চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪০.৬ ডিগ্রী, হিটস্ট্রোকে দুই নারীর মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৫:০২:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪
  • / ১৪ Time View

কয়েক দিন ধরে চুয়াডাঙ্গায় অব্যাহত রয়েছে তাপপ্রবাহ। সোমবার (২২ এপ্রিল) চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপদাহের কারণে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে জেলা প্রশাসন। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। তবে কাজের প্রয়োজনে অনেকেই বাধ্য হচ্ছেন এই তীব্র গরমের ভেতর ঘরের বাইরে যেতে।

এদিকে চুয়াডাঙ্গায় অতি তীব্র তাপপ্রবাহে এক ঘণ্টার ব্যবধানে হিট স্ট্রোকে ২ নারীর মৃত্যু হয়েছে। তারা দুজনই আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ ইউনিয়নের বেগুয়ারখাল গ্রামের বাসিন্দা। সোমবার (২২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯ টায় স্বামীর জন্য মাঠে ভাত নিয়ে যাওয়ার সময় আশুরা খাতুন (২৫) ও সকাল সাড়ে ১০ টায় আয়েশা বেগম (৭০) মারা যান।

স্থানীয়রা জানান, বেগুয়ারখাল গ্রামের আনোয়ার হোসেন সকালে না খেয়েই মাঠে কাজ করতে যান। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্ত্রী আশুরা খাতুন স্বামীর জন্য মাঠে ভাত নিয়ে যাচ্ছিলেন। স্বামীর ক্ষেত পর্যন্ত পৌঁছনোর আগেই জমির আইলে আশুরা খাতুন মাটিতে পড়ে যান। মাঠের কৃষকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আশুরাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার আগেই তিনি মারা যান।

এর এক ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে ১০ টায় একই গ্রামের আক্কাস আলীর স্ত্রী আয়েশা বেগম মারা যান। ক’দিনের তীব্র গরমে তিনি হাঁসফাঁস করছিলেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত গ্রাম্য চিকিৎসক রাশেদুল ইসলাম বলেন, কয়দিনের তীব্র গরমে আয়েশা বেগম অসুস্থ হয়ে পড়েন। দুজনই হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানিয়েছেন, আরও কয়েক দিন এমন তাপমাত্রা অব্যাহত থাকতে পারে। তবে এখনই বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। রাত ও দিনের তাপমাত্রার মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই। দিনের বেশির ভাগ সময় প্রখর তাপে উত্তপ্ত থাকছে চুয়াডাঙ্গা।

চুয়াডাঙ্গা শহর ঘুরে দেখা যায়, দিনের বেলায় সাধারণ মানুষ বাইরে কম বের হচ্ছেন। শ্রমজীবী মানুষেরা বের হলেও ফাঁকা রাস্তায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তারা। তাই প্রশান্তির খোঁজে গাছের নিচে ছায়াযুক্ত স্থানে জিরিয়ে নিচ্ছেন অনেক শ্রমজীবী মানুষ।

এদিকে তীব্র তাপদাহে জনসাধারণকে সচেতন করতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করে পথচারী ও এলাকাবাসীকে সতর্ক করছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।

এর আগে গত শনিবার (২০ এপ্রিল) চলতি মৌসুমের সকল রেকর্ড ভেঙে দেশের সর্বোচ্চ অতি তীব্র তাপদাহ ৪২ দশমিক তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ। জেলার হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে দিন দিন বাড়ছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪০.৬ ডিগ্রী, হিটস্ট্রোকে দুই নারীর মৃত্যু

Update Time : ০৫:০২:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪

কয়েক দিন ধরে চুয়াডাঙ্গায় অব্যাহত রয়েছে তাপপ্রবাহ। সোমবার (২২ এপ্রিল) চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপদাহের কারণে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে জেলা প্রশাসন। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। তবে কাজের প্রয়োজনে অনেকেই বাধ্য হচ্ছেন এই তীব্র গরমের ভেতর ঘরের বাইরে যেতে।

এদিকে চুয়াডাঙ্গায় অতি তীব্র তাপপ্রবাহে এক ঘণ্টার ব্যবধানে হিট স্ট্রোকে ২ নারীর মৃত্যু হয়েছে। তারা দুজনই আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ ইউনিয়নের বেগুয়ারখাল গ্রামের বাসিন্দা। সোমবার (২২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯ টায় স্বামীর জন্য মাঠে ভাত নিয়ে যাওয়ার সময় আশুরা খাতুন (২৫) ও সকাল সাড়ে ১০ টায় আয়েশা বেগম (৭০) মারা যান।

স্থানীয়রা জানান, বেগুয়ারখাল গ্রামের আনোয়ার হোসেন সকালে না খেয়েই মাঠে কাজ করতে যান। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্ত্রী আশুরা খাতুন স্বামীর জন্য মাঠে ভাত নিয়ে যাচ্ছিলেন। স্বামীর ক্ষেত পর্যন্ত পৌঁছনোর আগেই জমির আইলে আশুরা খাতুন মাটিতে পড়ে যান। মাঠের কৃষকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আশুরাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার আগেই তিনি মারা যান।

এর এক ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে ১০ টায় একই গ্রামের আক্কাস আলীর স্ত্রী আয়েশা বেগম মারা যান। ক’দিনের তীব্র গরমে তিনি হাঁসফাঁস করছিলেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত গ্রাম্য চিকিৎসক রাশেদুল ইসলাম বলেন, কয়দিনের তীব্র গরমে আয়েশা বেগম অসুস্থ হয়ে পড়েন। দুজনই হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানিয়েছেন, আরও কয়েক দিন এমন তাপমাত্রা অব্যাহত থাকতে পারে। তবে এখনই বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। রাত ও দিনের তাপমাত্রার মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই। দিনের বেশির ভাগ সময় প্রখর তাপে উত্তপ্ত থাকছে চুয়াডাঙ্গা।

চুয়াডাঙ্গা শহর ঘুরে দেখা যায়, দিনের বেলায় সাধারণ মানুষ বাইরে কম বের হচ্ছেন। শ্রমজীবী মানুষেরা বের হলেও ফাঁকা রাস্তায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তারা। তাই প্রশান্তির খোঁজে গাছের নিচে ছায়াযুক্ত স্থানে জিরিয়ে নিচ্ছেন অনেক শ্রমজীবী মানুষ।

এদিকে তীব্র তাপদাহে জনসাধারণকে সচেতন করতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করে পথচারী ও এলাকাবাসীকে সতর্ক করছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।

এর আগে গত শনিবার (২০ এপ্রিল) চলতি মৌসুমের সকল রেকর্ড ভেঙে দেশের সর্বোচ্চ অতি তীব্র তাপদাহ ৪২ দশমিক তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ। জেলার হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে দিন দিন বাড়ছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা।