বলসোনারোর অভিশংসন দাবিতে এককাট্টা ব্রাজিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১১:৪০:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ মে ২০২১
  • / ১৩৮ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মহামারির শুরু থেকেই লকডাউনের বিরোধিতা করে আসছেন বলসোনারো। জনগণের জীবিকা ও কর্মক্ষেত্রের দোহাই দিয়ে ভাইরাসের বিস্তার রোধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থাই নেননি তিনি। এমনকি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টিকা কার্যক্রম শুরু হলেও ব্রাজিলের জনগণের জন্য পর্যাপ্ত ডোজ মজুতে ব্যর্থ হয়েছে বলসোনারোর সরকার।

করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী আন্দোলন দেখল ব্রাজিল।

প্রেসিডেন্ট জায়ের বলসোনারোর অভিশংসনের দাবিতে শনিবার বিক্ষোভ করেছে কয়েক লাখ মানুষ।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়, লাতিন আমেরিকার দেশটির রাজধানী ব্রাসিলিয়া, সাও পাওলো, রিও ডি জেনেরিওসহ দুই শতাধিক শহরে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানান নাগরিকরা।

মহামারি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরেই তোপের মুখে বলসোনারোর প্রশাসন।

সারা বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারিতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৭ কোটির বেশি মানুষ। মারা গেছে সাড়ে ৩৫ লাখ মানুষ।

শুধু ব্রাজিলেই ১ কোটি ৬৫ লাখ মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। প্রাণহানি ৪ লাখ ৬১ হাজারের বেশি। ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমণ ৭৯ হাজার। মৃত্যু দুই হাজারের কাছাকাছি।

করোনা শনাক্তে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের পর তৃতীয় অবস্থানে ব্রাজিল। প্রাণহানিতে যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ ব্রাজিল।

রিও ডি জেনেরিওতে একটি দলের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিকারকর্মী ৫৫ বছর বয়সী সিলভিয়া ডি মেনডোনকা।

ইউনিফায়েড ব্ল্যাক মুভমেন্টের এই সদস্য বলেন, ‘বলসোনারোর আত্মঘাতী প্রশাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আজকের দিনটি মাইলফলক।’

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অনেকেই করোনায় হারানো স্বজনদের স্মৃতি-সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে উপস্থিত হন।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া ৬৯ বছর বয়সী ইরিন গ্রেথার বলেন, ‘এই সরকার ভাইরাসের চেয়েও বেশি মারাত্মক। সরকার নিষ্ক্রিয় বলেই এত মানুষ মরছে।’

৪৬ বছর বয়সী অ্যানা পলা পেশায় অর্থনীতিবিদ। বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন তিনিও।

পলা বলেন, ‘ব্রাজিলের মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়ার অপরাধের জন্য বলসোনারোকে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) নিয়ে দাঁড় করানো উচিত। হত্যা আর ধ্বংস করা তার কাজ। তিনি নিজেই একটা জাতীয় দুর্যোগ।’

মহামারির শুরু থেকেই লকডাউনের বিরোধিতা করে আসছেন বলসোনারো। জনগণের জীবিকা ও কর্মক্ষেত্রের দোহাই দিয়ে ভাইরাসের বিস্তার রোধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থাই নেননি তিনি।

এমনকি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টিকা কার্যক্রম শুরু হলেও ব্রাজিলের জনগণের জন্য পর্যাপ্ত টিকা মজুতে ব্যর্থ হয়েছে বলসোনারোর সরকার। আবার ব্রাজিলের অর্থনীতিও খাদের কিনারায়।

অ্যানা পলা বলেন, ‘আজ ব্রাজিলের মানুষের সামনে দুটি পথ খোলা। হয় ভাইরাসে মৃত্যু, নতুবা ক্ষুধায়।’

২০১৯ সালের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেয়ার পাশাপাশি বেফাঁস মন্তব্য করেছেন কট্টর ডানপন্থি বলসোনারো। তবে তার জনসমর্থন তলানিতে পৌঁছেছে মূলত মহামারি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগেই।

