ডিজিটাল ইকোনোমির পাশাপাশি ডিজিটাল সোসাইটি গড়ে তুলতে হবে : পলক

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৪:১৮:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১
  • / ১৬৮ Time View

ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে সরকারি মৌলিক সেবার ৯০ শতাংশ চলে এসেছে অনলাইনে। মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষই এখন ইন্টারনেটে সংযুক্ত হতে পেরেছেন। আইটি ও আইটিইএস খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে ১৫ লক্ষাধিক তরুণ-তরুণীর। চলতি বছরেই ২০ লাখের বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি নিশ্চিত করে স্থানীয় চাহিদা মেটানোর সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের মাধ্যমে এই খাত থেকে ৫ বিলিয়ন ডলারের ডিজিটাল অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠবে বাংলাদেশ। ২০২৫ সালের মধ্যে এই আয় পৌঁছে যাবে ১০ বিলিয়ন ডলারে।

শনিবার বাংলাদেশের ডিজিটাল বাংলাদেশ অভিযাত্রার অর্জন ও ভবিষ্যত গন্তব্য নিয়ে আয়োজিত ওয়েবিনারে দেয়া এক উপস্থাপনায় এই তথ্য তুলে ধরেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি জানান, মোবাইল ফ্যাইনেন্সিয়াল ওয়ালেটে বিশ্বে বাংলাদেশ প্রথমস্থানে রয়েছে, পোশক শিল্প রফতানিখাতে দ্বিতীয় স্থানে এবং মোবাইল মার্কেট হিসেবে নবম স্থানে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর ৩০ লাখের রেফ্রিজারেটরের চাহিদা রয়েছে, এর ৯০ শতাংশই পূরণ হচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে। দেশে প্রতি বছর প্রায় ১২ লাখের বেশি কম্পিউটার, ২০ লাখের বেশি টেলিভিশন, ৫ লাখের বেশি এয়ারকন্ডিশনের প্রয়োজন হয় জানিয়ে পলক জানান দেশে প্রায় ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার ইলেক্ট্রনিকস এবং ডিজিটাল ডিভাইসের বাজার তৈরি হয়েছে।

বক্তব্যে ২০২৫,৩১ ও ৪১ সালের তিনটি ধাপ অতিক্রমের জন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী নীতি প্রণয়নে ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েট প্লাটফর্ম বড় ভূমিকা পালন করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী।

ডিজিটাল ইকোনোমির পাশাপাশি ডিজিটাল সোসাইটি গড়ে তুলতে হবে : পলক

 

তিনি বলেন, ডিজিটাল অর্থনীতি নিরাপদ করতে ইতোমধ্যেই সরকার সাইবার সুরক্ষায় সিসিএ, বিজিডি ই গভঃ সার্ট, ফরেন্সিক ল্যাব, সাইবার জিম, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ও ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সি গঠন করা হয়েছে।

এছাড়াও প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সাংস্কৃতিক মুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেন জুনাইদ আহমেদ পলক।

তিনি বলেছেন, আমাদের এখন একটি ডিজিটাল সোসাইটি গড়ে তুলতে হবে। এই ডিজিটাল সোসাইটিতে হোম গ্রোন ইনোভেশন সল্যুশন দিয়েই একটি প্রবলেম সলভিং জাতি হিসেবে একটি ডিজিটাল ইকোনোমি গড়ে তুলতে চাই। এজন্য একটি ইনোভেশন ইকো সিস্টেম গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষা অবকাঠামো পরিবর্তন করে অ্যাক্টিভ লার্নিং ও হাতে কলমে প্রশিক্ষণ, গবেষণা এবং সমস্যা সমাধানে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধনে জ্ঞানার্জনে গুরুত্ব দিতে হবে।

এসময় উদ্ভাবনী ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে কপিরাইট ও ট্রেডমার্ক ব্যবস্থাপনাকে আরো সহজ করার পরামর্শ দেন পলক।

তিনি বলেন, আমরা ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ এবং কোভিডের চোখ রাঙানীকে সুযোগ হিসেবে নিতে চাই। এ জন্য অংশীদারিত্বের মাধ্যমে তারুণ্যের মেধা ও প্রযুক্তির শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমরা ইনক্লুসিভ ডিসেন্ট্রালাইজড ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চাই।

No description available.

বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক হুসাইন সামাদের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ।

আলোচক হিসেবে অংশ নেন এটুআই নীতি উপদেষ্টা আনীর চৌধুরি, বিডার সাবেক চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম, ডেটাসফট ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব জামান, ডিজিটাল উদ্যোক্তা সাদেকা তাসনিম মৃদু, এসবিকে টেকভেঞ্চার প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া বশির কবির এবং তারেক এম বরকতুল্লাহ ওয়েবিনারে নিজেদের প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরেন।

প্রস্তাবনায় প্রায় সকলেই ভবিষ্যতের দক্ষতা উন্নয়নে গণিত শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা। একইসঙ্গে সাইবার নিরাপত্তায় নিজস্ব প্লাটফর্ম তৈরি ও বিদেশী সটওয়্যারের ওপর নির্ভরশীল না হওয়ার পরামর্শও উঠে আসে ওয়েবিনারে। একইসঙ্গে জোর দেয়া হয়েছে ডিজিটাল মাধ্যমেও নিজস্ব সংস্কৃতি গড়ে তোলার ওপর।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

