কুবিতে হলে সিনিয়র নেত্রীকে মারধর করেছে জুনিয়র নেত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৭:০৪:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২২
  • / ১৫৮ Time View

সাঈদ হাসান, কুবি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী হলে সিনিয়র এক নেত্রীকে মারধর করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগেরই আরেক জুনিয়র নেত্রী।

শনিবার (২২ জানুয়ারি) রাত ৮ টার দিকে ঐ হলের ২০৯ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

শাখা ছাত্রলীগের উপ-ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ও আইসিটি বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রিফায়েত জাহান উপমা’র হাতে মারধরের শিকার হয়ে লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আয়েশা আফরিন বালিকা এক পর্যায়ে অবচেতন হয়ে পড়েন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই একই কক্ষে অবস্থান করলেও বিভন্ন সময় জুনিয়রের হাতে দূর্ব্যাবহারের শিকার হয়ে আসছেন তিনি। এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ ও শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দকে জানানো হলেও কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার রাত ৮টার দিকে হলের লকারের চাবিকে কেন্দ্রকে করে সিনিয়র ছাত্রীকে ‘তুই’ বলে সম্বোধন করেন এ ছাত্রলীগ নেত্রী। এর প্রতিবাদ করলে তখন সিনিয়র ছাত্রীর চুলের মুঠি চেপে মারধর করতে থাকেন। এক পর্যায়ে এ ছাত্রী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে হলে অবস্থানকারী অন্যান্য ছাত্রীদের সহযোগিতায় তিনি জ্ঞান ফিরে পান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এর আগে শনিবার দুপুরে নিজের বিছানার পাশে বইয়ের র‌্যাক রাখেন সিনিয়র ছাত্রলীগ নেত্রী। এ সময় জুনিয়র এ নেত্রী র‌্যাক সরাতে বললে কথা কাটাকাটি হয়। এর সূত্র ধরে রাতে লকারের চাবি নেয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। এছাড়াও বিভিন্ন সময় ঐ কক্ষের সদস্যদেও সাথে দূর্ব্যাবহার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আহত সিনিয়র ছাত্রী বলেন, গত তিন বছর ধরেই আমাকে বিভিন্ন সময়ে হুমকি-ধামকি ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছে সে (জুুনিয়র শিক্ষার্থী)। এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ হল প্রাধ্যক্ষকে বিভিন্ন সময়ে জানানোর পরও কেউ কোন ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি। সর্বশেষ গতকাল সে আমার ওপর হামলে পড়ে। এতে আমি চিৎকার করলে পাশের রুমের মেয়েরা এসে আমাকে উদ্ধার করে।

তবে মারধরের বিষয়ে অস্বীকার করে অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের এ নেত্রী বলেন, এরকম কিছু তো হয়নি। মারধরের বিষয় তো আসেনি। আপুর সাথে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল। পরে আমি আপুকে সরি বলছি। এটি রুমের মধ্যে ছিল, রুমের মধ্যে সমাধান হয়েছে।

হল ছাত্রলীগের আরেক নেত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রলীগের কমিটিতে তার (উপ-ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক) পদ থাকলেও তাকে কখনো দলীয় কোন কার্যক্রমে দেখা যায় না। পদ ব্যবহার করে হলে সে বিভিন্ন সময় প্রভাব খাটিয়ে আসছে।

তবে এসব বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদ কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। আপনি সভাপতিকে জিজ্ঞেস করুন। এ বিষয়ে জানতে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন বলেন, আমি এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। হলের বিষয় হলের প্রভোস্ট দেখবে। আমাদের কাছে কোন অভিযোগ আসলে আমরা খতিয়ে দেখবো।

হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সাদেকুজ্জামান তনু বলেন, ঘটনার সময় আমি বিভাগের কাজে বাহিরে ছিলাম। খবর পেয়ে দু’জন আবাসিক শিক্ষককে পাঠিয়েছি। তারা তৎক্ষণাৎ তা মিটিয়ে দেন। এ ব্যাপারে আমি আরও খবর নেবো।

