গাজা ইস্যুতে এরদোয়ান-নেতানিয়াহুর বাকযুদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৪:৪১:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৬৬ Time View

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছেন তার সঙ্গে জার্মানির নাৎসি নেতা হিটলারের অপকর্মের কোনো পার্থক্য নেই বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান।

বুধবার রাজধানী আঙ্কারায় বিজ্ঞান বিষয়ক একটি অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

নেতানিয়াহুকে উদ্দেশ করে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, তোমার সঙ্গে হিটলারের কী পার্থক্য রয়েছে? নেতানিয়াহু কি গাজায় হিটলারের চেয়ে কম কিছু করছে? উত্তর হচ্ছে- না। ইসরাইলিরা বার বার হিটলারের জঘন্য অপরাধের কথা শোনায়। এখন কি মনে হয়, তাদের সঙ্গে হিটলারের কোনো তফাৎ আছে? বরং তাদের অপকর্ম এখন হিটলারের অপকর্মকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। হিটলার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদিদের সঙ্গে যা করেছে নেতানিয়াহু এখন গাজাবাসীর সঙ্গে তাই করছেন।

এদিকে এরদোয়ানের এই মন্তব্যের সমালোচনা করে নেতানিয়াহু বলেন, কুর্দিদের গণহত্যা করছেন এরদোয়ান। বস্তুত, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, হামাস নেতাদের সাহায্য করেছে তুরস্ক। কিন্তু ইসরায়েল হামাসকে শেষ না করে এই অভিযান বন্ধ করবে না বলে জানিয়েছেন নেতানিয়াহু।

শুধু তা-ই নয়, জার্মানির সমালোচনা করে এরদোয়ান বলেছেন, জার্মানি এখনো অতীতের ভুলের খেসারত দিচ্ছে। সে কারণেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলছে না।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট এর আগে গাজায় ইসরাইলি গণহত্যাকে জাতিগত শুদ্ধি অভিযান বলে উল্লেখ করার পাশাপাশি ইসরাইলকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ বলে অভিহিত করেছিলেন। গত অক্টোবর মাসে এরদোয়ান ইসরাইলকে গাজায় যুদ্ধাপরাধ করার দায়ে অভিযুক্ত করার পর তেল আবিব আঙ্কারা থেকে তার কূটনীতিকদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। এরপর তুরস্কও তেল আবির থেকে তার রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান এর আগেও তেল আবিবকে নাৎসি জার্মানির সঙ্গে তুলনা করেছেন। ২০১৪ সালের জুলাই মাসে গাজা উপত্যকার ওপর ইসরাইলি আগ্রাসনের সময় তিনি বলেছিলেন, ইসরাইল ‘হিটলারের অপকর্মকে জীবন্ত’ রাখছে।

গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি সেনাদের ভয়াবহ অপরাধযজ্ঞে অন্তত ২১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত ও ৫৫ হাজার মানুষ আহত হয়েছে। গাজার ধ্বংসস্তুপের নীচে এখনও চাপা পড়ে আছে হাজার হাজার ফিলিস্তিনির লাশ। সূত্র: পার্সটুডে, ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এপি, এএফপি

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

গাজা ইস্যুতে এরদোয়ান-নেতানিয়াহুর বাকযুদ্ধ

Update Time : ০৪:৪১:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছেন তার সঙ্গে জার্মানির নাৎসি নেতা হিটলারের অপকর্মের কোনো পার্থক্য নেই বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান।

বুধবার রাজধানী আঙ্কারায় বিজ্ঞান বিষয়ক একটি অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

নেতানিয়াহুকে উদ্দেশ করে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, তোমার সঙ্গে হিটলারের কী পার্থক্য রয়েছে? নেতানিয়াহু কি গাজায় হিটলারের চেয়ে কম কিছু করছে? উত্তর হচ্ছে- না। ইসরাইলিরা বার বার হিটলারের জঘন্য অপরাধের কথা শোনায়। এখন কি মনে হয়, তাদের সঙ্গে হিটলারের কোনো তফাৎ আছে? বরং তাদের অপকর্ম এখন হিটলারের অপকর্মকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। হিটলার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদিদের সঙ্গে যা করেছে নেতানিয়াহু এখন গাজাবাসীর সঙ্গে তাই করছেন।

এদিকে এরদোয়ানের এই মন্তব্যের সমালোচনা করে নেতানিয়াহু বলেন, কুর্দিদের গণহত্যা করছেন এরদোয়ান। বস্তুত, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, হামাস নেতাদের সাহায্য করেছে তুরস্ক। কিন্তু ইসরায়েল হামাসকে শেষ না করে এই অভিযান বন্ধ করবে না বলে জানিয়েছেন নেতানিয়াহু।

শুধু তা-ই নয়, জার্মানির সমালোচনা করে এরদোয়ান বলেছেন, জার্মানি এখনো অতীতের ভুলের খেসারত দিচ্ছে। সে কারণেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলছে না।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট এর আগে গাজায় ইসরাইলি গণহত্যাকে জাতিগত শুদ্ধি অভিযান বলে উল্লেখ করার পাশাপাশি ইসরাইলকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ বলে অভিহিত করেছিলেন। গত অক্টোবর মাসে এরদোয়ান ইসরাইলকে গাজায় যুদ্ধাপরাধ করার দায়ে অভিযুক্ত করার পর তেল আবিব আঙ্কারা থেকে তার কূটনীতিকদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। এরপর তুরস্কও তেল আবির থেকে তার রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান এর আগেও তেল আবিবকে নাৎসি জার্মানির সঙ্গে তুলনা করেছেন। ২০১৪ সালের জুলাই মাসে গাজা উপত্যকার ওপর ইসরাইলি আগ্রাসনের সময় তিনি বলেছিলেন, ইসরাইল ‘হিটলারের অপকর্মকে জীবন্ত’ রাখছে।

গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি সেনাদের ভয়াবহ অপরাধযজ্ঞে অন্তত ২১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত ও ৫৫ হাজার মানুষ আহত হয়েছে। গাজার ধ্বংসস্তুপের নীচে এখনও চাপা পড়ে আছে হাজার হাজার ফিলিস্তিনির লাশ। সূত্র: পার্সটুডে, ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এপি, এএফপি