মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে স্পিডবোটে প্রমত্তা মেঘনা পারাপার!

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১১:১৮:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / ১৪৪ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

হাতিয়া (নোয়াখালী) থেকে ফিরে, নোয়াখালীর হাতিয়া চেয়ারম্যান ঘাট-নলছিরা ঘাট নৌ-রুটে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন প্রমত্তা মেঘনা পারাপার হচ্ছেন যাত্রীরা।

প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত এ রুটে দ্রুতগামী স্পিডবোটে চলাচল করেন প্রায় হাজার খানেক মানুষ।

শীত মৌসুমে নদী শান্ত থাকলেও বর্ষা মৌসুমে থাকে উত্তাল। কখনোই এ রুটে স্পিড বোটের যাত্রীদের গায়ে জীবন রক্ষাকারী লাইফ জ্যাকেট দেখা যায় না।

প্রতিটি স্পিডবোটে ১২/১৫ জন যাত্রী বহন করা হলেও লাইফ জ্যাকেট থাকে সাকূল্যে তিন থেকে চারটি। আবার সেগুলো এক পাশে পড়ে থাকে, যাত্রীদের মধ্যেও নেই আগ্রহ।

এ পথে চলাচলকারী একাধিক যাত্রী বলেন, হাতিয়ার মানুষ ভয় করে না। লাইফ জ্যাকেট দিয়ে কী হবে? বিপদ আসলে এমনিতেই মরতে হবে। তখন কেউ রক্ষা করতে পারবে না।

জামশেদ আহমেদ নামে এক যাত্রী বলেন, অনেকটা বাধ্য হয়েই এসব স্পিডবোটে ওঠতে হয়।এ রুটে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের একটি সী ট্রাক রয়েছে। চলাচলের জন্য সেটিই সবচেয়ে নিরাপদ। কিন্তু প্রায় সময় সেটি বন্ধ থাকে। ট্রলারে যেতে হলে এক ঘণ্টারও বেশি সময় রোদে পুড়তে হয়। তাই সময় ও কষ্ট লাগবে মানুষ স্পিড বোটে ওঠে।

হাতিয়া থেকে ফেরার পথে সী-ট্রাকের সোহরাব হোসেন নামে এক পরিচালনাকারীজানান, দীর্ঘদিন আগের এ নৌযানটি মাঝে মাঝেই যান্ত্রিক জটিলতার কারণে বিকল হয়ে যায়। তখন পারাপার বন্ধ থাকে। গত ৩০ আগস্ট থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এটি বন্ধ ছিলো।

তিনি আরও জানান, এখন সী-ট্রাকের যাত্রী অনেক কমে গেছে। যাত্রীরাষ সময় বাঁচাতে এখন স্পিডবোটে বেশি ওঠে, নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে না।

এ পথের যাত্রীরা জানান, চাহিদা থাকায় এখানকার স্পিডবোট মালিকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেন। মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে ভাড়া গুণতে হয় ৪০০ টাকা। যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।

চেয়ারম্যান ঘাটে মোশারফ হোসেন নামে স্পিডবোটের দায়িত্বে থাকা একজন বলেন, ভাড়ার বিষয়ে মালিকরা জানে, তাদের কিছু জানা নেই। এখানে ইচ্ছে করলেই যে যেমন ভাড়া নিতে পারে না, এটার একটা নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ পথের স্পিডবোটগুলোর একটিরও চলাচলের বৈধ কোনো অনুমোদন নেই। তবুও চলছে, মানুষও পারাপার হচ্ছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই।

Please Share This Post in Your Social Media

মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে স্পিডবোটে প্রমত্তা মেঘনা পারাপার!

Update Time : ১১:১৮:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

হাতিয়া (নোয়াখালী) থেকে ফিরে, নোয়াখালীর হাতিয়া চেয়ারম্যান ঘাট-নলছিরা ঘাট নৌ-রুটে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন প্রমত্তা মেঘনা পারাপার হচ্ছেন যাত্রীরা।

প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত এ রুটে দ্রুতগামী স্পিডবোটে চলাচল করেন প্রায় হাজার খানেক মানুষ।

শীত মৌসুমে নদী শান্ত থাকলেও বর্ষা মৌসুমে থাকে উত্তাল। কখনোই এ রুটে স্পিড বোটের যাত্রীদের গায়ে জীবন রক্ষাকারী লাইফ জ্যাকেট দেখা যায় না।

প্রতিটি স্পিডবোটে ১২/১৫ জন যাত্রী বহন করা হলেও লাইফ জ্যাকেট থাকে সাকূল্যে তিন থেকে চারটি। আবার সেগুলো এক পাশে পড়ে থাকে, যাত্রীদের মধ্যেও নেই আগ্রহ।

এ পথে চলাচলকারী একাধিক যাত্রী বলেন, হাতিয়ার মানুষ ভয় করে না। লাইফ জ্যাকেট দিয়ে কী হবে? বিপদ আসলে এমনিতেই মরতে হবে। তখন কেউ রক্ষা করতে পারবে না।

জামশেদ আহমেদ নামে এক যাত্রী বলেন, অনেকটা বাধ্য হয়েই এসব স্পিডবোটে ওঠতে হয়।এ রুটে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের একটি সী ট্রাক রয়েছে। চলাচলের জন্য সেটিই সবচেয়ে নিরাপদ। কিন্তু প্রায় সময় সেটি বন্ধ থাকে। ট্রলারে যেতে হলে এক ঘণ্টারও বেশি সময় রোদে পুড়তে হয়। তাই সময় ও কষ্ট লাগবে মানুষ স্পিড বোটে ওঠে।

হাতিয়া থেকে ফেরার পথে সী-ট্রাকের সোহরাব হোসেন নামে এক পরিচালনাকারীজানান, দীর্ঘদিন আগের এ নৌযানটি মাঝে মাঝেই যান্ত্রিক জটিলতার কারণে বিকল হয়ে যায়। তখন পারাপার বন্ধ থাকে। গত ৩০ আগস্ট থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এটি বন্ধ ছিলো।

তিনি আরও জানান, এখন সী-ট্রাকের যাত্রী অনেক কমে গেছে। যাত্রীরাষ সময় বাঁচাতে এখন স্পিডবোটে বেশি ওঠে, নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে না।

এ পথের যাত্রীরা জানান, চাহিদা থাকায় এখানকার স্পিডবোট মালিকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেন। মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে ভাড়া গুণতে হয় ৪০০ টাকা। যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।

চেয়ারম্যান ঘাটে মোশারফ হোসেন নামে স্পিডবোটের দায়িত্বে থাকা একজন বলেন, ভাড়ার বিষয়ে মালিকরা জানে, তাদের কিছু জানা নেই। এখানে ইচ্ছে করলেই যে যেমন ভাড়া নিতে পারে না, এটার একটা নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ পথের স্পিডবোটগুলোর একটিরও চলাচলের বৈধ কোনো অনুমোদন নেই। তবুও চলছে, মানুষও পারাপার হচ্ছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই।