলাল (২৮) ঘটনার পর থেকেই পলাতক।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, এ মামলায় যদি প্রত্যেক আসামির শাস্তি না হয়, তাহলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা আরও বেড়ে যাবে। আসামিরা শুধু ভিকটিমের ক্ষতি করেনি, পুরো রাষ্ট্রের ক্ষতি করেছে। এ রায়ের মধ্যদিয়ে ভবিষ্যতে অপরাধ প্রবণতা কমবে বলে মনে করেন আদালত।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে গৃহবধূকে (৪০) মারধর ছাড়াও দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। নির্যাতনের শিকার ওই নারী চার সন্তানের জননী। তার অভিযোগ, ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেয়ার জের ধরে ওই হামলা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। সে সময় ঘটনাটি দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়।

ওই ঘটনার পরদিন (৩১ ডিসেম্বর) নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী বাদী হয়ে চর জব্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে মামলার তদন্ত শেষে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

সুবর্ণচরে ভোটের রাতে দলবদ্ধ ধর্ষণ: ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন ৬

Update Time : ০২:১০:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

পাঁচ বছর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় ১০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন আদালত। সেই সঙ্গে অপর ৬ আসামিকে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও তাদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস ১৫ জন আসামির উপস্থিতিতে আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। এর আগে সকাল ১১টা থেকে পুরো রায় পড়া শুরু করেন বিচারক।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সুবর্ণচর উপজেলার মধ্যম বাগ্যা গ্রামের মো. সোহেল (৩৮), মো. হানিফ (৩০), স্বপন (৪২), মো. চৌধুরী (২৫), ইব্রাহীম খলিল বেচু (২৫), মো. বাদশা আলম বসু (৪০), আবুল হোসেন আবু (৪০), মোশারফ (৩৫), মো. সালাউদ্দিন (৩২), মো. জসিম উদ্দিন (৩২), মো. হাসান আলী বুলু (৪৫), মো. মুরাদ (২৮), মো. জামাল ওরফে হেঞ্জু মাঝি (২৮) ও মো. সোহেল (২৮)। এরমধ্যে আসামি মো. মিন্টু ওরফে হেলাল (২৮) ঘটনার পর থেকেই পলাতক।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, এ মামলায় যদি প্রত্যেক আসামির শাস্তি না হয়, তাহলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা আরও বেড়ে যাবে। আসামিরা শুধু ভিকটিমের ক্ষতি করেনি, পুরো রাষ্ট্রের ক্ষতি করেছে। এ রায়ের মধ্যদিয়ে ভবিষ্যতে অপরাধ প্রবণতা কমবে বলে মনে করেন আদালত।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে গৃহবধূকে (৪০) মারধর ছাড়াও দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। নির্যাতনের শিকার ওই নারী চার সন্তানের জননী। তার অভিযোগ, ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেয়ার জের ধরে ওই হামলা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। সে সময় ঘটনাটি দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়।

ওই ঘটনার পরদিন (৩১ ডিসেম্বর) নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী বাদী হয়ে চর জব্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে মামলার তদন্ত শেষে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।