গাজায় ইসরায়েলি হামলায় মেয়র নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১০:৪৫:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল ২০২৪
  • / ২১ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় এক মেয়র নিহত হয়েছেন। নিহত ওই মেয়রের নাম হাতেম আল-গামরি। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

জানা যায়, আল- গামরি গাজার মাগাজি পৌসরভার মেয়র ছিলেন।

মাগাজি ক্যাম্পে ইসরায়েলি হামলায় তার সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন। এদিকে গাজাজুড়ে ইসরায়েলের বর্বর হামলা চলছেই। ভূখণ্ডটিতে নিহতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান কেন্দ্রীয় গাজার মাগাজি ক্যাম্পের একটি কাউন্সিল ভবনে বোমা হামলা চালিয়ে মাগাজি পৌরসভার মেয়রসহ বেশ কয়েকজনকে হত্যা করেছে বলে গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে।

গাজার মিডিয়া অফিস টেলিগ্রামে দেয়া এক পোস্টে বলেছে, নিহত হাতেম আল-গামরি তার কাজের প্রতি নিবেদিত ছিলেন এবং ‘নিজের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত’ মাগাজির জনগণের সেবা করেছিলেন।

এদিকে আন্তর্জাতিক আদালতের অস্থায়ী রায়কে উপেক্ষা করে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় তার আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চলা নিরলস এই হামলায় কমপক্ষে ৩৩ হাজার ২০৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

যাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭৫ হাজার ৯৩৩ জন আহত হয়েছেন।

সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের বর্বর হামলায় অন্তত আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ কোনও ধরনের আশ্রয় ছাড়াই বসবাস করছে এবং প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম ত্রাণবাহী ট্রাক এই অঞ্চলে প্রবেশ করছে।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েল গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত। চলতি বছরের জানুয়ারিতে অন্তর্র্বতীকালীন এক রায়ে আদালত তেল আবিবকে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানের নিশ্চয়তা দেয়ার ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় মেয়র নিহত

Update Time : ১০:৪৫:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় এক মেয়র নিহত হয়েছেন। নিহত ওই মেয়রের নাম হাতেম আল-গামরি। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

জানা যায়, আল- গামরি গাজার মাগাজি পৌসরভার মেয়র ছিলেন।

মাগাজি ক্যাম্পে ইসরায়েলি হামলায় তার সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন। এদিকে গাজাজুড়ে ইসরায়েলের বর্বর হামলা চলছেই। ভূখণ্ডটিতে নিহতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান কেন্দ্রীয় গাজার মাগাজি ক্যাম্পের একটি কাউন্সিল ভবনে বোমা হামলা চালিয়ে মাগাজি পৌরসভার মেয়রসহ বেশ কয়েকজনকে হত্যা করেছে বলে গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে।

গাজার মিডিয়া অফিস টেলিগ্রামে দেয়া এক পোস্টে বলেছে, নিহত হাতেম আল-গামরি তার কাজের প্রতি নিবেদিত ছিলেন এবং ‘নিজের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত’ মাগাজির জনগণের সেবা করেছিলেন।

এদিকে আন্তর্জাতিক আদালতের অস্থায়ী রায়কে উপেক্ষা করে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় তার আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চলা নিরলস এই হামলায় কমপক্ষে ৩৩ হাজার ২০৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

যাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭৫ হাজার ৯৩৩ জন আহত হয়েছেন।

সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের বর্বর হামলায় অন্তত আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ কোনও ধরনের আশ্রয় ছাড়াই বসবাস করছে এবং প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম ত্রাণবাহী ট্রাক এই অঞ্চলে প্রবেশ করছে।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েল গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত। চলতি বছরের জানুয়ারিতে অন্তর্র্বতীকালীন এক রায়ে আদালত তেল আবিবকে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানের নিশ্চয়তা দেয়ার ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।