রুহুল আমিন গাজী একজন নির্ভীক সাংবাদিক ছিলেন এবং সাংবাদিকতার এক আইকন – সিবিইউজে স্মরণসভায় বক্তারা

  • Update Time : ১১:০০:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪
  • / 10

এরফান হোছাইন, চট্টগ্রাম ব্যুরোঃ
‘রূহুল আমিন গাজীকে ‘গাজী’ বলা উচিৎ হবে না। ওনাকে বলতে হবে ‘শহীদ’! হাসিনার কারাগার থেকে যারা বের হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন তারা সকলেই শহীদ। তাই গাজী ভাইকে বলতে হবে ‘শহীদ রুহুল আমিন’!

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী স্মরণে কক্সবাজারে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তাগণ এমন কথা বলেন।

সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার-জেইউসি’র উদ্যোগে কক্সবাজার প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার রাতে এই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।

সদ্যপ্রয়াত বর্ষিয়ান সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীর এই শোকসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারী, কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র সরওয়ার কামাল, কক্সবাজার পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মোহাম্মদ আলী, কক্সবাজার শহর জামায়াতের আমীর আব্দুল্লাহ আল ফারুখ, কক্সবাজার প্রেসক্লাব সভাপতি মাহবুবর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দীন বাহারী।

সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার-জেইউসি সভাপতি জি এ এম আশেক উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সরওয়ারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত শোকসভায় আরও বক্তব্য দেন প্রবীণ সাংবাদিক মুহম্মদ নূরুল ইসলাম ও দৈনিক সংগ্রামের কক্সবাজার প্রতিনিধি কামাল হোসেন আজাদ প্রমূখ।

শোকসভায় বক্তাগণ রুহুল আমিন গাজীর সংগ্রামী, প্রতিবাদী ও বর্ণাঢ্য জীবনের উপর আলোচনা করেন।

বক্তাগণ বলেন, রুহুল আমিন গাজী ছিলেন দেশের একজন প্রকৃত প্রহরী। দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বার্থরক্ষায় নিবেদিতপ্রাণ আপোষহীন একজন সাংবাদিক ছিলেন তিনি। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি দেশের প্রশ্নে কখনো আপোষ করেননি। ন্যায়কে ন্যায়, অন্যায়কে অন্যায় বলতে কখনো কার্পণ্য করেননি তিনি।

সাংবাদিকতায় দৃঢ় নেতৃত্বের প্রসঙ্গ টেনে বক্তারা আরও বলেন, দেশের জাতীয় পর্যায়ের সাংবাদিকতার নেতৃত্বের এক মূর্তপ্রতীক ছিলেন রুহুল আমিন গাজী। তাঁর দৃঢ় নেতৃত্বে দেশের সাংবাদিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সাংবাদিকদের সমস্যায় কখনো তিনি বসে থাকেননি।

গণতন্ত্র রক্ষায় রুহুল আমিন গাজীর বীরত্বের কথা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, দেশের গণতন্ত্র অক্ষুন্ন রাখতে রাজপথের এক সংগ্রামী যোদ্ধা ছিলেন তিনি। গত ১৫ বছরে ভূলুণ্ঠিত গণতন্ত্র উদ্ধারে রাজপথে নেমে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারে বিরুদ্ধে অবিরত সংগ্রাম করে গেছেন রুহুল আমিন গাজী। এই জন্য দীর্ঘ বছর কারাগারের অন্ধপ্রকোষ্টে ছিলেন তিনি। তারপরও ফ্যাসিস্টদের সাথে আপোষ করেননি। তার এই সাহসিকতা দেশের সাংবাদিক অঙ্গনে চিরউজ্জ্বল হয়ে থাকবে। সর্বোপরি তাঁর বর্ণাঢ্য ও সংগ্রামী জীবন অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে দেশের সর্বঙ্গণে।

শোকসভায় আরও বক্তব্য দেন রাজনীতিক আবু ছৈয়দ, দৈনিক ইনকিলাবের ব্যুরো প্রধান শামসুল হক শারেক, সাহিত্যিক রুহুল কাদের বাবুল, প্রেসক্লাবের সদস্য এড. আবু সিদ্দিক ওসমানী, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসানুর রশীদ ও আনছার হোসেন, ইউনিয়ন সহ-সভাপতি এম আর মাহবুব। এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তাশদিদ উর রেজা, এম. সাফওয়ান আল আজিজ, কামরুল হাসান চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির কক্সবাজার শহরের সেক্রেটারি আবদুর রহীম নুরী।

কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন বাহারী বলেন, “বিএফইউজে’র সভাপতি সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী একজন নির্ভীক সাংবাদিক ছিলেন এবং সাংবাদিকতায় এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছিলেন। স্বৈরশাসক আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি ১৮ মাস জেল জীবন ভোগ করেছেন, যা মানবতার বিরুদ্ধে একটি জঘন্য অপরাধ। এই ঘটনা হাসিনা সরকারের অমানবিকতার পরিচয় বহন করে।”

পরে সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীর মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করেন নেজামে ইসলাম পার্টির জেলা সভাপতি হাফেজ মাওলানা সালামত উল্লাহ।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


রুহুল আমিন গাজী একজন নির্ভীক সাংবাদিক ছিলেন এবং সাংবাদিকতার এক আইকন – সিবিইউজে স্মরণসভায় বক্তারা

Update Time : ১১:০০:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪

এরফান হোছাইন, চট্টগ্রাম ব্যুরোঃ
‘রূহুল আমিন গাজীকে ‘গাজী’ বলা উচিৎ হবে না। ওনাকে বলতে হবে ‘শহীদ’! হাসিনার কারাগার থেকে যারা বের হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন তারা সকলেই শহীদ। তাই গাজী ভাইকে বলতে হবে ‘শহীদ রুহুল আমিন’!