ডিজিটাল ইকোনোমির পাশাপাশি ডিজিটাল সোসাইটি গড়ে তুলতে হবে : পলক

Update Time : ০৪:১৮:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১

ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে সরকারি মৌলিক সেবার ৯০ শতাংশ চলে এসেছে অনলাইনে। মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষই এখন ইন্টারনেটে সংযুক্ত হতে পেরেছেন। আইটি ও আইটিইএস খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে ১৫ লক্ষাধিক তরুণ-তরুণীর। চলতি বছরেই ২০ লাখের বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি নিশ্চিত করে স্থানীয় চাহিদা মেটানোর সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের মাধ্যমে এই খাত থেকে ৫ বিলিয়ন ডলারের ডিজিটাল অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠবে বাংলাদেশ। ২০২৫ সালের মধ্যে এই আয় পৌঁছে যাবে ১০ বিলিয়ন ডলারে।

শনিবার বাংলাদেশের ডিজিটাল বাংলাদেশ অভিযাত্রার অর্জন ও ভবিষ্যত গন্তব্য নিয়ে আয়োজিত ওয়েবিনারে দেয়া এক উপস্থাপনায় এই তথ্য তুলে ধরেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি জানান, মোবাইল ফ্যাইনেন্সিয়াল ওয়ালেটে বিশ্বে বাংলাদেশ প্রথমস্থানে রয়েছে, পোশক শিল্প রফতানিখাতে দ্বিতীয় স্থানে এবং মোবাইল মার্কেট হিসেবে নবম স্থানে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর ৩০ লাখের রেফ্রিজারেটরের চাহিদা রয়েছে, এর ৯০ শতাংশই পূরণ হচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে। দেশে প্রতি বছর প্রায় ১২ লাখের বেশি কম্পিউটার, ২০ লাখের বেশি টেলিভিশন, ৫ লাখের বেশি এয়ারকন্ডিশনের প্রয়োজন হয় জানিয়ে পলক জানান দেশে প্রায় ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার ইলেক্ট্রনিকস এবং ডিজিটাল ডিভাইসের বাজার তৈরি হয়েছে।

বক্তব্যে ২০২৫,৩১ ও ৪১ সালের তিনটি ধাপ অতিক্রমের জন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী নীতি প্রণয়নে ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েট প্লাটফর্ম বড় ভূমিকা পালন করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী।

ডিজিটাল ইকোনোমির পাশাপাশি ডিজিটাল সোসাইটি গড়ে তুলতে হবে : পলক

 

তিনি বলেন, ডিজিটাল অর্থনীতি নিরাপদ করতে ইতোমধ্যেই সরকার সাইবার সুরক্ষায় সিসিএ, বিজিডি ই গভঃ সার্ট, ফরেন্সিক ল্যাব, সাইবার জিম, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ও ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সি গঠন করা হয়েছে।

এছাড়াও প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সাংস্কৃতিক মুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেন জুনাইদ আহমেদ পলক।

তিনি বলেছেন, আমাদের এখন একটি ডিজিটাল সোসাইটি গড়ে তুলতে হবে। এই ডিজিটাল সোসাইটিতে হোম গ্রোন ইনোভেশন সল্যুশন দিয়েই একটি প্রবলেম সলভিং জাতি হিসেবে একটি ডিজিটাল ইকোনোমি গড়ে তুলতে চাই। এজন্য একটি ইনোভেশন ইকো সিস্টেম গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষা অবকাঠামো পরিবর্তন করে অ্যাক্টিভ লার্নিং ও হাতে কলমে প্রশিক্ষণ, গবেষণা এবং সমস্যা সমাধানে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধনে জ্ঞানার্জনে গুরুত্ব দিতে হবে।

এসময় উদ্ভাবনী ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে কপিরাইট ও ট্রেডমার্ক ব্যবস্থাপনাকে আরো সহজ করার পরামর্শ দেন পলক।

তিনি বলেন, আমরা ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ এবং কোভিডের চোখ রাঙানীকে সুযোগ হিসেবে নিতে চাই। এ জন্য অংশীদারিত্বের মাধ্যমে তারুণ্যের মেধা ও প্রযুক্তির শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমরা ইনক্লুসিভ ডিসেন্ট্রালাইজড ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চাই।

No description available.

বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক হুসাইন সামাদের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ।

আলোচক হিসেবে অংশ নেন এটুআই নীতি উপদেষ্টা আনীর চৌধুরি, বিডার সাবেক চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম, ডেটাসফট ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব জামান, ডিজিটাল উদ্যোক্তা সাদেকা তাসনিম মৃদু, এসবিকে টেকভেঞ্চার প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া বশির কবির এবং তারেক এম বরকতুল্লাহ ওয়েবিনারে নিজেদের প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরেন।

প্রস্তাবনায় প্রায় সকলেই ভবিষ্যতের দক্ষতা উন্নয়নে গণিত শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা। একইসঙ্গে সাইবার নিরাপত্তায় নিজস্ব প্লাটফর্ম তৈরি ও বিদেশী সটওয়্যারের ওপর নির্ভরশীল না হওয়ার পরামর্শও উঠে আসে ওয়েবিনারে। একইসঙ্গে জোর দেয়া হয়েছে ডিজিটাল মাধ্যমেও নিজস্ব সংস্কৃতি গড়ে তোলার ওপর।