ভারত-বাংলার বন্ধ রেলপথ চালু স্বাধীনতার রজতজয়ন্তীতে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৬:৪০:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ অক্টোবর ২০২০
  • / ১৭৪ Time View
মশিয়ার রহমান, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি :
বাংলাদেশের চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ি হয়ে শিলিগুড়ি পর্যন্ত অবিভক্ত ভারতের রেল যোগাযোগের এটিই প্রধান পথ ছিল। পাকিস্তান-ভারত ভাগ হওয়ার পরও ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত সেটি চালু ছিল। কলকাতা থেকে এ পথে ট্রেন চলাচল করত দার্জিলিং এর শিলিগুড়ি পর্যন্ত । কিন্তু যোগাযোগটি ১৯৬৫ সালের পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের সময় বন্ধ হয়ে যায়।
.
সেই ট্রেন রুটটি পুনরুজ্জীবিত করলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা, বাংলাদেশের রুপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৬৫ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া এই রুটে আবার আন্তর্জাতিক ট্রেনের হুইসেল বাজবে। ৫৬ বছর পর ট্রেনের এই হুইসেল শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন উত্তরাঞ্চলবাসী। চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথটিকে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যোগাযোগ এবং ব্যবসাবান্ধব রেলপথ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানে এই রেলরুটের আওতায় সংযুক্ত হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীতে ১৬ ডিসেম্বর/২০২০ অথবা ২৬ মার্চ/২০২১ দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথের শুভ উদ্বোধন করবেন মর্মে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
.
শিলিগুড়ি পর্যন্ত সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপনে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের নীলফামারী জেলার চিলাহাটি ও ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার হলদিবাড়ি আন্তর্জাতিক সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে রেললাইন পাতানোর কাজ শেষ করা হয়েছে। সীমান্তের ২০০ মিটার নোম্যান্সল্যান্ড এলাকায় লাইনপাতার কাজ শেষ করেছে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ ১ অক্টোবর। সূত্র মতে সড়ক পথে ব্যয় কমাতে নীলফামারীর চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ি এই রেলপথকে সব থেকে গুরুত্ব দিচ্ছেন আমদানি ও রফতানিকারকগণ। মালগাড়ির পাশাপাশি ঢাকা ও খুলনা থেকে সরাসরি যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে শিলিগুড়ি পর্যন্ত। পাশাপাশি ভারতের শিয়ালদহ রেলস্টেশন থেকে ট্রেন ছেড়ে পেট্রাপোল সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশের বেনাপোলে ঢুকবে ট্রেন। বাংলাদেশের ভেতরে যশোর, দর্শনা, পাকশী ঈশ্বর্দী, নাটোর, সান্তাহার, জয়পুরহাট, পার্বতীপুর, সৈয়দপুর, নীলফামারী ও চিলাহাটি পেরিয়ে ফের তা গিয়ে উঠবে ভারতের হলদিবাড়িতে। সেখান থেকে গিয়ে পৌঁছাবে দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি।
.
বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, ২০১১ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরের সময় এই রেলপথের বিষয়ে একটি চুক্তি হয়। সেই চুক্তির ভিত্তিতে গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর দুই দেশের রেল লাইন পাতার কাজ শুরু হয়েছিল। এই কাজের উদ্বোধন করেছিলেন রেলপথমন্ত্রী এ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন এমপি। কথা ছিল চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে দুই দেশ রেললাইন পাতানোসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ করবে এবং জুলাই থেকে ট্রেন চলাচল শুরু করা হবে। কিন্তু চলমান করোনাভাইরাসের লকডাউনের কারণে ভারত ও বাংলাদেশ চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেনি। পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ায় পুনরায় এই কাজ শুরু হয়। যা ১ অক্টোবর রেললাইন বিছানো সমাপ্ত করা হয়েছে।
.
