সাগর পাড়ি দিতে আরও মরিয়া হয়েছে রোহিঙ্গারা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১১:২০:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ১৩৮ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ঝুঁকিপূর্ণ সাগরপথে মিয়ানমার ও বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নৌযাত্রার হার প্রতি বছর ব্যাপকভাবে বাড়ছে।

২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সাল আট বছরে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির ও মিয়ানমারের উপকূল থেকে সাগরপথে রোহিঙ্গাদের নৌযাত্রার হার বেড়েছে ৫ গুণ।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে এ তথ্য।

মূলত ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়াসহ দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিতেই মিয়ানমার ও বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা সাগরপথে পাড়ি জমাচ্ছেন। ইউএনএইচসিআরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ব্যাপক ঝুঁকিপূর্ণ এ যাত্রায় শুধু ২০২২ সালেই আন্দামান সাগর ও বঙ্গোপসাগরে নৌকা ডুবে নিখোঁজ হয়েছেন অন্তত ৩৪৮ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু। এছাড়া ওই বছর যাত্রাপথে খাদ্য-পানীয়র অভাব ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয়েছে আরও ১৮০ জনের।

২০১৭ সালে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে কয়েকটি পুলিশ স্টেশন ও সেনা ছাউনিতে বোমা হামলা করার অভিযোগ ওঠে সশস্ত্র রোহিঙ্গাগোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) বিরুদ্ধে। সেই হামলার জের ধরে বাংলাদেশ- মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে হামলা চালায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের সামনে টিকতে না পেরে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশসহ আশপাশের বিভিন্ন দেশে পালাতে শুরু করে। বাংলাদেশ সরকারের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ‘রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযান’ থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। বর্তমানে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে আছেন তারা।

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা এই রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য ছিল এই দেশের মূল জনস্রোতের সঙ্গে মিশে যাওয়া। কিন্তু তা সম্ভব না হওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের আশ্রয়শিবির থেকেও নৌপথে রোহিঙ্গাদের যাত্রার হার বাড়ছে।

‘কেবলমাত্র নিরাপত্তা, সুরক্ষা, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একটু ভালো দিন যাপনের আশায় এসব রোহিঙ্গারা এমন বেপরোয়া ঝুঁকি নিচ্ছেন। তারা এখন বেশ ভালোভাবেই বোঝেন— মিয়ানমার- বাংলাদেশে তাদের কোনো ভবিষ্যত নেই,’ বলা হয়েছে ইউএনএইচসিআরের বিবৃতিতে।

সূত্র : রয়টার্স

Please Share This Post in Your Social Media

সাগর পাড়ি দিতে আরও মরিয়া হয়েছে রোহিঙ্গারা

Update Time : ১১:২০:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ঝুঁকিপূর্ণ সাগরপথে মিয়ানমার ও বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নৌযাত্রার হার প্রতি বছর ব্যাপকভাবে বাড়ছে।

২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সাল আট বছরে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির ও মিয়ানমারের উপকূল থেকে সাগরপথে রোহিঙ্গাদের নৌযাত্রার হার বেড়েছে ৫ গুণ।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে এ তথ্য।

মূলত ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়াসহ দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিতেই মিয়ানমার ও বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা সাগরপথে পাড়ি জমাচ্ছেন। ইউএনএইচসিআরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ব্যাপক ঝুঁকিপূর্ণ এ যাত্রায় শুধু ২০২২ সালেই আন্দামান সাগর ও বঙ্গোপসাগরে নৌকা ডুবে নিখোঁজ হয়েছেন অন্তত ৩৪৮ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু। এছাড়া ওই বছর যাত্রাপথে খাদ্য-পানীয়র অভাব ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয়েছে আরও ১৮০ জনের।

২০১৭ সালে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে কয়েকটি পুলিশ স্টেশন ও সেনা ছাউনিতে বোমা হামলা করার অভিযোগ ওঠে সশস্ত্র রোহিঙ্গাগোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) বিরুদ্ধে। সেই হামলার জের ধরে বাংলাদেশ- মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে হামলা চালায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের সামনে টিকতে না পেরে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশসহ আশপাশের বিভিন্ন দেশে পালাতে শুরু করে। বাংলাদেশ সরকারের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ‘রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযান’ থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। বর্তমানে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে আছেন তারা।

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা এই রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য ছিল এই দেশের মূল জনস্রোতের সঙ্গে মিশে যাওয়া। কিন্তু তা সম্ভব না হওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের আশ্রয়শিবির থেকেও নৌপথে রোহিঙ্গাদের যাত্রার হার বাড়ছে।

‘কেবলমাত্র নিরাপত্তা, সুরক্ষা, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একটু ভালো দিন যাপনের আশায় এসব রোহিঙ্গারা এমন বেপরোয়া ঝুঁকি নিচ্ছেন। তারা এখন বেশ ভালোভাবেই বোঝেন— মিয়ানমার- বাংলাদেশে তাদের কোনো ভবিষ্যত নেই,’ বলা হয়েছে ইউএনএইচসিআরের বিবৃতিতে।

সূত্র : রয়টার্স