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী স্মরণে কক্সবাজারে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তাগণ এমন কথা বলেন।

সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার-জেইউসি’র উদ্যোগে কক্সবাজার প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার রাতে এই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।

সদ্যপ্রয়াত বর্ষিয়ান সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীর এই শোকসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারী, কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র সরওয়ার কামাল, কক্সবাজার পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মোহাম্মদ আলী, কক্সবাজার শহর জামায়াতের আমীর আব্দুল্লাহ আল ফারুখ, কক্সবাজার প্রেসক্লাব সভাপতি মাহবুবর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দীন বাহারী।

সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার-জেইউসি সভাপতি জি এ এম আশেক উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সরওয়ারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত শোকসভায় আরও বক্তব্য দেন প্রবীণ সাংবাদিক মুহম্মদ নূরুল ইসলাম ও দৈনিক সংগ্রামের কক্সবাজার প্রতিনিধি কামাল হোসেন আজাদ প্রমূখ।

শোকসভায় বক্তাগণ রুহুল আমিন গাজীর সংগ্রামী, প্রতিবাদী ও বর্ণাঢ্য জীবনের উপর আলোচনা করেন।

বক্তাগণ বলেন, রুহুল আমিন গাজী ছিলেন দেশের একজন প্রকৃত প্রহরী। দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বার্থরক্ষায় নিবেদিতপ্রাণ আপোষহীন একজন সাংবাদিক ছিলেন তিনি। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি দেশের প্রশ্নে কখনো আপোষ করেননি। ন্যায়কে ন্যায়, অন্যায়কে অন্যায় বলতে কখনো কার্পণ্য করেননি তিনি।

সাংবাদিকতায় দৃঢ় নেতৃত্বের প্রসঙ্গ টেনে বক্তারা আরও বলেন, দেশের জাতীয় পর্যায়ের সাংবাদিকতার নেতৃত্বের এক মূর্তপ্রতীক ছিলেন রুহুল আমিন গাজী। তাঁর দৃঢ় নেতৃত্বে দেশের সাংবাদিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সাংবাদিকদের সমস্যায় কখনো তিনি বসে থাকেননি।

গণতন্ত্র রক্ষায় রুহুল আমিন গাজীর বীরত্বের কথা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, দেশের গণতন্ত্র অক্ষুন্ন রাখতে রাজপথের এক সংগ্রামী যোদ্ধা ছিলেন তিনি। গত ১৫ বছরে ভূলুণ্ঠিত গণতন্ত্র উদ্ধারে রাজপথে নেমে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারে বিরুদ্ধে অবিরত সংগ্রাম করে গেছেন রুহুল আমিন গাজী। এই জন্য দীর্ঘ বছর কারাগারের অন্ধপ্রকোষ্টে ছিলেন তিনি। তারপরও ফ্যাসিস্টদের সাথে আপোষ করেননি। তার এই সাহসিকতা দেশের সাংবাদিক অঙ্গনে চিরউজ্জ্বল হয়ে থাকবে। সর্বোপরি তাঁর বর্ণাঢ্য ও সংগ্রামী জীবন অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে দেশের সর্বঙ্গণে।

শোকসভায় আরও বক্তব্য দেন রাজনীতিক আবু ছৈয়দ, দৈনিক ইনকিলাবের ব্যুরো প্রধান শামসুল হক শারেক, সাহিত্যিক রুহুল কাদের বাবুল, প্রেসক্লাবের সদস্য এড. আবু সিদ্দিক ওসমানী, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসানুর রশীদ ও আনছার হোসেন, ইউনিয়ন সহ-সভাপতি এম আর মাহবুব। এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তাশদিদ উর রেজা, এম. সাফওয়ান আল আজিজ, কামরুল হাসান চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির কক্সবাজার শহরের সেক্রেটারি আবদুর রহীম নুরী।

কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন বাহারী বলেন, “বিএফইউজে’র সভাপতি সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী একজন নির্ভীক সাংবাদিক ছিলেন এবং সাংবাদিকতায় এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছিলেন। স্বৈরশাসক আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি ১৮ মাস জেল জীবন ভোগ করেছেন, যা মানবতার বিরুদ্ধে একটি জঘন্য অপরাধ। এই ঘটনা হাসিনা সরকারের অমানবিকতার পরিচয় বহন করে।”

পরে সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীর মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করেন নেজামে ইসলাম পার্টির জেলা সভাপতি হাফেজ মাওলানা সালামত উল্লাহ।