আড়াই মাস পর ৭৭০ মেট্রিক টন ভারতীয় চূর্ণপাথর খালাস

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৮:১৫:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ১১২ Time View

আরাফাত ইসলাম, আখাউড়া প্রতিনিধিঃ

অবশেষে প্রায় আড়াই মাস পর ছাড়পত্র পেলো আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি করা চূর্ণপাথর। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে আমদানি করা ২ হাজার ৭০০ টনের মধ্যে ৭৭০ টন চূর্ণপাথর স্থলবন্দর থেকে খালাস করে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। তবে দীর্ঘদিন বন্দরে পাথরগুলো পড়ে থাকায় বড় অঙ্কের লোকসান গুনতে হয়েছে বলে জানিয়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রপ্তানিমুখী আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে গত ১৩ নভেম্বর প্রথমবারের মতো চূর্ণপাথর আমদানি হয় ভারত থেকে। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড বন্দর দিয়ে ২ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন পাথর আমদানির জন্য এলসি খোলে। পাথরগুলো আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত নির্মাণাধীন চার লেন মহাসড়কের কাজে ব্যবহারের জন্য আনা হয়।

চার ধাপে মোট ২ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন পাথর আনে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। প্রতি মেট্রিক টন পাথর আমদানি হয় ১৩ মার্কিন ডলারে। তবে বিপত্তি বাধে বন্দর থেকে আনলোড করতে গিয়ে।

আমদানি করা চূর্ণপাথর আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করার অনুমোদন নেই জানিয়ে ছাড়পত্র আটকে দেয় স্থল শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষ। এর ফলে লোকসানে পড়ে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।

তবে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টারপ্রাইজ দাবি করে, পাথরের কোডেই চূর্ণপাথর বন্দর দিয়ে আমদানির অনুমতি আছে। সম্পূর্ণ চালান এলে একসঙ্গে কাস্টমস ছাড়পত্র দেবে বলে জানায় তাদের।

সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে ৭৭০ মেট্রিক টন পাথরের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। তবে এই চূর্ণপাথর ছাড়াতে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে গুনতে হয়েছে প্রায় ৩৪ লাখ টাকা। যার মধ্যে শুল্ক ও বিভিন্ন মাশুল রয়েছে। তবে ৭৭০ মেট্রিক টন চূর্ণপাথরের মূল্য সাড়ে ৯ কোটি টাকার কিছু বেশি।

পাথরগুলো কাস্টমস ক্লিয়ারিংয়ের কাজ করা মেসার্স খলিফা এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি মোজাম্মেল হক বলেন, ‘প্রথম চালান আসার পর আমাদের বলা হয় সম্পূর্ণ চালান এলে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। পরবর্তী সময়ে বেঁকে বসে কাস্টমস। দীর্ঘদিন আটকে থাকায় বড় অঙ্কের লোকসান যেমন গুনতে হয়েছে, তেমনি বিঘ্নিত হয়েছে চার লেন মহাসড়কের নির্মাণ কাজও।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের উপ-কমিশনার আবু হানিফ মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, ‘চূর্ণপাথর আমদানির অনুমতি না থাকায় ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। তবে চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পের হওয়ায় এনবিআর বিশেষ ক্ষমতায় শর্তসাপেক্ষ ৭৭০ মেট্রিক টনের ছাড়পত্র দিয়েছে। বাকিগুলোর জন্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান থেকে এনবিআরে আবেদন করেছে।’

উল্লেখ্য, এক সময় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রচুর পরিমাণ পাথর রপ্তানি হতো। মূলত আসাম থেকে সিলেটের তামাবিল বন্দর দিয়ে আমদানি করা পাথরই আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি হতো ভারতের আগরতলায়। তবে এখন আগরতলার সঙ্গে অন্য রাজ্যগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় সেখানকার ব্যবসায়ীরা এখন নিজ দেশ থেকেই পাথর সংগ্রহ করেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

