মেসি-নেইমারের জন্য প্যারিস ছিল ‘নরক’

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০১:২১:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ১২০ Time View

স্পোর্টস ডেস্ক

আর্জেন্টিনার ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসি ও ব্রাজিলের তারকা স্ট্রাইকার নেইমারের বন্ধুত্ব বেশ পুরোনো। নেইমার বার্সেলোনায় আসার পরে যার শুরু। মাঝখানে নেইমার পিএসজিতে চলে গেলেও সেই বন্ধুত্বে ভাটা পড়েনি। পরে ২০২১ সালে প্যারিসে আবার দুজনে এক হন। স্বপ্ন ছিল পিএসজিকে সাফল্য এনে দেওয়ার। কিন্তু সেটি পারেননি মেসি ও নেইমার। উল্টো তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে দুজনের প্যারিস অধ্যায়। সম্প্রতি ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম গ্লোবো এস্পোর্তেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নেইমার কথা বলেন তার ও মেসির প্যারিস অভিজ্ঞতা সম্পর্কে।

বর্তমানে নেইমারের ঠিকানা সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল । বার্সেলোনা ছেড়ে আসার পর দীর্ঘ ছয় বছর প্যারিসের ক্লাবটিতে কাটিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। তবে এত বছরেও ক্লাবটিকে আপন মনে হয়নি তার। আল হিলালে যোগদানের কিছুদিন পরই পিএসজিকে নিয়ে কিছুটা নেতিবাচক মন্তব্য করলেন তিনি।

২০১৭ সালে রেকর্ড দামে বার্সেলোনা থেকে নেইমারকে দলে টেনেছিল পিএসজি। তবে যতটা সাড়া ফেলে প্যারিসের ক্লাবে ভেড়ানো হয়েছিল তাকে, তার খুব একটা প্রতিদান দিতে পারেননি ব্রাজিলিয়ান তারকা। ইনজুরির কারণে বেশির ভাগ সময় সাইডলাইনে থাকার পাশাপাশি মাঠের খেলায়ও দিতে পারেননি সেরাটা।

নেইমারের মতো মেসিও পিএসজিতে খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে গেছেন। ক্লাব কর্তৃক নিষিদ্ধও হয়েছিলেন তিনি। পিএসজি সমর্থকদের দুয়োও নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল! আসলে নেইমার ও মেসি পিএসজিতে কেমন ছিলেন, সেটি আরও পরিষ্কার বোঝা যায় তারা চলে যাওয়ার পর ক্লাবটির সমর্থকদের প্রদর্শন করা দুটি ব্যানারে। গত মাসে শেষ দিকে লাঁসের বিপক্ষে ম্যাচে পিএসজি সমর্থকদের একটি অংশ ব্যানারে লিখে এনেছিল, ‘নেইমার: অবশেষে অসভ্যর হাত থেকে মুক্তি মিলেছে।’ ইন্টার মায়ামির ম্যাচেও পিএসজি সমর্থকরা ডিএনভি পিএনকে স্টেডিয়ামের বাইরে ব্যানার নিয়ে হাজির হয়েছিল। সেখানে লেখা ছিল, ‘মেসি: অবশেষে অসভ্যর হাত থেকে মুক্তি মিলেছে।’

পিএসজির অসভ্য মেসি এখন মায়ামির হয়ে দুর্দান্ত খেলছেন। মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) সর্বশেষ ম্যাচে লস অ্যাঞ্জেলেস এফসির (এলএ এফসি) বিপক্ষে মায়ামির ৩-১ গোলে জয়ের ম্যাচে দুটি গোল করিয়েছেন মেসি। নেইমারের অবশ্য এখনো আল হিলালের হয়ে অভিষেক ঘটেনি। চোট থেকে এখনো পুরোপুরি সেরে ওঠেননি। প্যারিসে মেসির সঙ্গে ফেলে আসা দিনগুলো স্মরণ করে সাক্ষাৎকারে নেইমার বলেছেন, ‘প্যারিসে আমরা নরকবাস করেছি। আমরা সেখানে নিজেদের সেরাটা দিতেই গিয়েছিলাম। চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস গড়তে চেয়েছিলাম। সে জন্যই আমরা (মেসির সঙ্গে) আবার একসঙ্গে খেলা শুরু করেছিলাম। একসঙ্গে ইতিহাস গড়তে চেয়েছিলাম। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা পারিনি।’

আর্জেন্টিনার হয়ে গত ডিসেম্বরে বিশ্বকাপজয়ী মেসিকে নিয়ে নেইমার আলাদা করে বলেছেন, ‘আর্জেন্টিনার হয়ে সে স্বর্গবাস করেছে। তার জন্য খুব আনন্দিত হয়েছিলাম। কিন্তু প্যারিসে সে নরকবাস করেছে। আমার মতে, প্যারিসে তার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। ফুটবলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সে (পিএসজি থেকে) যেভাবে চলে গিয়েছে, সেটি প্রাপ্য ছিল না।’

সান্তোস থেকে তারকাখ্যাতি নিয়ে বেড়ে উঠে ২০১৩ সালে বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছিলেন নেইমার। সেখান থেকে প্যারিস ঘুরে সৌদি আরব হয়ে নেইমারের পরবর্তী গন্তব্য কোথায় হতে পারে? সম্ভবত সান্তোস। নেইমার নিজেই জানিয়েছেন শৈশবের ক্লাবে ফেরার ইচ্ছার কথা, ‘সান্তোসে ফেরার ইচ্ছা আছে। কবে জানি না, তবে ফিরব, এটা নিশ্চিত।’

