রাণীনগরের কুজাইল হাটে সরকারি পল্লী মার্কেট ভবন নির্মাণ করতে না দেওয়ার অভিযোগ

  • Update Time : ০৪:০৯:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 18

প্রভাবশালী দখলদারদের বাঁধার মুখে নির্ধারিত স্থান বুঝে পাননি ঠিকাদার, শুরু হয়নি নির্মাণ কাজ

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কুজাইল হাটে সরকারি দু’তলা পল্লী মার্কেট ভবন নির্মাণ করতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রভাবশালী কিছু দখলদারদের বাঁধার মুখে ভবন নির্মাণের নির্ধারিত স্থান আজও বুঝে পাননি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ফলে ঠিকাদার শুরু করতে পারেনি নির্মাণ কাজ। এতে করে ভেস্তে যেতে বসেছে সরকারি গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প।

অভিযোগ রয়েছে- সরকারি হাটের জায়গায় কতিপয় ব্যক্তিরা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে গড়ে তুলেছেন বহু স্থাপনা। আর সেইসব স্থাপনা রক্ষার জন্য নির্ধারিত স্থানে সরকারি ভবন নির্মাণ করতে না দেওয়ার পাঁয়তারা ও বাঁধা দিচ্ছেন প্রভাবশালীরা।

জানা গেছে, দেশব্যাপী গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কুজাইল হাটে চারতলা ফাউন্ডেশনে দু’তলা পল্লী মার্কেট ভবন নির্মাণ কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। যার চুক্তিমূল্য ধরা হয় ৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা। কাজটি পান মেসার্স সাহারা কনস্ট্রাকশন-ইএসবি নামক একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ভবনের নির্মাণ কাজটি চলতি বছরের ১৯ মে শুরু হয়ে ২০২৫ সালের ৩০ আগষ্ট শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু স্থানীয় কতিপয় কিছু দখলদারদের বাঁধায় ভবন নির্মাণ কাজের নির্ধারিত স্থান ঠিকাদারকে বুঝে দিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তাই আজও সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ফলে বাধ্য হয়ে ঠিকাদার কাজটি দ্রুত নির্মাণ করতে সাইট বুঝে নেওয়ার জন্য দুই দফায় স্থানীয় উপজেলা প্রকৌশলী বরাবর আবেদন করেন। কিন্তু আজও কাটেনি সেই জটিলতা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাজটির কার্যাদেশ হওয়ার আগে উপজেলা প্রকৌশলী সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়ে হাটের স্থান নির্ধারণে কুজাইল বাজারে যান। সেখানে বাজার কমিটির মতামতের ভিত্তিতে সর্বসম্মতিক্রমে পারঘাটি যাওয়ার রাস্তা বরাবর পূর্ব-পশ্চিম লম্বায় ভবন নিমার্ণের জন্য স্থান নির্বাচিত হয়। এরপর থেকে কিছু দখলদার ভবন নির্মাণের স্থানে বাঁধা দিতে শুরু করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি হাটের জায়গা দখলে নিয়ে কেউ গোডাউন তৈরি করেছে আবার কেউ বড় বড় দোকানঘর নির্মাণ করে রেখেছে। তাদের এসব স্থাপনা যেন ভাঙা না যায় এবং নিজেদের স্বার্থে উন্নয়নমূলক এই সরকারি ভবন নির্মাণে বাঁধা দিচ্ছেন। স্থানীয়রা আরও জানান, তাদের বাঁধার জন্য আমাদের এলাকা উন্নয়ন বি ত হতে যাচ্ছে। দ্রুত উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাঁধা প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে কুজাইল বাজারে পল্লী মার্কেট ভবন নির্মাণ করার দাবি তাদের।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রোজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার ইমরুল কায়েস ইমন জানান, বেশ কয়েকমাস আগে আমরা নির্মাণ কাজটি পেয়েছি। কিন্তু স্থান নিয়ে জটিলতার কারণে আজও কাজ শুরু করতে পারিনি। এই জন্য এলজিইডি অফিসে দুই দফায় আবেদন করেছি। তারা সীমানা বুজে দিলে আমরা কাজ শুরু করে নির্ধারিত সময়ে শেষ করার চেষ্টা করবো।

জানতে চাইলে রাণীনগর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, আমরা কাজটি শুরু করার চেষ্টা করছি। কিন্তু ওই বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীর বাঁধার কারণে ঠিকাদারকে এখনো নির্ধারিত স্থান বুঝে দিতে পারিনি। বিষয়টি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীন বলেন, সরকারি প্রকল্পের ভবন নির্মাণের নির্ধারিত স্থান থেকে স্থাপনা সরে নেওয়ার জন্য দখলে থাকা ব্যবসায়ীদের নোটিশ করা হয়েছে। কিন্তু তারা আজও জায়গা ছেড়ে দেননি। আমরা নিয়ম অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


