ম্যাচ জিততে বাংলাদেশের দরকার আরও ২৪১ রান

  • Update Time : ০৮:০৯:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২২
  • / 164

স্পোর্টস ডেস্কঃ

ওপেনার জাকির হাসানের অভিষেক টেস্ট সেঞ্চুরির ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে জিততে পঞ্চম ও শেষ দিনে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে আরও ২৪১ রান করতে হবে স্বাগতিক বাংলাদেশকে।

ভারতের ছুঁড়ে দেয়া ৫১৩ রানের পাহাড় সমান টার্গেটে চতুর্থ দিন শেষে ১০২ ওভারে ৬ উইকেটে ২৭২ রান করেছে বাংলাদেশ। ওপেনার জাকির ১০০ রান করেন। আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে আসে ৬৭ রান। উদ্বোধনী জুটিতে ১২৪ রান যোগ করেন শান্ত-জাকির।

৫১৩ রানের টার্গেটে তৃতীয় দিন শেষে ১২ ওভারে বিনা উইকেটে ৪২ রান করেছিলো বাংলাদেশ। শান্ত ২৫ ও জাকির ১৭ রানে অপরাজিত ছিলেন।

চতুর্থ দিনের শুরু থেকে ভারতের বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করেছেন শান্ত-জাকির জুটি। দিনের চতুর্থ ওভারেই দলের রান পঞ্চাশ পূর্ণ করেন তারা। ইনিংসের ৩১তম ওভারে টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পুর্ন করেন শান্ত। এজন্য ১০৮ বল খেলেছেন তিনি।

৩৬তম ওভারে বাংলাদেশের রান ১শতে পৌঁছায় শান্ত-জাকিরের দুর্দান্ত জুটির কল্যণে। ৪০তম ওভারে অভিষেক টেস্টে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান জাকির। ১০১ বল খেলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন বাঁ-হাতি জাকির।

প্রথম সেশনে শান্ত-জাকিরের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে ৪২ ওভারে বিনা উইকেটে ১১৯ রান তুলে বাংলাদেশ। এ সময় শান্ত ৬৪ ও জাকির ৫৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।

বিরতি থেকে ফেরার কিছুক্ষণ পর বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গে। ভারতের পেসার উমেশ যাদবের অফ-স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ৭টি চারে ১৫৬ বলে ৬৭ রান করা শান্ত। ভারতের বিপক্ষে টেস্টে উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ ১২৪ রানের জুটি গড়েন শান্ত-জাতির।

শান্তর বিদায়ে উইকেটে আসেন ইয়াসির আলি ব্যক্তিগত ৫ রানে আউট হলে দিনের দ্বিতীয় সেশন শুরু করেই ১২ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

ডাবল উইকেট পতনের ধাক্কা সামাল দেন জাকির ও লিটন দাস। ২টি চার মারলেও বেশ রক্ষনাত্মক ছিলেন লিটন। দু’বার জীবন পেয়েও নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। স্পিনার কুলদীপের বলে মিড-অনের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে উমেশকে ক্যাচ দেন ৫৯ বলে ১৯ রান করা লিটন।

চতুর্থ উইকেটে মুশফিকুর রহিমের সাথে জুটি বেঁধে অভিষেক টেস্টেই সেঞ্চুরি তুলে নেন জাকির। প্রথম ইনিংসে ২০ রান করা জাকির ২১৯তম বলে সুইপ করে ফাইন লেগ দিয়ে চার মেরে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। বাংলাদেশের চতুর্থ ও বিশ্বের ১১৩তম ব্যাটার হিসেবে অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করেন জাকির। দেশের পক্ষে একমাত্র ওপেনার হিসেবে অভিষেকে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়লেন তিনি।

সেঞ্চুরির পাবার পর ইনিংস বড় করতে পারেননি জাকির। স্পিনার অশ্বিনের বলে ডিফেন্স করতে গিয়ে প্রথম স্লিপে কোহলিকে ক্যাচ দেন তিনি। ব্যাটের কানায় লেগে প্যাড ছুঁয়ে কোহলির হাতে বল জমা পড়ে বল। ১৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২২৪ বল খেলে ১০০ রান করেন জাকির।

দলীয় ২০৮ রানে চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে আউট হন জাকির। এ অবস্থায় জুটি গড়ার পথে ছিলেন অধিনায়ক সাকিব ও মুশফিক। ৫৩ বল খেলে ২৬ রানও তুলেছিলেন তারা। কিন্তু প্যাটেলের এক ওভারে জোড়া আঘাতে মুশফিক ও উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের বিদায় ঘটে। ২৩ রান করে প্যাটেলের বলে বোল্ড হন দু’বার জীবন পাওয়া মুশফিক। ড্রাইভ করতে গিয়ে লাইন ছেড়ে বেরিয়ে আসায় স্টাম্প আউট হন ৩ রান করা সোহান। ৩ রান করেন তিনি।

