পেকুয়ায় শিক্ষক অপহরণের ঘটনায় নতুন মোড়: ভূয়া পুলিশ পরিচয়ে দিনমজুরকে ছাত্রদল নেতার ফোন

  • Update Time : ০৭:২৭:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪
  • / 44

কক্সবাজার ব্যুরো:

পেকুয়ায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর মোঃ আরিফ (৪৫) নামে
একজন কলেজ শিক্ষক অপহরণের ঘটনায় নতুন মোড় দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এই ঘটনায় জড়িত থাকার জন্য একজন দিনমজুর নাছির উদ্দিনকে ফাঁসানোর চক্রান্ত করা হচ্ছে।

নাছির উদ্দিন নিজে দাবি করেছেন যে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভোররাত ১:৩৩ মিনিটে একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি পেকুয়া থানার ভুয়া পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাকে একটি নাম্বার (01814729528) ফোন করে জানিয়েছিল যে, তার বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ রয়েছে।

একজন গণমাধ্যমকর্মীর নম্বর ব্যবহার করে এই নম্বরে ফোন করা হলে জানা যায় যে, নম্বরটি এহেসান নামে এক ব্যক্তির। তিনি নিজেকে পেকুয়ার একটি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সেক্রেটারি হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন এবং দাবি করেছেন যে, এই নম্বরটি পেকুয়া থানার কোন পুলিশ সদস্যের নয়। এছাড়া পরে তিনি ভূয়া পুলিশের পরিচয় দিয়েছে যাতে নাছির উদ্দিন থেকে তথ্য বের করার জন্যে করেছেন বলে তা স্বীকার করেন।

পরবর্তীতে, দৈনিক সাঙ্গুসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা যায় যে, অপহৃত শিক্ষকের সাথে তার জমিজমার বিষয়ে শালিসি বিচারের কথা ছিল। কিন্তু নাছির উদ্দিন এই দাবি অস্বীকার করেছেন।
নাছির উদ্দিন আরও জানিয়েছেন যে, তিনি কিছুদিন আগে নিজের নিরাপত্তা চেয়ে একটি কোর্ট জিড়ি দায়ের করেছেন বলে জানায় । তিনি দাবি করেছেন যে, কেউ যেন তাকে এই ঘটনায় জড়িত করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। এছাড়া ভূয়া পুলিশের পরিচয়দানকারী এহেসান তার কয়েকটি মামলার আসামী বলে জানায় নাছির উদ্দিন।

এবিষয়ে এডভোকেট সচীব কর্মকার তীলক জানান, একজন সাধারণ ব্যক্তি হয়ে থানা পুলিশের কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে তথ্য আদায় বা কোন অপরাধ করা সেটি বাংলাদেশ দন্ডবিধি ৪১৯ ও ৪২০ ধারায় সে দোষী সাব্যস্ত।
এছাড়া ৪১৯ ধারায় আছে কোন ব্যক্তি যদি অপরের রূপ ধারণ করে প্রতারণা করে, তবে উক্ত লোক ৩ বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম কারাদন্ডে, অথবা অর্থ দন্ডে, অথবা উভয়বিধ দন্ডেই দন্ডিত হবে।

পেকুয়া থানার ওসি সিরাজুল মোস্তফা বলেন, নাম্বারটি পেকুয়া থানা পুলিশের কারো নাম্বার না। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া শিক্ষক অপহৃত ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পেকুয়া থানা পুলিশ। শিক্ষক অপহরণে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা থাকবে এবং সে সাথে কোন নিরহকে হয়রানী করা হবে জানান তিনি ।

সচেতন মহল মনে করেন, পেকুয়ায় শিক্ষক অপহরণের ঘটনা দিন দিন জটিল হয়ে উঠছে। নাছির উদ্দিনের অভিযোগের পর এই ঘটনা নিয়ে নতুন করে তদন্ত শুরু হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, পুলিশ এই ঘটনার সত্যতা কতটা খুঁজে বের করতে পারে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


