আইএমএফের প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসছে আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০২:০০:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
  • / ১৫ Time View

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে ঋণ কর্মসূচি চলমান। দুই মাসের মধ্যে তৃতীয় কিস্তির অর্থ পাওয়ার কথা। বিভিন্ন বাস্তবতা সামনে রেখে বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণের শর্ত পূরণের কাজ পর্যালোচনা বা রিভিউ করতে আইএমএফের ১০ সদস্যের একটি দল ঢাকায় আসছে আজ।

এদিকে বাংলাদেশের নিট রিজার্ভের উন্নতি হয়নি। ব্যাংক খাতে ঋণের সুদহার বাড়লেও মূল্যস্ফীতি এখনো ১০ শতাংশের কাছাকাছি। রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রাও পূরণের কাছাকাছি জায়গায় নেই। ব্যাংক খাত সংস্কারের কার্যক্রমেও পিছিয়ে বাংলাদেশ।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) থেকেই দলটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ইত্যাদি সংস্থার সঙ্গে বৈঠক শুরু করবে। বৈঠক চলবে আগামী ৮ মে পর্যন্ত। প্রতিবছর বাজেটের আগে আইএমএফের একটি দল এ সময় ঢাকায় আসে।

এর আগে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে সাড়ে তিন বছরের মেয়াদে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কার্যক্রমের বিপরীতে আইএমএফ অনেক শর্ত দেয়। রিজার্ভ ছাড়া প্রায় সব শর্ত পূরণ করে দুই দফায় দুই কিস্তির অর্থ পেয়েছেও বাংলাদেশ। এবার তৃতীয় কিস্তির পালা-দুই মাস পর অর্থাৎ আগামী জুনে যা পাওয়ার কথা। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের শর্ত কতখানি কী পূরণ হলো, তার মূল্যায়নের ভিত্তিতে এই কিস্তি ছাড় করা হবে। অর্থ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আইএমএফের প্রথম কিস্তি পাওয়ার পর বাংলাদেশ দ্বিতীয় কিস্তি পায় গত ডিসেম্বরে। দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার আগে সময়ভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশ। বিশেষ করে গত জুন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। তবে রিজার্ভ সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা কমাতে আইএমএফের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে যে অব্যাহতি চেয়েছিল বাংলাদেশ, সংস্থাটি তা অনুমোদন করে। সে অনুযায়ী ডিসেম্বর শেষে রিজার্ভ সংরক্ষণের নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়। গত ডিসেম্বর শেষে নিট রিজার্ভ থাকার কথা ছিল ২৬ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার-কমিয়ে তা ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার করা হয়। তবে ডিসেম্বর পর্যন্ত নিট রিজার্ভ ছিল ১৬ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার।

চলতি পঞ্জিকা বর্ষের মার্চ মাসেও নিট রিজার্ভ সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশ। মার্চ শেষে প্রকৃত রিজার্ভ থাকার কথা ১৯ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার, কিন্তু বাস্তবে তা ছিল প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের জুনে ২৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও নিট রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার অবশ্য আশাবাদী, তৃতীয় কিস্তির অর্থ পাওয়া যাবে। ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বসন্তকালীন বৈঠক শেষে ১৬ এপ্রিল গভর্নর সাংবাদিকদের বলেন, ৯০ শতাংশ শর্ত পূরণ হওয়ায় পরের কিস্তির অর্থ পেতে অসুবিধা হবে না।

আইএমএফের মতে, নিট রিজার্ভই হচ্ছে প্রকৃত বা ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ। আইএমএফের শর্ত মেনে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে এই নিট রিজার্ভ সংরক্ষণে বাংলাদেশ ব্যাংকের বাধ্যবাধকতা আছে।

নিট রিজার্ভ সংরক্ষণে ব্যর্থতার পাশাপাশি রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। এখনো আছে মুদ্রার একাধিক বিনিময় হার। মাঝখানে ব্যাংক একীভূতকরণের কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