জানা যায়, ১৮১৭ থেকে এই রেলপথ চালু ছিল। সে সময় নীলফামারীর সৈয়দপুরে গড়ে উঠেছিল বেঙ্গল রেলওয়ে কারখানা। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আগে শেষবার ট্রেন চলেছিল ভারতের হলদিবাড়ি ও চিলাহাটির মধ্যে। সেইসময় দার্জিলিং মেইল নামের একটি ট্রেন কলকাতার শিয়ালদহ থেকে ছেড়ে দর্শনা হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে নীলফামারীর চিলাহাটি হয়ে হলদিবাড়ি, জলপাইগুড়ি দিয়ে শিলিগুড়ি চলাচল করত। আবার একই পথে শিলিগুড়ি থেকে ট্রেন ঢুকত বাংলাদেশ হয়ে কলকাতায়। এছাড়া নীলফামারীর চিলাহাটি ও হলদিবাড়ি হয়ে শিলিগুড়ি পর্যন্ত চলাচল করত পাসপোর্ট নামের আরেকটি ট্রেন। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান তৈরি হলেও ভারতের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানে যাতায়াতের জন্য প্রাচীন এই রেলপথটি সচল ছিল।
.
১৯৬৫ সালের পাক ভারত যুদ্ধের সময় থেকে এই পথটি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৬৫ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া এই রুটকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়াসে আজ এটি নতুনভাবে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে এ রেলপথ প্রস্তুত করতে ভারতের পক্ষে ব্যয় ৪২ কোটি রুপী ও বাংলাদেশের ৮০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এছাড়া চিলাহাটি রেলস্টেশটি আন্তর্জাতিক রেলস্টেশন হিসাবে নতুনভাবে তৈরি করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক রেলস্টেশনের আদলে।
.
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভারতের হলদিবাড়ি রেলস্টেশন থেকে সীমান্ত পর্যন্ত পাতা হয় (নো-ম্যান্স ল্যান্ডসহ) ৩ দশমিক ৩৪ কিমি রেললাইন। এছাড়া হলদিবাড়ি থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার রেলপথকে নতুন করে স্থাপন করা হয়। অপরদিকে বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটি স্টেশন থেকে ভারতের সীমান্ত পর্যন্ত ৬ দশমিক ৭২৪ কিলোমিটার বিছানা হয়েছে রেলপথ। সেই সঙ্গে চিলাহাটি রেলস্টেশনে পৃথকভাবে পাতানো হয় ২ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার লুপলাইন। এছাড়া চিলাহাটি থেকে ঢাকা ও খুলনা পর্যন্ত রেলপথ আধুনিকায়ন করা হয়েছে। তাছাড়াও ডবল লাইন স্থাপনের চিন্তাভাবনা চলছে।
.
সরেজমিনে দেখা যায় ভারতের হলদিবাড়ির দিক থেকে আসা ও চিলাহাটির দিক দিয়ে সীমান্ত পর্যন্ত যাওয়া দুই দেশের স্থাপিত রেললাইন এক সঙ্গে এসে মিলিত হয়েছে। শুধু দুই দেশের বিছানা রেললাইনের জোড়া লাগানো স্থানটিতে সামান্য ফাঁকা রাখা হয়েছে। যে কোন সময় রেললাইন জোড়া লেগে যাবে। এলাকায় শুরু হয়েছে আনন্দ উৎসবের ঘনঘটা। তবে এই দৃশ্য দেখতেই যেন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন ছুটে আসছে।
.