জনমত জরিপে উঠে এসেছে, তার অভিশংসন চায় দেশটির ৫৭ শতাংশ মানুষ।

Please Share This Post in Your Social Media

বলসোনারোর অভিশংসন দাবিতে এককাট্টা ব্রাজিল

Update Time : ১১:৪০:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ মে ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মহামারির শুরু থেকেই লকডাউনের বিরোধিতা করে আসছেন বলসোনারো। জনগণের জীবিকা ও কর্মক্ষেত্রের দোহাই দিয়ে ভাইরাসের বিস্তার রোধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থাই নেননি তিনি। এমনকি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টিকা কার্যক্রম শুরু হলেও ব্রাজিলের জনগণের জন্য পর্যাপ্ত ডোজ মজুতে ব্যর্থ হয়েছে বলসোনারোর সরকার।

করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী আন্দোলন দেখল ব্রাজিল।

প্রেসিডেন্ট জায়ের বলসোনারোর অভিশংসনের দাবিতে শনিবার বিক্ষোভ করেছে কয়েক লাখ মানুষ।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়, লাতিন আমেরিকার দেশটির রাজধানী ব্রাসিলিয়া, সাও পাওলো, রিও ডি জেনেরিওসহ দুই শতাধিক শহরে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানান নাগরিকরা।

মহামারি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরেই তোপের মুখে বলসোনারোর প্রশাসন।

সারা বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারিতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৭ কোটির বেশি মানুষ। মারা গেছে সাড়ে ৩৫ লাখ মানুষ।

শুধু ব্রাজিলেই ১ কোটি ৬৫ লাখ মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। প্রাণহানি ৪ লাখ ৬১ হাজারের বেশি। ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমণ ৭৯ হাজার। মৃত্যু দুই হাজারের কাছাকাছি।

করোনা শনাক্তে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের পর তৃতীয় অবস্থানে ব্রাজিল। প্রাণহানিতে যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ ব্রাজিল।

রিও ডি জেনেরিওতে একটি দলের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিকারকর্মী ৫৫ বছর বয়সী সিলভিয়া ডি মেনডোনকা।

ইউনিফায়েড ব্ল্যাক মুভমেন্টের এই সদস্য বলেন, ‘বলসোনারোর আত্মঘাতী প্রশাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আজকের দিনটি মাইলফলক।’

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অনেকেই করোনায় হারানো স্বজনদের স্মৃতি-সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে উপস্থিত হন।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া ৬৯ বছর বয়সী ইরিন গ্রেথার বলেন, ‘এই সরকার ভাইরাসের চেয়েও বেশি মারাত্মক। সরকার নিষ্ক্রিয় বলেই এত মানুষ মরছে।’

৪৬ বছর বয়সী অ্যানা পলা পেশায় অর্থনীতিবিদ। বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন তিনিও।

পলা বলেন, ‘ব্রাজিলের মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়ার অপরাধের জন্য বলসোনারোকে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) নিয়ে দাঁড় করানো উচিত। হত্যা আর ধ্বংস করা তার কাজ। তিনি নিজেই একটা জাতীয় দুর্যোগ।’

মহামারির শুরু থেকেই লকডাউনের বিরোধিতা করে আসছেন বলসোনারো। জনগণের জীবিকা ও কর্মক্ষেত্রের দোহাই দিয়ে ভাইরাসের বিস্তার রোধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থাই নেননি তিনি।

এমনকি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টিকা কার্যক্রম শুরু হলেও ব্রাজিলের জনগণের জন্য পর্যাপ্ত টিকা মজুতে ব্যর্থ হয়েছে বলসোনারোর সরকার। আবার ব্রাজিলের অর্থনীতিও খাদের কিনারায়।

অ্যানা পলা বলেন, ‘আজ ব্রাজিলের মানুষের সামনে দুটি পথ খোলা। হয় ভাইরাসে মৃত্যু, নতুবা ক্ষুধায়।’

২০১৯ সালের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেয়ার পাশাপাশি বেফাঁস মন্তব্য করেছেন কট্টর ডানপন্থি বলসোনারো। তবে তার জনসমর্থন তলানিতে পৌঁছেছে মূলত মহামারি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগেই।

জনমত জরিপে উঠে এসেছে, তার অভিশংসন চায় দেশটির ৫৭ শতাংশ মানুষ।