রাণীনগরের কুজাইল হাটে সরকারি পল্লী মার্কেট ভবন নির্মাণ করতে না দেওয়ার অভিযোগ

Update Time : ০৪:০৯:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রভাবশালী দখলদারদের বাঁধার মুখে নির্ধারিত স্থান বুঝে পাননি ঠিকাদার, শুরু হয়নি নির্মাণ কাজ

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কুজাইল হাটে সরকারি দু’তলা পল্লী মার্কেট ভবন নির্মাণ করতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রভাবশালী কিছু দখলদারদের বাঁধার মুখে ভবন নির্মাণের নির্ধারিত স্থান আজও বুঝে পাননি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ফলে ঠিকাদার শুরু করতে পারেনি নির্মাণ কাজ। এতে করে ভেস্তে যেতে বসেছে সরকারি গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প।

অভিযোগ রয়েছে- সরকারি হাটের জায়গায় কতিপয় ব্যক্তিরা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে গড়ে তুলেছেন বহু স্থাপনা। আর সেইসব স্থাপনা রক্ষার জন্য নির্ধারিত স্থানে সরকারি ভবন নির্মাণ করতে না দেওয়ার পাঁয়তারা ও বাঁধা দিচ্ছেন প্রভাবশালীরা।

জানা গেছে, দেশব্যাপী গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কুজাইল হাটে চারতলা ফাউন্ডেশনে দু’তলা পল্লী মার্কেট ভবন নির্মাণ কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। যার চুক্তিমূল্য ধরা হয় ৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা। কাজটি পান মেসার্স সাহারা কনস্ট্রাকশন-ইএসবি নামক একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ভবনের নির্মাণ কাজটি চলতি বছরের ১৯ মে শুরু হয়ে ২০২৫ সালের ৩০ আগষ্ট শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু স্থানীয় কতিপয় কিছু দখলদারদের বাঁধায় ভবন নির্মাণ কাজের নির্ধারিত স্থান ঠিকাদারকে বুঝে দিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তাই আজও সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ফলে বাধ্য হয়ে ঠিকাদার কাজটি দ্রুত নির্মাণ করতে সাইট বুঝে নেওয়ার জন্য দুই দফায় স্থানীয় উপজেলা প্রকৌশলী বরাবর আবেদন করেন। কিন্তু আজও কাটেনি সেই জটিলতা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাজটির কার্যাদেশ হওয়ার আগে উপজেলা প্রকৌশলী সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়ে হাটের স্থান নির্ধারণে কুজাইল বাজারে যান। সেখানে বাজার কমিটির মতামতের ভিত্তিতে সর্বসম্মতিক্রমে পারঘাটি যাওয়ার রাস্তা বরাবর পূর্ব-পশ্চিম লম্বায় ভবন নিমার্ণের জন্য স্থান নির্বাচিত হয়। এরপর থেকে কিছু দখলদার ভবন নির্মাণের স্থানে বাঁধা দিতে শুরু করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি হাটের জায়গা দখলে নিয়ে কেউ গোডাউন তৈরি করেছে আবার কেউ বড় বড় দোকানঘর নির্মাণ করে রেখেছে। তাদের এসব স্থাপনা যেন ভাঙা না যায় এবং নিজেদের স্বার্থে উন্নয়নমূলক এই সরকারি ভবন নির্মাণে বাঁধা দিচ্ছেন। স্থানীয়রা আরও জানান, তাদের বাঁধার জন্য আমাদের এলাকা উন্নয়ন বি ত হতে যাচ্ছে। দ্রুত উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাঁধা প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে কুজাইল বাজারে পল্লী মার্কেট ভবন নির্মাণ করার দাবি তাদের।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রোজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার ইমরুল কায়েস ইমন জানান, বেশ কয়েকমাস আগে আমরা নির্মাণ কাজটি পেয়েছি। কিন্তু স্থান নিয়ে জটিলতার কারণে আজও কাজ শুরু করতে পারিনি। এই জন্য এলজিইডি অফিসে দুই দফায় আবেদন করেছি। তারা সীমানা বুজে দিলে আমরা কাজ শুরু করে নির্ধারিত সময়ে শেষ করার চেষ্টা করবো।

জানতে চাইলে রাণীনগর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, আমরা কাজটি শুরু করার চেষ্টা করছি। কিন্তু ওই বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীর বাঁধার কারণে ঠিকাদারকে এখনো নির্ধারিত স্থান বুঝে দিতে পারিনি। বিষয়টি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীন বলেন, সরকারি প্রকল্পের ভবন নির্মাণের নির্ধারিত স্থান থেকে স্থাপনা সরে নেওয়ার জন্য দখলে থাকা ব্যবসায়ীদের নোটিশ করা হয়েছে। কিন্তু তারা আজও জায়গা ছেড়ে দেননি। আমরা নিয়ম অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।