পেকুয়ায় শিক্ষক অপহরণের ঘটনায় নতুন মোড়: ভূয়া পুলিশ পরিচয়ে দিনমজুরকে ছাত্রদল নেতার ফোন

Update Time : ০৭:২৭:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪

কক্সবাজার ব্যুরো:

পেকুয়ায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর মোঃ আরিফ (৪৫) নামে
একজন কলেজ শিক্ষক অপহরণের ঘটনায় নতুন মোড় দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এই ঘটনায় জড়িত থাকার জন্য একজন দিনমজুর নাছির উদ্দিনকে ফাঁসানোর চক্রান্ত করা হচ্ছে।

নাছির উদ্দিন নিজে দাবি করেছেন যে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভোররাত ১:৩৩ মিনিটে একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি পেকুয়া থানার ভুয়া পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাকে একটি নাম্বার (01814729528) ফোন করে জানিয়েছিল যে, তার বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ রয়েছে।

একজন গণমাধ্যমকর্মীর নম্বর ব্যবহার করে এই নম্বরে ফোন করা হলে জানা যায় যে, নম্বরটি এহেসান নামে এক ব্যক্তির। তিনি নিজেকে পেকুয়ার একটি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সেক্রেটারি হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন এবং দাবি করেছেন যে, এই নম্বরটি পেকুয়া থানার কোন পুলিশ সদস্যের নয়। এছাড়া পরে তিনি ভূয়া পুলিশের পরিচয় দিয়েছে যাতে নাছির উদ্দিন থেকে তথ্য বের করার জন্যে করেছেন বলে তা স্বীকার করেন।

পরবর্তীতে, দৈনিক সাঙ্গুসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা যায় যে, অপহৃত শিক্ষকের সাথে তার জমিজমার বিষয়ে শালিসি বিচারের কথা ছিল। কিন্তু নাছির উদ্দিন এই দাবি অস্বীকার করেছেন।
নাছির উদ্দিন আরও জানিয়েছেন যে, তিনি কিছুদিন আগে নিজের নিরাপত্তা চেয়ে একটি কোর্ট জিড়ি দায়ের করেছেন বলে জানায় । তিনি দাবি করেছেন যে, কেউ যেন তাকে এই ঘটনায় জড়িত করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। এছাড়া ভূয়া পুলিশের পরিচয়দানকারী এহেসান তার কয়েকটি মামলার আসামী বলে জানায় নাছির উদ্দিন।

এবিষয়ে এডভোকেট সচীব কর্মকার তীলক জানান, একজন সাধারণ ব্যক্তি হয়ে থানা পুলিশের কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে তথ্য আদায় বা কোন অপরাধ করা সেটি বাংলাদেশ দন্ডবিধি ৪১৯ ও ৪২০ ধারায় সে দোষী সাব্যস্ত।
এছাড়া ৪১৯ ধারায় আছে কোন ব্যক্তি যদি অপরের রূপ ধারণ করে প্রতারণা করে, তবে উক্ত লোক ৩ বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম কারাদন্ডে, অথবা অর্থ দন্ডে, অথবা উভয়বিধ দন্ডেই দন্ডিত হবে।

পেকুয়া থানার ওসি সিরাজুল মোস্তফা বলেন, নাম্বারটি পেকুয়া থানা পুলিশের কারো নাম্বার না। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া শিক্ষক অপহৃত ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পেকুয়া থানা পুলিশ। শিক্ষক অপহরণে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা থাকবে এবং সে সাথে কোন নিরহকে হয়রানী করা হবে জানান তিনি ।

সচেতন মহল মনে করেন, পেকুয়ায় শিক্ষক অপহরণের ঘটনা দিন দিন জটিল হয়ে উঠছে। নাছির উদ্দিনের অভিযোগের পর এই ঘটনা নিয়ে নতুন করে তদন্ত শুরু হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, পুলিশ এই ঘটনার সত্যতা কতটা খুঁজে বের করতে পারে।