Please Share This Post in Your Social Media

আইএমএফের প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসছে আজ

Update Time : ০২:০০:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে ঋণ কর্মসূচি চলমান। দুই মাসের মধ্যে তৃতীয় কিস্তির অর্থ পাওয়ার কথা। বিভিন্ন বাস্তবতা সামনে রেখে বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণের শর্ত পূরণের কাজ পর্যালোচনা বা রিভিউ করতে আইএমএফের ১০ সদস্যের একটি দল ঢাকায় আসছে আজ।

এদিকে বাংলাদেশের নিট রিজার্ভের উন্নতি হয়নি। ব্যাংক খাতে ঋণের সুদহার বাড়লেও মূল্যস্ফীতি এখনো ১০ শতাংশের কাছাকাছি। রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রাও পূরণের কাছাকাছি জায়গায় নেই। ব্যাংক খাত সংস্কারের কার্যক্রমেও পিছিয়ে বাংলাদেশ।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) থেকেই দলটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ইত্যাদি সংস্থার সঙ্গে বৈঠক শুরু করবে। বৈঠক চলবে আগামী ৮ মে পর্যন্ত। প্রতিবছর বাজেটের আগে আইএমএফের একটি দল এ সময় ঢাকায় আসে।

এর আগে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে সাড়ে তিন বছরের মেয়াদে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কার্যক্রমের বিপরীতে আইএমএফ অনেক শর্ত দেয়। রিজার্ভ ছাড়া প্রায় সব শর্ত পূরণ করে দুই দফায় দুই কিস্তির অর্থ পেয়েছেও বাংলাদেশ। এবার তৃতীয় কিস্তির পালা-দুই মাস পর অর্থাৎ আগামী জুনে যা পাওয়ার কথা। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের শর্ত কতখানি কী পূরণ হলো, তার মূল্যায়নের ভিত্তিতে এই কিস্তি ছাড় করা হবে। অর্থ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আইএমএফের প্রথম কিস্তি পাওয়ার পর বাংলাদেশ দ্বিতীয় কিস্তি পায় গত ডিসেম্বরে। দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার আগে সময়ভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশ। বিশেষ করে গত জুন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। তবে রিজার্ভ সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা কমাতে আইএমএফের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে যে অব্যাহতি চেয়েছিল বাংলাদেশ, সংস্থাটি তা অনুমোদন করে। সে অনুযায়ী ডিসেম্বর শেষে রিজার্ভ সংরক্ষণের নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়। গত ডিসেম্বর শেষে নিট রিজার্ভ থাকার কথা ছিল ২৬ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার-কমিয়ে তা ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার করা হয়। তবে ডিসেম্বর পর্যন্ত নিট রিজার্ভ ছিল ১৬ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার।

চলতি পঞ্জিকা বর্ষের মার্চ মাসেও নিট রিজার্ভ সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশ। মার্চ শেষে প্রকৃত রিজার্ভ থাকার কথা ১৯ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার, কিন্তু বাস্তবে তা ছিল প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের জুনে ২৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও নিট রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার অবশ্য আশাবাদী, তৃতীয় কিস্তির অর্থ পাওয়া যাবে। ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বসন্তকালীন বৈঠক শেষে ১৬ এপ্রিল গভর্নর সাংবাদিকদের বলেন, ৯০ শতাংশ শর্ত পূরণ হওয়ায় পরের কিস্তির অর্থ পেতে অসুবিধা হবে না।

আইএমএফের মতে, নিট রিজার্ভই হচ্ছে প্রকৃত বা ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ। আইএমএফের শর্ত মেনে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে এই নিট রিজার্ভ সংরক্ষণে বাংলাদেশ ব্যাংকের বাধ্যবাধকতা আছে।

নিট রিজার্ভ সংরক্ষণে ব্যর্থতার পাশাপাশি রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। এখনো আছে মুদ্রার একাধিক বিনিময় হার। মাঝখানে ব্যাংক একীভূতকরণের কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।