Please Share This Post in Your Social Media

কুবিতে হলে সিনিয়র নেত্রীকে মারধর করেছে জুনিয়র নেত্রী

Update Time : ০৭:০৪:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২২

সাঈদ হাসান, কুবি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী হলে সিনিয়র এক নেত্রীকে মারধর করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগেরই আরেক জুনিয়র নেত্রী।

শনিবার (২২ জানুয়ারি) রাত ৮ টার দিকে ঐ হলের ২০৯ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

শাখা ছাত্রলীগের উপ-ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ও আইসিটি বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রিফায়েত জাহান উপমা’র হাতে মারধরের শিকার হয়ে লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আয়েশা আফরিন বালিকা এক পর্যায়ে অবচেতন হয়ে পড়েন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই একই কক্ষে অবস্থান করলেও বিভন্ন সময় জুনিয়রের হাতে দূর্ব্যাবহারের শিকার হয়ে আসছেন তিনি। এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ ও শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দকে জানানো হলেও কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার রাত ৮টার দিকে হলের লকারের চাবিকে কেন্দ্রকে করে সিনিয়র ছাত্রীকে ‘তুই’ বলে সম্বোধন করেন এ ছাত্রলীগ নেত্রী। এর প্রতিবাদ করলে তখন সিনিয়র ছাত্রীর চুলের মুঠি চেপে মারধর করতে থাকেন। এক পর্যায়ে এ ছাত্রী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে হলে অবস্থানকারী অন্যান্য ছাত্রীদের সহযোগিতায় তিনি জ্ঞান ফিরে পান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এর আগে শনিবার দুপুরে নিজের বিছানার পাশে বইয়ের র‌্যাক রাখেন সিনিয়র ছাত্রলীগ নেত্রী। এ সময় জুনিয়র এ নেত্রী র‌্যাক সরাতে বললে কথা কাটাকাটি হয়। এর সূত্র ধরে রাতে লকারের চাবি নেয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। এছাড়াও বিভিন্ন সময় ঐ কক্ষের সদস্যদেও সাথে দূর্ব্যাবহার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আহত সিনিয়র ছাত্রী বলেন, গত তিন বছর ধরেই আমাকে বিভিন্ন সময়ে হুমকি-ধামকি ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছে সে (জুুনিয়র শিক্ষার্থী)। এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ হল প্রাধ্যক্ষকে বিভিন্ন সময়ে জানানোর পরও কেউ কোন ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি। সর্বশেষ গতকাল সে আমার ওপর হামলে পড়ে। এতে আমি চিৎকার করলে পাশের রুমের মেয়েরা এসে আমাকে উদ্ধার করে।

তবে মারধরের বিষয়ে অস্বীকার করে অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের এ নেত্রী বলেন, এরকম কিছু তো হয়নি। মারধরের বিষয় তো আসেনি। আপুর সাথে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল। পরে আমি আপুকে সরি বলছি। এটি রুমের মধ্যে ছিল, রুমের মধ্যে সমাধান হয়েছে।

হল ছাত্রলীগের আরেক নেত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রলীগের কমিটিতে তার (উপ-ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক) পদ থাকলেও তাকে কখনো দলীয় কোন কার্যক্রমে দেখা যায় না। পদ ব্যবহার করে হলে সে বিভিন্ন সময় প্রভাব খাটিয়ে আসছে।

তবে এসব বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদ কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। আপনি সভাপতিকে জিজ্ঞেস করুন। এ বিষয়ে জানতে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন বলেন, আমি এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। হলের বিষয় হলের প্রভোস্ট দেখবে। আমাদের কাছে কোন অভিযোগ আসলে আমরা খতিয়ে দেখবো।

হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সাদেকুজ্জামান তনু বলেন, ঘটনার সময় আমি বিভাগের কাজে বাহিরে ছিলাম। খবর পেয়ে দু’জন আবাসিক শিক্ষককে পাঠিয়েছি। তারা তৎক্ষণাৎ তা মিটিয়ে দেন। এ ব্যাপারে আমি আরও খবর নেবো।