চিলাহাটির প্রবীণ ব্যক্তি আব্দুল রাজ্জাক বসুনিয়া বললেন চিলাহাটি হলদিবাড়ি ট্রেন রুটটি আমার কাছে এক ইতিহাস। একসময় এই রুটে ট্রেনে করে আমরা হলদিবাড়ি শিলিগুড়ি যাইতাম, অনেক মজা করেছি। গত ২৯ আগস্ট রেলপথ মন্ত্রী এডভোকেট নুরল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন বৈশ্বিক করোনার কারণে কাজের অগ্রগতি কিছুটা পিছিয়েছে। তা নাহলে আমরা জুলাই থেকে রেল যাত্রা শুরু করে দিতাম। তবে এখন আমরা উদ্বোধনের নতুন প্রস্তুতি নিচ্ছি।
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

ভারত-বাংলার বন্ধ রেলপথ চালু স্বাধীনতার রজতজয়ন্তীতে

Update Time : ০৬:৪০:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ অক্টোবর ২০২০
মশিয়ার রহমান, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি :
বাংলাদেশের চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ি হয়ে শিলিগুড়ি পর্যন্ত অবিভক্ত ভারতের রেল যোগাযোগের এটিই প্রধান পথ ছিল। পাকিস্তান-ভারত ভাগ হওয়ার পরও ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত সেটি চালু ছিল। কলকাতা থেকে এ পথে ট্রেন চলাচল করত দার্জিলিং এর শিলিগুড়ি পর্যন্ত । কিন্তু যোগাযোগটি ১৯৬৫ সালের পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের সময় বন্ধ হয়ে যায়।
.
সেই ট্রেন রুটটি পুনরুজ্জীবিত করলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা, বাংলাদেশের রুপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৬৫ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া এই রুটে আবার আন্তর্জাতিক ট্রেনের হুইসেল বাজবে। ৫৬ বছর পর ট্রেনের এই হুইসেল শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন উত্তরাঞ্চলবাসী। চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথটিকে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যোগাযোগ এবং ব্যবসাবান্ধব রেলপথ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানে এই রেলরুটের আওতায় সংযুক্ত হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীতে ১৬ ডিসেম্বর/২০২০ অথবা ২৬ মার্চ/২০২১ দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথের শুভ উদ্বোধন করবেন মর্মে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
.
শিলিগুড়ি পর্যন্ত সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপনে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের নীলফামারী জেলার চিলাহাটি ও ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার হলদিবাড়ি আন্তর্জাতিক সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে রেললাইন পাতানোর কাজ শেষ করা হয়েছে। সীমান্তের ২০০ মিটার নোম্যান্সল্যান্ড এলাকায় লাইনপাতার কাজ শেষ করেছে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ ১ অক্টোবর। সূত্র মতে সড়ক পথে ব্যয় কমাতে নীলফামারীর চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ি এই রেলপথকে সব থেকে গুরুত্ব দিচ্ছেন আমদানি ও রফতানিকারকগণ। মালগাড়ির পাশাপাশি ঢাকা ও খুলনা থেকে সরাসরি যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে শিলিগুড়ি পর্যন্ত। পাশাপাশি ভারতের শিয়ালদহ রেলস্টেশন থেকে ট্রেন ছেড়ে পেট্রাপোল সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশের বেনাপোলে ঢুকবে ট্রেন। বাংলাদেশের ভেতরে যশোর, দর্শনা, পাকশী ঈশ্বর্দী, নাটোর, সান্তাহার, জয়পুরহাট, পার্বতীপুর, সৈয়দপুর, নীলফামারী ও চিলাহাটি পেরিয়ে ফের তা গিয়ে উঠবে ভারতের হলদিবাড়িতে। সেখান থেকে গিয়ে পৌঁছাবে দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি।
.
বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, ২০১১ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরের সময় এই রেলপথের বিষয়ে একটি চুক্তি হয়। সেই চুক্তির ভিত্তিতে গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর দুই দেশের রেল লাইন পাতার কাজ শুরু হয়েছিল। এই কাজের উদ্বোধন করেছিলেন রেলপথমন্ত্রী এ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন এমপি। কথা ছিল চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে দুই দেশ রেললাইন পাতানোসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ করবে এবং জুলাই থেকে ট্রেন চলাচল শুরু করা হবে। কিন্তু চলমান করোনাভাইরাসের লকডাউনের কারণে ভারত ও বাংলাদেশ চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেনি। পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ায় পুনরায় এই কাজ শুরু হয়। যা ১ অক্টোবর রেললাইন বিছানো সমাপ্ত করা হয়েছে।
.