২৩৮ রানে ষষ্ঠ উইকেট পতনে আজই গুটিয়ে যাবার শংকায় পড়ে বাংলাদেশ। কারন তখনও দিনের ১৪ ওভার বাকী ছিলো।

তবে সপ্তম উইকেটে ১৪ ওভার ব্যাট করে অবিচ্ছিন্ন থেকে দিন শেষ করেছেন সাকিব ও মিরাজ। এসময় জুটিতে ৩৪ রান তুলেছেন তারা। সাকিব ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৯ বলে ৪০ ও মিরাজ ৯ রানে অপরাজিত আছেন। ভারতের প্যাটেল ৫০ রানে ৩ উইকেট নেন।

স্কোর কার্ড :
ভারত ইনিংস : ৪০৪ ও ২৫৮/২ ডি
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস ১৫০
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস (আগের দিন ৪২/০, ১২ ওভার, শান্ত ২৫*, জাকির ১৭*) :
শান্ত ক পান্থ ব উমেশ ৬৭
জাকির ক কোহলি ব অশ্বিন ১০০
ইয়াসির বোল্ড ব প্যাটেল ৫
লিটন ক উমেশ ব কুলদীপ ১৯
মুশফিক বোল্ড ব প্যাটেল ২৩
সাকিব অপরাজিত ৪০
নুরুল স্টাম্প পান্থ ব প্যাটেল ৩
মিরাজ অপরাজিত ৯
অতিরিক্ত (বা-৪, লে বা-১, নো-১) ৬
মোট (১২ ওভার, বিনা উইকেট) ৪২
উইকেট পতন : ১/১২৪ (শান্ত), ২/১৩১ (ইয়াসির), ৩/১৭৩ (লিটন), ৪/২০৮ (জাকির), ৫/২৩৪ (মুশফিক), ৬/২৩৮ (নুরুল)।
ভারত বোলিং :
সিরাজ : ১৫-৩-৪৬-০ (নো-১),
উমেশ : ১৫-৩-২৭-১,
অশি^ন : ২৭-৩-৭৫-১,
প্যাটেল : ২৭-১০-৫০-৩,
কুলদীপ : ১৮-২-৬৯-১।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ম্যাচ জিততে বাংলাদেশের দরকার আরও ২৪১ রান

Update Time : ০৮:০৯:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২২

স্পোর্টস ডেস্কঃ

ওপেনার জাকির হাসানের অভিষেক টেস্ট সেঞ্চুরির ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে জিততে পঞ্চম ও শেষ দিনে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে আরও ২৪১ রান করতে হবে স্বাগতিক বাংলাদেশকে।

ভারতের ছুঁড়ে দেয়া ৫১৩ রানের পাহাড় সমান টার্গেটে চতুর্থ দিন শেষে ১০২ ওভারে ৬ উইকেটে ২৭২ রান করেছে বাংলাদেশ। ওপেনার জাকির ১০০ রান করেন। আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে আসে ৬৭ রান। উদ্বোধনী জুটিতে ১২৪ রান যোগ করেন শান্ত-জাকির।

৫১৩ রানের টার্গেটে তৃতীয় দিন শেষে ১২ ওভারে বিনা উইকেটে ৪২ রান করেছিলো বাংলাদেশ। শান্ত ২৫ ও জাকির ১৭ রানে অপরাজিত ছিলেন।

চতুর্থ দিনের শুরু থেকে ভারতের বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করেছেন শান্ত-জাকির জুটি। দিনের চতুর্থ ওভারেই দলের রান পঞ্চাশ পূর্ণ করেন তারা। ইনিংসের ৩১তম ওভারে টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পুর্ন করেন শান্ত। এজন্য ১০৮ বল খেলেছেন তিনি।

৩৬তম ওভারে বাংলাদেশের রান ১শতে পৌঁছায় শান্ত-জাকিরের দুর্দান্ত জুটির কল্যণে। ৪০তম ওভারে অভিষেক টেস্টে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান জাকির। ১০১ বল খেলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন বাঁ-হাতি জাকির।

প্রথম সেশনে শান্ত-জাকিরের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে ৪২ ওভারে বিনা উইকেটে ১১৯ রান তুলে বাংলাদেশ। এ সময় শান্ত ৬৪ ও জাকির ৫৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।

বিরতি থেকে ফেরার কিছুক্ষণ পর বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গে। ভারতের পেসার উমেশ যাদবের অফ-স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ৭টি চারে ১৫৬ বলে ৬৭ রান করা শান্ত। ভারতের বিপক্ষে টেস্টে উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ ১২৪ রানের জুটি গড়েন শান্ত-জাতির।

