চাঞ্চল্যকর মা-মেয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটন, আটক ১

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৫:২১:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জানুয়ারী ২০২২
  • / ১৩৬ Time View

এমরান হোসেন, জামালপুর জেলা প্রতিনিধিঃ

জামালপুরের মেলান্দহে চাঞ্চল্যকর মা-মেয়েকে গলা কেটে হত্যার ঘটনার মূল হোতা আনোয়ার হোসেনকে (৩৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ধর্ষণে ব্যর্থ হয়েই মা ও মেয়েকে গলাকেটে হত্যা করেছে আনোয়ার হোসেন।

রবিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে সিআইডি হেডকোয়ার্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তাদর এসব তথ্য জানান। এর আগে শনিবার (৮ জানুয়ারি) রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার গোদনাইল এলাকা থেকে আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি জানায়, প্রায় ৫ বছর আগে নারায়ণগঞ্জে থাকাকালে নিহত স্বপ্নার সঙ্গে আনোয়ার হোসেনের পরিচয় হয়। সেখান থেকেই উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আনোয়ার দীর্ঘদিন ধরে স্বপ্নার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। ঘটনার ২০ থেকে ২৫ দিন ধরে আনোয়ার নিহত স্বপ্নার বড় ভাই মোঃ জহুরুল চৌধুরীর বাড়িতে বিল্ডিং নির্মাণের কাজ করে আসছিলেন। ঘটনার দিন নিহত স্বপ্না আনোয়ারকে ডেকে তার ও তার মায়ের জন্য মাথা ব্যথার ওষুধ আনতে বলে। অতঃপর কাজ শেষে সন্ধ্যার পর আনোয়ার তাদের বাড়ি গিয়ে স্বপ্নার সঙ্গে গল্প করতে থাকে। স্বপ্না ও তার মায়ের রাতের খাবার শেষ হলে আনোয়ারের কাছে ওষুধ চায়। আনোয়ার ঘুমের ওষুধকে কৌশলে মাথাব্যথার ওষুধ হিসেবে প্রত্যেককে ৩টি করে ট্যাবলেট খেতে বলে।

স্বপ্না ও তার মা ওষুধ খেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে একই রুমে ঘুমিয়ে পড়ে। এ সুযোগে আনোয়ার অচেতন স্বপ্নাকে পাশের রুমে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে স্বপ্না জেগে যায়। তখন আনোয়ার জোরপূর্বক তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করলে স্বপ্না তাতে বাধা দেয়। এসময় ক্ষিপ্ত হয়ে আনোয়ার ধারালো বঁটি দিয়ে স্বপ্না এবং স্বপ্নার মা জয়ফুল বেগমকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যান।

উল্লেখ্য, ঘটনার দিন নিহত জয়ফুল বেগমের ওমান প্রবাসী দুই ছেলে হাসান চৌধুরী (২৮) ও খালেক চৌধুরী (২৬) ওমান থেকে ফোন করে তাদের মা-বোনকে না পেয়ে তাদের মামা মানিক মিয়াকে তাদের বাড়িতে খোঁজ নিতে পাঠান। মানিক মিয়া বাড়ি গিয়ে দরজা-জানালা বন্ধ পেয়ে প্রতিবেশীদের সহায়তায় ঘরের দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করলে পৃথক দুটি ঘরে তার বোন ও ভাগ্নির গলাকাটা লাশ দেখতে পান।

এ ঘটনায় নিহত জয়ফুল বেগমের ভাই মানিক মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মেলান্দহ থানায় একটি মামলা করেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

চাঞ্চল্যকর মা-মেয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটন, আটক ১

Update Time : ০৫:২১:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জানুয়ারী ২০২২

এমরান হোসেন, জামালপুর জেলা প্রতিনিধিঃ

জামালপুরের মেলান্দহে চাঞ্চল্যকর মা-মেয়েকে গলা কেটে হত্যার ঘটনার মূল হোতা আনোয়ার হোসেনকে (৩৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ধর্ষণে ব্যর্থ হয়েই মা ও মেয়েকে গলাকেটে হত্যা করেছে আনোয়ার হোসেন।

রবিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে সিআইডি হেডকোয়ার্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তাদর এসব তথ্য জানান। এর আগে শনিবার (৮ জানুয়ারি) রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার গোদনাইল এলাকা থেকে আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি জানায়, প্রায় ৫ বছর আগে নারায়ণগঞ্জে থাকাকালে নিহত স্বপ্নার সঙ্গে আনোয়ার হোসেনের পরিচয় হয়। সেখান থেকেই উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আনোয়ার দীর্ঘদিন ধরে স্বপ্নার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। ঘটনার ২০ থেকে ২৫ দিন ধরে আনোয়ার নিহত স্বপ্নার বড় ভাই মোঃ জহুরুল চৌধুরীর বাড়িতে বিল্ডিং নির্মাণের কাজ করে আসছিলেন। ঘটনার দিন নিহত স্বপ্না আনোয়ারকে ডেকে তার ও তার মায়ের জন্য মাথা ব্যথার ওষুধ আনতে বলে। অতঃপর কাজ শেষে সন্ধ্যার পর আনোয়ার তাদের বাড়ি গিয়ে স্বপ্নার সঙ্গে গল্প করতে থাকে। স্বপ্না ও তার মায়ের রাতের খাবার শেষ হলে আনোয়ারের কাছে ওষুধ চায়। আনোয়ার ঘুমের ওষুধকে কৌশলে মাথাব্যথার ওষুধ হিসেবে প্রত্যেককে ৩টি করে ট্যাবলেট খেতে বলে।

স্বপ্না ও তার মা ওষুধ খেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে একই রুমে ঘুমিয়ে পড়ে। এ সুযোগে আনোয়ার অচেতন স্বপ্নাকে পাশের রুমে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে স্বপ্না জেগে যায়। তখন আনোয়ার জোরপূর্বক তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করলে স্বপ্না তাতে বাধা দেয়। এসময় ক্ষিপ্ত হয়ে আনোয়ার ধারালো বঁটি দিয়ে স্বপ্না এবং স্বপ্নার মা জয়ফুল বেগমকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যান।

উল্লেখ্য, ঘটনার দিন নিহত জয়ফুল বেগমের ওমান প্রবাসী দুই ছেলে হাসান চৌধুরী (২৮) ও খালেক চৌধুরী (২৬) ওমান থেকে ফোন করে তাদের মা-বোনকে না পেয়ে তাদের মামা মানিক মিয়াকে তাদের বাড়িতে খোঁজ নিতে পাঠান। মানিক মিয়া বাড়ি গিয়ে দরজা-জানালা বন্ধ পেয়ে প্রতিবেশীদের সহায়তায় ঘরের দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করলে পৃথক দুটি ঘরে তার বোন ও ভাগ্নির গলাকাটা লাশ দেখতে পান।

এ ঘটনায় নিহত জয়ফুল বেগমের ভাই মানিক মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মেলান্দহ থানায় একটি মামলা করেন।