জানা যায়, ১৮১৭ থেকে এই রেলপথ চালু ছিল। সে সময় নীলফামারীর সৈয়দপুরে গড়ে উঠেছিল বেঙ্গল রেলওয়ে কারখানা। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আগে শেষবার ট্রেন চলেছিল ভারতের হলদিবাড়ি ও চিলাহাটির মধ্যে। সেইসময় দার্জিলিং মেইল নামের একটি ট্রেন কলকাতার শিয়ালদহ থেকে ছেড়ে দর্শনা হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে নীলফামারীর চিলাহাটি হয়ে হলদিবাড়ি, জলপাইগুড়ি দিয়ে শিলিগুড়ি চলাচল করত। আবার একই পথে শিলিগুড়ি থেকে ট্রেন ঢুকত বাংলাদেশ হয়ে কলকাতায়। এছাড়া নীলফামারীর চিলাহাটি ও হলদিবাড়ি হয়ে শিলিগুড়ি পর্যন্ত চলাচল করত পাসপোর্ট নামের আরেকটি ট্রেন। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান তৈরি হলেও ভারতের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানে যাতায়াতের জন্য প্রাচীন এই রেলপথটি সচল ছিল।
.
১৯৬৫ সালের পাক ভারত যুদ্ধের সময় থেকে এই পথটি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৬৫ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া এই রুটকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়াসে আজ এটি নতুনভাবে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে এ রেলপথ প্রস্তুত করতে ভারতের পক্ষে ব্যয় ৪২ কোটি রুপী ও বাংলাদেশের ৮০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এছাড়া চিলাহাটি রেলস্টেশটি আন্তর্জাতিক রেলস্টেশন হিসাবে নতুনভাবে তৈরি করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক রেলস্টেশনের আদলে।
.
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভারতের হলদিবাড়ি রেলস্টেশন থেকে সীমান্ত পর্যন্ত পাতা হয় (নো-ম্যান্স ল্যান্ডসহ) ৩ দশমিক ৩৪ কিমি রেললাইন। এছাড়া হলদিবাড়ি থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার রেলপথকে নতুন করে স্থাপন করা হয়। অপরদিকে বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটি স্টেশন থেকে ভারতের সীমান্ত পর্যন্ত ৬ দশমিক ৭২৪ কিলোমিটার বিছানা হয়েছে রেলপথ। সেই সঙ্গে চিলাহাটি রেলস্টেশনে পৃথকভাবে পাতানো হয় ২ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার লুপলাইন। এছাড়া চিলাহাটি থেকে ঢাকা ও খুলনা পর্যন্ত রেলপথ আধুনিকায়ন করা হয়েছে। তাছাড়াও ডবল লাইন স্থাপনের চিন্তাভাবনা চলছে।
.
সরেজমিনে দেখা যায় ভারতের হলদিবাড়ির দিক থেকে আসা ও চিলাহাটির দিক দিয়ে সীমান্ত পর্যন্ত যাওয়া দুই দেশের স্থাপিত রেললাইন এক সঙ্গে এসে মিলিত হয়েছে। শুধু দুই দেশের বিছানা রেললাইনের জোড়া লাগানো স্থানটিতে সামান্য ফাঁকা রাখা হয়েছে। যে কোন সময় রেললাইন জোড়া লেগে যাবে। এলাকায় শুরু হয়েছে আনন্দ উৎসবের ঘনঘটা। তবে এই দৃশ্য দেখতেই যেন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন ছুটে আসছে।
.
চিলাহাটির প্রবীণ ব্যক্তি আব্দুল রাজ্জাক বসুনিয়া বললেন চিলাহাটি হলদিবাড়ি ট্রেন রুটটি আমার কাছে এক ইতিহাস। একসময় এই রুটে ট্রেনে করে আমরা হলদিবাড়ি শিলিগুড়ি যাইতাম, অনেক মজা করেছি। গত ২৯ আগস্ট রেলপথ মন্ত্রী এডভোকেট নুরল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন বৈশ্বিক করোনার কারণে কাজের অগ্রগতি কিছুটা পিছিয়েছে। তা নাহলে আমরা জুলাই থেকে রেল যাত্রা শুরু করে দিতাম। তবে এখন আমরা উদ্বোধনের নতুন প্রস্তুতি নিচ্ছি।