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

মেসি-নেইমারের জন্য প্যারিস ছিল ‘নরক’

Update Time : ০১:২১:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক

আর্জেন্টিনার ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসি ও ব্রাজিলের তারকা স্ট্রাইকার নেইমারের বন্ধুত্ব বেশ পুরোনো। নেইমার বার্সেলোনায় আসার পরে যার শুরু। মাঝখানে নেইমার পিএসজিতে চলে গেলেও সেই বন্ধুত্বে ভাটা পড়েনি। পরে ২০২১ সালে প্যারিসে আবার দুজনে এক হন। স্বপ্ন ছিল পিএসজিকে সাফল্য এনে দেওয়ার। কিন্তু সেটি পারেননি মেসি ও নেইমার। উল্টো তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে দুজনের প্যারিস অধ্যায়। সম্প্রতি ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম গ্লোবো এস্পোর্তেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নেইমার কথা বলেন তার ও মেসির প্যারিস অভিজ্ঞতা সম্পর্কে।

বর্তমানে নেইমারের ঠিকানা সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল । বার্সেলোনা ছেড়ে আসার পর দীর্ঘ ছয় বছর প্যারিসের ক্লাবটিতে কাটিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। তবে এত বছরেও ক্লাবটিকে আপন মনে হয়নি তার। আল হিলালে যোগদানের কিছুদিন পরই পিএসজিকে নিয়ে কিছুটা নেতিবাচক মন্তব্য করলেন তিনি।

২০১৭ সালে রেকর্ড দামে বার্সেলোনা থেকে নেইমারকে দলে টেনেছিল পিএসজি। তবে যতটা সাড়া ফেলে প্যারিসের ক্লাবে ভেড়ানো হয়েছিল তাকে, তার খুব একটা প্রতিদান দিতে পারেননি ব্রাজিলিয়ান তারকা। ইনজুরির কারণে বেশির ভাগ সময় সাইডলাইনে থাকার পাশাপাশি মাঠের খেলায়ও দিতে পারেননি সেরাটা।

নেইমারের মতো মেসিও পিএসজিতে খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে গেছেন। ক্লাব কর্তৃক নিষিদ্ধও হয়েছিলেন তিনি। পিএসজি সমর্থকদের দুয়োও নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল! আসলে নেইমার ও মেসি পিএসজিতে কেমন ছিলেন, সেটি আরও পরিষ্কার বোঝা যায় তারা চলে যাওয়ার পর ক্লাবটির সমর্থকদের প্রদর্শন করা দুটি ব্যানারে। গত মাসে শেষ দিকে লাঁসের বিপক্ষে ম্যাচে পিএসজি সমর্থকদের একটি অংশ ব্যানারে লিখে এনেছিল, ‘নেইমার: অবশেষে অসভ্যর হাত থেকে মুক্তি মিলেছে।’ ইন্টার মায়ামির ম্যাচেও পিএসজি সমর্থকরা ডিএনভি পিএনকে স্টেডিয়ামের বাইরে ব্যানার নিয়ে হাজির হয়েছিল। সেখানে লেখা ছিল, ‘মেসি: অবশেষে অসভ্যর হাত থেকে মুক্তি মিলেছে।’

পিএসজির অসভ্য মেসি এখন মায়ামির হয়ে দুর্দান্ত খেলছেন। মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) সর্বশেষ ম্যাচে লস অ্যাঞ্জেলেস এফসির (এলএ এফসি) বিপক্ষে মায়ামির ৩-১ গোলে জয়ের ম্যাচে দুটি গোল করিয়েছেন মেসি। নেইমারের অবশ্য এখনো আল হিলালের হয়ে অভিষেক ঘটেনি। চোট থেকে এখনো পুরোপুরি সেরে ওঠেননি। প্যারিসে মেসির সঙ্গে ফেলে আসা দিনগুলো স্মরণ করে সাক্ষাৎকারে নেইমার বলেছেন, ‘প্যারিসে আমরা নরকবাস করেছি। আমরা সেখানে নিজেদের সেরাটা দিতেই গিয়েছিলাম। চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস গড়তে চেয়েছিলাম। সে জন্যই আমরা (মেসির সঙ্গে) আবার একসঙ্গে খেলা শুরু করেছিলাম। একসঙ্গে ইতিহাস গড়তে চেয়েছিলাম। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা পারিনি।’

আর্জেন্টিনার হয়ে গত ডিসেম্বরে বিশ্বকাপজয়ী মেসিকে নিয়ে নেইমার আলাদা করে বলেছেন, ‘আর্জেন্টিনার হয়ে সে স্বর্গবাস করেছে। তার জন্য খুব আনন্দিত হয়েছিলাম। কিন্তু প্যারিসে সে নরকবাস করেছে। আমার মতে, প্যারিসে তার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। ফুটবলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সে (পিএসজি থেকে) যেভাবে চলে গিয়েছে, সেটি প্রাপ্য ছিল না।’

সান্তোস থেকে তারকাখ্যাতি নিয়ে বেড়ে উঠে ২০১৩ সালে বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছিলেন নেইমার। সেখান থেকে প্যারিস ঘুরে সৌদি আরব হয়ে নেইমারের পরবর্তী গন্তব্য কোথায় হতে পারে? সম্ভবত সান্তোস। নেইমার নিজেই জানিয়েছেন শৈশবের ক্লাবে ফেরার ইচ্ছার কথা, ‘সান্তোসে ফেরার ইচ্ছা আছে। কবে জানি না, তবে ফিরব, এটা নিশ্চিত।’