আড়াই মাস পর ৭৭০ মেট্রিক টন ভারতীয় চূর্ণপাথর খালাস

Update Time : ০৮:১৫:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৩

আরাফাত ইসলাম, আখাউড়া প্রতিনিধিঃ

অবশেষে প্রায় আড়াই মাস পর ছাড়পত্র পেলো আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি করা চূর্ণপাথর। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে আমদানি করা ২ হাজার ৭০০ টনের মধ্যে ৭৭০ টন চূর্ণপাথর স্থলবন্দর থেকে খালাস করে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। তবে দীর্ঘদিন বন্দরে পাথরগুলো পড়ে থাকায় বড় অঙ্কের লোকসান গুনতে হয়েছে বলে জানিয়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রপ্তানিমুখী আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে গত ১৩ নভেম্বর প্রথমবারের মতো চূর্ণপাথর আমদানি হয় ভারত থেকে। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড বন্দর দিয়ে ২ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন পাথর আমদানির জন্য এলসি খোলে। পাথরগুলো আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত নির্মাণাধীন চার লেন মহাসড়কের কাজে ব্যবহারের জন্য আনা হয়।

চার ধাপে মোট ২ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন পাথর আনে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। প্রতি মেট্রিক টন পাথর আমদানি হয় ১৩ মার্কিন ডলারে। তবে বিপত্তি বাধে বন্দর থেকে আনলোড করতে গিয়ে।

আমদানি করা চূর্ণপাথর আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করার অনুমোদন নেই জানিয়ে ছাড়পত্র আটকে দেয় স্থল শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষ। এর ফলে লোকসানে পড়ে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।

তবে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টারপ্রাইজ দাবি করে, পাথরের কোডেই চূর্ণপাথর বন্দর দিয়ে আমদানির অনুমতি আছে। সম্পূর্ণ চালান এলে একসঙ্গে কাস্টমস ছাড়পত্র দেবে বলে জানায় তাদের।

সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে ৭৭০ মেট্রিক টন পাথরের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। তবে এই চূর্ণপাথর ছাড়াতে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে গুনতে হয়েছে প্রায় ৩৪ লাখ টাকা। যার মধ্যে শুল্ক ও বিভিন্ন মাশুল রয়েছে। তবে ৭৭০ মেট্রিক টন চূর্ণপাথরের মূল্য সাড়ে ৯ কোটি টাকার কিছু বেশি।

পাথরগুলো কাস্টমস ক্লিয়ারিংয়ের কাজ করা মেসার্স খলিফা এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি মোজাম্মেল হক বলেন, ‘প্রথম চালান আসার পর আমাদের বলা হয় সম্পূর্ণ চালান এলে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। পরবর্তী সময়ে বেঁকে বসে কাস্টমস। দীর্ঘদিন আটকে থাকায় বড় অঙ্কের লোকসান যেমন গুনতে হয়েছে, তেমনি বিঘ্নিত হয়েছে চার লেন মহাসড়কের নির্মাণ কাজও।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের উপ-কমিশনার আবু হানিফ মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, ‘চূর্ণপাথর আমদানির অনুমতি না থাকায় ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। তবে চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পের হওয়ায় এনবিআর বিশেষ ক্ষমতায় শর্তসাপেক্ষ ৭৭০ মেট্রিক টনের ছাড়পত্র দিয়েছে। বাকিগুলোর জন্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান থেকে এনবিআরে আবেদন করেছে।’

উল্লেখ্য, এক সময় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রচুর পরিমাণ পাথর রপ্তানি হতো। মূলত আসাম থেকে সিলেটের তামাবিল বন্দর দিয়ে আমদানি করা পাথরই আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি হতো ভারতের আগরতলায়। তবে এখন আগরতলার সঙ্গে অন্য রাজ্যগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় সেখানকার ব্যবসায়ীরা এখন নিজ দেশ থেকেই পাথর সংগ্রহ করেন।