শান্তর বিদায়ে উইকেটে আসেন ইয়াসির আলি ব্যক্তিগত ৫ রানে আউট হলে দিনের দ্বিতীয় সেশন শুরু করেই ১২ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

ডাবল উইকেট পতনের ধাক্কা সামাল দেন জাকির ও লিটন দাস। ২টি চার মারলেও বেশ রক্ষনাত্মক ছিলেন লিটন। দু’বার জীবন পেয়েও নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। স্পিনার কুলদীপের বলে মিড-অনের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে উমেশকে ক্যাচ দেন ৫৯ বলে ১৯ রান করা লিটন।

চতুর্থ উইকেটে মুশফিকুর রহিমের সাথে জুটি বেঁধে অভিষেক টেস্টেই সেঞ্চুরি তুলে নেন জাকির। প্রথম ইনিংসে ২০ রান করা জাকির ২১৯তম বলে সুইপ করে ফাইন লেগ দিয়ে চার মেরে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। বাংলাদেশের চতুর্থ ও বিশ্বের ১১৩তম ব্যাটার হিসেবে অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করেন জাকির। দেশের পক্ষে একমাত্র ওপেনার হিসেবে অভিষেকে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়লেন তিনি।

সেঞ্চুরির পাবার পর ইনিংস বড় করতে পারেননি জাকির। স্পিনার অশ্বিনের বলে ডিফেন্স করতে গিয়ে প্রথম স্লিপে কোহলিকে ক্যাচ দেন তিনি। ব্যাটের কানায় লেগে প্যাড ছুঁয়ে কোহলির হাতে বল জমা পড়ে বল। ১৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২২৪ বল খেলে ১০০ রান করেন জাকির।

দলীয় ২০৮ রানে চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে আউট হন জাকির। এ অবস্থায় জুটি গড়ার পথে ছিলেন অধিনায়ক সাকিব ও মুশফিক। ৫৩ বল খেলে ২৬ রানও তুলেছিলেন তারা। কিন্তু প্যাটেলের এক ওভারে জোড়া আঘাতে মুশফিক ও উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের বিদায় ঘটে। ২৩ রান করে প্যাটেলের বলে বোল্ড হন দু’বার জীবন পাওয়া মুশফিক। ড্রাইভ করতে গিয়ে লাইন ছেড়ে বেরিয়ে আসায় স্টাম্প আউট হন ৩ রান করা সোহান। ৩ রান করেন তিনি।

২৩৮ রানে ষষ্ঠ উইকেট পতনে আজই গুটিয়ে যাবার শংকায় পড়ে বাংলাদেশ। কারন তখনও দিনের ১৪ ওভার বাকী ছিলো।

তবে সপ্তম উইকেটে ১৪ ওভার ব্যাট করে অবিচ্ছিন্ন থেকে দিন শেষ করেছেন সাকিব ও মিরাজ। এসময় জুটিতে ৩৪ রান তুলেছেন তারা। সাকিব ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৯ বলে ৪০ ও মিরাজ ৯ রানে অপরাজিত আছেন। ভারতের প্যাটেল ৫০ রানে ৩ উইকেট নেন।

স্কোর কার্ড :
ভারত ইনিংস : ৪০৪ ও ২৫৮/২ ডি
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস ১৫০
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস (আগের দিন ৪২/০, ১২ ওভার, শান্ত ২৫*, জাকির ১৭*) :
শান্ত ক পান্থ ব উমেশ ৬৭
জাকির ক কোহলি ব অশ্বিন ১০০
ইয়াসির বোল্ড ব প্যাটেল ৫
লিটন ক উমেশ ব কুলদীপ ১৯
মুশফিক বোল্ড ব প্যাটেল ২৩
সাকিব অপরাজিত ৪০
নুরুল স্টাম্প পান্থ ব প্যাটেল ৩
মিরাজ অপরাজিত ৯
অতিরিক্ত (বা-৪, লে বা-১, নো-১) ৬
মোট (১২ ওভার, বিনা উইকেট) ৪২
উইকেট পতন : ১/১২৪ (শান্ত), ২/১৩১ (ইয়াসির), ৩/১৭৩ (লিটন), ৪/২০৮ (জাকির), ৫/২৩৪ (মুশফিক), ৬/২৩৮ (নুরুল)।
ভারত বোলিং :
সিরাজ : ১৫-৩-৪৬-০ (নো-১),
উমেশ : ১৫-৩-২৭-১,
অশি^ন : ২৭-৩-৭৫-১,
প্যাটেল : ২৭-১০-৫০-৩,
কুলদীপ : ১৮-২-৬৯-১।